নগরীর মাসদাইর এলাকায় নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের কেন্দ্রীয় কবরস্থান ও শ্মশান পাশাপাশি। শ্মশানের পাশের পুকুরের মাটি কবরস্থানে দেওয়াকে কেন্দ্র করে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নারায়ণগঞ্জ–৪ আসনের এমপি একেএম শামীম ওসমান। তাঁর অভিযোগ, শ্মশানের মাটি তাঁর বাবা–মা–ভাই ও স্বজনদের কবরে দেওয়া হয়েছে। যদিও কবরস্থান কর্তৃপক্ষ বলছে, শ্মশানের মাটি নয়, পাশের পুকুরের মাটি ফেলা হয়েছে।
আজ সোমবার দুপুরে মাসদাইরে কেন্দ্রীয় সিটি কবরস্থানে আসেন শামীম ওসমান। তিনি কবরস্থান মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন ও পুকুরের সংস্কার কাজে নিয়োজিত ঠিকাদারের সঙ্গে কথা বলেন। শ্মশানের পাশের পুকুরের মাটি তাঁর স্বজনদের কবরে দেওয়া হয়ে বলে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমি গত ২৭ জুলাই আলী আহাম্মদ চুনকা সাহেবের কবর জিয়ারত করতে আসি। তখন সংস্কার কাজ চলছিল। আমার বাবা–মা এবং ভাইয়ের কবরের পাশে মাটিগুলো স্তূপ করে রাখা হয়েছিল। এই কবর আমি নিজের হাত দিয়ে বানিয়েছি। আমি যে জায়গায় দাঁড়িয়ে কথা বলছি, তখনো এই জায়গাটি তিন ফিট নিচে ছিল। আমি কাউকে দোষারোপ করবো না, এই কাজটা সিটি করপোরেশনের তা আমি বলবো না। আমি মনে করি, এই কাজটা কোনো মানুষ করতে পারে না। এটা ইবলিশ ওরফে শয়তান, মানুষের মধ্যে প্রবেশ করে এই কাজটি করিয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই মাটিগুলো তো রাস্তার পাশেও রাখা যেতো! এখানে বীর মুক্তিযোদ্ধারা, ভাষা সৈনিকেরা শায়িত আছেন। আমি অনুরোধ করবো সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করবো, এর জন্যে যারা দায়ী তাঁরা যেন কবরগুলোকে আগের অবস্থাতে ফিরিয়ে আনেন। শুধু আমার বাবা–মায়ের কবর না, এখানে যাদের কবর আছে সবারটাই পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে দেওয়া হোক। কবর সংস্কার করতে হলে আমরা নিজেরা করব।’
২০১৭ সালে কবরস্থান জামে মসজিদে ইমাম হিসেবে যোগ দিয়েছেন বলে জানান মাওলানা মো. বদর শাহ আল কাদরী। তিনি বলেন, এই পুকুরে মানুষজনকে গোসল করতে দেখেছেন। দীর্ঘ এই সময়ে সেখানে ছাই–ভস্ম ফেলতে দেখেননি। আগে ফেলা হতো কি–না সে বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না।
ইমাম বলেন, দৃশ্যমান নাপাকি থাকলে সেই মাটি নাপাক। দৃশ্যমান কোনো নাপাকি না থাকলে সেই মাটি নিয়ে কোনো সমস্যা নেই। মাটি যদি নাপাক হয়ে থাকে তাহলে ওনার আপত্তি যৌক্তিক।
কবরস্থানের সুপারভাইজার স্বাধীন চৌধুরী সাদেক বলেন, কবরস্থানে কিছু লোক নিয়োজিত আছেন। তাঁরা কবরের মাটি সরে গেলে মাটি দেন। পাশে পুকুরের মাটি ছিল। সেই মাটি তাঁরা কয়েকটা কবরে দিয়েছেন। হাঁটার রাস্তায়ও দিয়েছেন। এইটা শ্রমিকেরা বুঝে করেননি। আর মাটি শ্মশানের না, পুকুরের।