গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় মামলার ভয় দেখিয়ে এক ড্রেজার মিস্ত্রির কাছে ৫০ হাজার টাকা দাবি করার অভিযোগ উঠেছে মোরসালিন শেখ (১৮) নামের এক তরুণের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় গণধোলাই খেয়েছেন নিজেকে ছাত্রদল নেতা পরিচয় দেওয়া ওই তরুণ। গতকাল শুক্রবার (২৮ নভেম্বর) রাতে উপজেলার ডুমুরিয়া ইউনিয়নের পাকুরতিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
সেলিম তালুকদার নামের ওই ড্রেজার মিস্ত্রির দাবি, ঢাকায় থানায় তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করা হবে বলে ভয় দেখান মোরসালিন। বিষয়টি মীমাংসা করে দেবেন বলে তাঁর কাছ থেকে টাকা দাবি করেন তিনি। এ নিয়ে বাগ্বিতণ্ডার একপর্যায়ে স্থানীয়রা মোরসালিনকে গণধোলাই দিয়ে আটকে রাখেন। পরে মোরসালিনের পরিবারের লোকজন গ্রামবাসীর কাছে ক্ষমা চেয়ে তাঁকে ছাড়িয়ে নেন।
ড্রেজার মিস্ত্রি সেলিম তালুকদার বলেন, ‘১৫ বছর ধরে দেশের বিভিন্ন জায়গায় ড্রেজার মিস্ত্রি হিসেবে কাজ করি। ৫ মাস পর গত বুধবার সিলেট থেকে আমার গ্রামের বাড়ি পাকুরতিয়ায় আসি। শুক্রবার রাতে আমার গ্রামের সাফায়েত শেখের ছেলে মোরসালিন শেখ আমাদের বাড়িতে এসে নিজেকে ছাত্রদল নেতা পরিচয় দেয়। কথার একপর্যায়ে মোরসালিন বলে, আমার বিরুদ্ধে নাকি ঢাকার কোতোয়ালি থানায় মামলা করা হবে, থানা থেকে মোরসালিনকে ফোন দিয়েছিল। তাই বিষয়টি মীমাংসা করার জন্য তাকে ৫০ হাজার টাকা দিতে হবে। আমি কোনো দল করি না, আমার নামে কেন মামলা হবে বলে জানতে চাই আমি। এ নিয়ে বাগ্বিতণ্ডা হলে আশপাশের প্রতিবেশীরা এসে জড়ো হন। তখন ৫০ হাজার টাকা দাবির কথা জানালে এলাকাবাসী মোরসালিনকে গণধোলাই দিয়ে আটক করে রাখেন। পরে মোরসালিনের পরিবারের লোকজন এলাকাবাসীর কাছে ক্ষমা চেয়ে তাকে ছাড়িয়ে নিয়ে যায়।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ৫০ হাজার টাকা দাবির কথা অস্বীকার করে মোরসালিন বলেন, ‘সেলিম তালুকদারদের বাড়ির এক ব্যক্তি আমাকে জানায়, সেলিম মাদক কারবারের সঙ্গে জড়িত। তাই তাকে আমি সতর্ক করতে গিয়েছিলাম। কিন্তু সেখানে কোনো টাকা দাবি করিনি। আমার বিরুদ্ধে তারা মিথ্যা কথা রটাচ্ছে।’ মোরসালিন বলেন, ‘আমি ছাত্রদল করি। আমি দলের কোনো পদে নেই।’
এ বিষয়ে ডুমুরিয়া ইউনিয়ন ছাত্রদলের আহ্বায়ক লাবিব হাসান বলেন, মোরসালিন নামের যে ব্যক্তি টাকা চেয়ে ধরা পড়েছে, সে ছাত্রদলের ইউনিয়নের সদস্যও নয়। আর অতীতে মোরসালিন ছাত্রলীগ করত। কিন্তু রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর ছাত্রদলের কিছু মিছিল-সমাবেশে অংশ নিত মাত্র। যদি সে ছাত্রদল পরিচয় ব্যবহার করে চাঁদাবাজি করে থাকে তাহলে জ্যেষ্ঠ নেতাদের সঙ্গে কথা বলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
টুঙ্গিপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল ইসলাম জাহাঙ্গীর বলেন, এ বিষয়ে থানায় কেউ কোনো অভিযোগ করেননি। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।