গাইবান্ধার ঘাঘট নদের ওপর একটি স্থায়ী সেতু না থাকায় সদর উপজেলার তিনটি ইউনিয়নের (কুপতলা, খোলাহাটি ও বল্লমঝাড়) প্রায় ২০ হাজার মানুষ বছরের পর বছর ধরে একটি নড়বড়ে কাঠের সেতু দিয়ে পারাপার হচ্ছে। শুধু মানুষ নয়, প্রতিদিন এই ঝুঁকিপূর্ণ সাঁকো দিয়ে দুই শতাধিক যানবাহনও চলাচল করে, যা প্রতিনিয়ত বড় দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়াচ্ছে। এই দীর্ঘদিনের ভোগান্তি থেকে মুক্তি পেতে এলাকাবাসী দ্রুত একটি স্থায়ী সেতু নির্মাণের জোর দাবি জানিয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গাইবান্ধা সদর উপজেলার বল্লমঝাড় ইউনিয়নের নারায়ণপুর এলাকায় ঘাঘট নদের ওপর পাঁচ বছর আগে এলাকাবাসীর নিজস্ব অর্থায়নে কাঠ দিয়ে সেতুটি তৈরি করা হয়েছিল। তবে এবারের বর্ষা মৌসুমে সেটি নড়বড়ে হয়ে যায়। বর্তমানে কাঠের তৈরি সেতুটি বিভিন্ন স্থানে ভেঙে যাওয়ায় এটি চলাচলের প্রায় অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, নদীর ওপর নির্মিত কাঠের সেতুটি বেশ সরু, রেলিংবিহীন এবং গাছের খুঁটির ওপর ঝুঁকিপূর্ণভাবে দাঁড়িয়ে আছে। যান চলাচলের সময় এক লাইনে যেতে হয় বলে প্রায়ই যানজট তৈরি হয়। অর্ধেক সেতুতে রেলিং ভেঙে যাওয়ায় সাঁকো পারাপার অত্যন্ত বিপজ্জনক। বিশেষ করে স্কুলগামী শিক্ষার্থী, গর্ভবতী নারী, কৃষক ও ব্যবসায়ীরা চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। যোগাযোগের বিকল্প কোনো পথ না থাকায় স্থানীয় বাসিন্দারা এই ভাঙা সেতু ব্যবহার করতে বাধ্য হচ্ছেন। যার ফলে প্রতিনিয়ত ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটছে।
শিক্ষার্থী জান্নাতুল বলে, ‘কাঠের ভাঙা সেতু দিয়ে পার হওয়ার সময় ভয় লাগে। কখন যে ভেঙে যায়। তারপরও ভয় নিয়ে স্কুলে যাই।’
স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ‘সেতুটা নিয়ে অনেক দিন ধরে আমরা ভোগান্তিতে আছি। অনেকে সেতু করে দেওয়ার আশ্বাস দিলেও কেউ কথা রাখেনি। আমরা এলাকাবাসী একটি স্থায়ী সেতুর দাবি করছি।’
কৃষক সবিয়াল শেখ বলেন, ‘যোগাযোগের ব্যবস্থা ভালো না হওয়ায় এখানে পাইকাররা আসতে চায় না। তাই আমাদের উৎপাদিত ফলসের ন্যায্য দাম পাই না।’
বল্লমঝাড় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. জুলফিকার রহমান বলেন, স্থায়ী ব্রিজ হলে এই এলাকার যোগাযোগব্যবস্থায় দুর্ভোগ কমার পাশাপাশি শিক্ষা, কৃষি ও অর্থনীতিতে ব্যাপক প্রসার ঘটবে।
এ বিষয়ে গাইবান্ধা এলজিইডি নির্বাহী প্রকৌশলী মো. উজ্জ্বল চৌধুরী আশ্বস্ত করে বলেন, জনসাধারণের চলাচলের প্রয়োজনীয়তা বিবেচনা করে সরকারি নিয়মনীতি ও প্রক্রিয়া অনুসরণ করে ওই স্থানে একটি স্থায়ী সেতু নির্মাণ করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।