অমর একুশে বইমেলা-২০২৬ আয়োজনে অনিশ্চয়তা ও বিলম্ব নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছেন প্রকাশকেরা। তাঁরা বলেন, বইমেলা বাধাগ্রস্ত হলে তা জাতির সাংস্কৃতিক পরাজয়ের শামিল হবে। এটি বাংলাদেশের স্বাধীনতা, ভাষা ও সংস্কৃতির প্রতীক। এটি কেবল একটি বাণিজ্যিক আয়োজন নয়।
প্রকাশকদের সংগঠন বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতি (বাপুস)-এর আয়োজনে গতকাল রোববার (১২ অক্টোবর) বিকেলে বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে ‘অমর একুশে বইমেলা ২০২৬: অনিশ্চয়তার সময়ে লেখক-পাঠক-প্রকাশক’ শীর্ষক এক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। মতবিনিময় সভায় দেশের প্রকাশক, লেখক, পাঠক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বরা উপস্থিত ছিলেন।
আয়োজনে বলা হয়, নির্বাচন-পরবর্তী সময়ে মেলা আয়োজনের প্রস্তাব বাস্তবতার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহে জাতীয় নির্বাচন, পরে রয়েছে পবিত্র রমজান ও ঈদুল ফিতর। এই সময়ের মধ্যে বইমেলা আয়োজন অবাস্তব। সুতরাং এপ্রিলের আগে মেলা আয়োজন কার্যত অসম্ভব। আবার এপ্রিলের তীব্র গরম ও পরবর্তী ঝড়-বৃষ্টির সময়ে বিশাল মেলার কাঠামো নিরাপদে নির্মাণ ও পরিচালনাও বাস্তবসম্মত নয়।
আয়োজনে তিনটি দাবি উত্থাপন করা হয়। দাবিগুলো হলো, ২০২৬ সালের অমর একুশে বইমেলা ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫ থেকে ১৭ জানুয়ারি ২০২৬-এর মধ্যে আয়োজন করা। সরকার ও বাংলা একাডেমিকে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হবে, যেন প্রকাশনা শিল্প, লেখক ও পাঠক সবাই যথাযথ প্রস্তুতি নিতে পারেন এবং নিরাপত্তা ও অন্য বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে সময়মতো মেলা আয়োজনের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়কে প্রয়োজনীয় সমন্বয়ের উদ্যোগ নেওয়া।
মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির বইমেলা স্ট্যান্ডিং কমিটির সভাপতি আবু বাশার ফিরোজ শেখ। বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির সহ-সভাপতি গোলাম এলাহী জায়েদ, প্রকাশক মনিরুজ্জামান খান, ইফতেখার আমিন, আবু বকর সিদ্দিক রাজু প্রমুখ।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও রমজানের কারণে অমর একুশে বইমেলা-২০২৬-এর সময় এগিয়ে এনে ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। পরে অবশ্য তা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তে স্থগিত করা হয়।