নবীগঞ্জে দুই গ্রুপের মধ্যে তিন ঘণ্টাব্যাপী ভয়াবহ সংঘর্ষ হয়েছে। এতে পুলিশসহ উভয় পক্ষের অনেকে আহত হয়েছেন। ভাঙচুর করা হয়েছে মার্কেটসহ বিভিন্ন দোকানপাট। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে পুলিশ। গতকাল বুধবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত নবীগঞ্জ শহরের নতুন বাজার এলাকায় এ সংঘর্ষ হয়। এতে উভয় পক্ষের ১৪ জনকে আটক করেছে পুলিশ। নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাসুক আলী বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
এ ঘটনায় নবীগঞ্জ শহরে থমথমে পরিস্থিতি বরাজ করছে। শহরের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে অতিরিক্ত পুলিশ ও র্যাব মোতায়েন করা হয়েছে।
আটককৃতরা হলেন ইনাতাবাদ গ্রামের নাসির মিয়া (২৫), একই গ্রামের আবু জাহেদ (৩৪), ফজল মিয়া (৩৮), ছুনু মিয়া (৩৪), জুবেদ মিয়া (২৪), বিল্লাল মিয়া (২৩), রাজু মিয়া (২৪), দিলদার (২৬), খালেদ মিয়া (২৮), সোলেমান (৩৫), মইন উদ্দিন (২১), মো. মাফিন উদ্দিন (২০) ও আনমুনু গ্রামের তৌহিদ মিয়া (৩৫) ও অন্তর মিয়া (২৬)।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কুর্শি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও এনাতাবাদ গ্রামের খালেদুর রহমান খালেদের লোকজন এবং পৌর কাউন্সিলর আনমনু গ্রামের নানু মিয়ার লোকজনের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার ও কলেজছাত্র তাহসিন হত্যার ঘটনায় সিসিটিভি ফুটেজ দেখা নিয়ে বাগ্বিতণ্ডা হয়। এ ঘটনার জের ধরে সন্ধ্যায় আনমনু গ্রামের লোকজন ইউপি চেয়ারম্যান খালেদুর রহমানের মালিকানাধীন মার্কেট রাজা কমপ্লেক্স ভাঙচুর করে। খবর পেয়ে ইউপি চেয়ারম্যান খালেদের অনুসারী ও এনাতাবাদ গ্রামের লোকজন রাজা কমপ্লেক্সে জড়ো হন। পরে এনাতাবাদ ও আনমনু গ্রামের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষ ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়ে। দফায় দফায় ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে উভয় পক্ষ।
কুর্শি ইউপি চেয়ারম্যান খালেদুর রহমান খালেদ বলেন, ‘কলেজছাত্র তাহসিনকে হত্যার আগে প্রথমে আমার মার্কেটে মারধর করা হয়। পুলিশকে সিসিটিভি ফুটেজ দিতে চাইলে আনমনুর লোকজন আমার ওপর ক্ষিপ্ত হয়। পরে আনমনু গ্রামের কিছু লোক ক্যামেরা ফুটেজের হার্ডড্রাইভ ছিনতাইয়ের চেষ্টা করে। এ সময় স্থানীয় লোকজন এ ঘটনা প্রতিহত করে। পরে আমার মালিকানাধীন মার্কেট রাজা কমপ্লেক্স তারা ভাঙচুর করে।’
আনমনু গ্রামের লোকেরা জানান, চেয়ারম্যান খালেদ আনমনু গ্রামকে জড়িয়ে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করেন এবং উসকানিমূলক কথাবার্তা বলেন। এ ঘটনার প্রতিবাদ করেন আনমনু গ্রামের লোকজন। এ নিয়ে পরে সংঘর্ষ হয়।
আনমনু গ্রামের পৌর কাউন্সিলর নানু মিয়া বলেন, চেয়ারম্যান জানাজার নামাজে তাঁর গ্রামের লোকজনকে উদ্দেশ্য করে গালাগালি করলে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়।
নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনুপম দাশ অনুপ বলেন, ‘আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি শান্ত করেছি।’