ফেনীর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে জ্বর, কাশি, শ্বাসকষ্টসহ করোনার উপসর্গ নিয়ে রোগীরা আসছেন। কিন্তু হাসপাতালে করোনা শনাক্তে পরীক্ষার কিটের তীব্র সংকট রয়েছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই পরীক্ষা ছাড়া কেবল রোগীকে দেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
ফেনী হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, প্রতিদিন গড়ে দেড় শ জনের বেশি রোগী করোনার উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসার জন্য আসছেন। হাসপাতালে ফ্লু কর্নার চালু থাকলেও নমুনা পরীক্ষার জন্য নেই পর্যাপ্ত কিট। চাহিদা ছিল ২ হাজার কিটের, সরবরাহ হয়েছে মাত্র ২০০টি। হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত তত্ত্বাবধায়ক কামরুজ্জামান বলেন, ‘আমরা বারবার কিট চেয়ে আবেদন করেছি। এখন যেটুকু কিট আছে, তা দিয়ে শুধু গুরুতর উপসর্গযুক্ত রোগীদের পরীক্ষা করার সীমিত সুযোগ আছে।’ করোনা চিকিৎসায় নিয়োজিত জাবের আবেদীন বলেন, ‘ক্লিনিক্যাল উপসর্গ বিবেচনায় আমরা প্রাথমিক চিকিৎসা দিচ্ছি। তবে পরীক্ষার সুযোগ সীমিত হওয়ায় রোগ নির্ধারণে নিশ্চয়তা নেই।’
হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী মো. মোস্তফা বলেন, ‘আমার শরীরে তিন দিন ধরে জ্বর, কাশি। ডাক্তার দেখালাম, বলল পরীক্ষা করতে পারবে না, ওষুধ দিল। এখন বুঝতে পারছি না এটা সাধারণ জ্বর, না করোনা।’ আরেক রোগী মামুনুর রশীদ বলেন, ‘আমি দাগনভূঞা থেকে এসেছি। ওখানে নাকি করোনা পরীক্ষা হয় না, তাই এখানেই আসতে হলো। রিকশা-বাসে আসতে আসতেই আরও অসুস্থ হয়ে পড়েছি।’ একই কথা বললেন রোগী জাবের হোসেন। তিনি বলেন, ‘উপসর্গ তো করোনা টাইপের। কিন্তু পরীক্ষার কোনো সুযোগ নাই। ডাক্তার শুধু বলল, পর্যবেক্ষণে থাকেন। ভয় হচ্ছে, বাসায় গিয়ে পরিবারে ছড়িয়ে যাবে না তো!’
করোনা পরীক্ষায় সংকট থাকলেও হাসপাতালে ডেঙ্গু পরীক্ষার কার্যক্রম নিয়মিত চলছে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, চলতি জুন মাসে ডেঙ্গু শনাক্তে ৩২৮টি পরীক্ষা করা হয়েছে, যার মধ্যে মাত্র একজনের রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। জানুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত ৯৯৬টি নমুনা পরীক্ষা করে পজিটিভ পাওয়া গেছে ১২ জনের। গত ছয় মাসে হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগ নিয়ে ভর্তি হয়েছে ২০ জন। চিকিৎসকেরা বলছেন, বর্তমানে ডেঙ্গু রোগীদের বিষয়ে তাঁরা নজর রাখছেন। তবে করোনার উপসর্গে রোগীর চাপের তুলনায় কিট কম থাকায় চিকিৎসা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।