হিমালয়ের দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত ২০ হাজার ৬০০ ফুট উঁচু ‘ফার্চামো’ শিখর জয় করছে বাংলাদেশি অভিযাত্রী দল। গত ৩ নভেম্বর নেপালের সময় সকাল ৯টায় বাংলাদেশের দুই পর্বতারোহী এম এ মুহিত ও বাহলুল মজনু ‘ফার্চামো’ চূড়ায় আরোহণ করেন। দলের অপর সদস্য নুরুননাহার নিম্নি ১৮ হাজার ২০০ ফুট পর্যন্ত আরোহণ করেন।
আজ শুক্রবার (১ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে পতাকা-প্রত্যর্পণ ও সাংবাদিক সম্মেলনে পর্বত জয়ের গল্প শোনান অভিযাত্রী দলের সদস্যরা। ইস্পাহানি টি লিমিটেডের সহযোগিতায় ‘ফার্চামো’ পর্বতশিখর অভিযানটি পরিচালনা করেছে বাংলা মাউন্টেইনিয়ারিং অ্যান্ড ট্রেকিং ক্লাব।
অভিযানের দলনেতা এম এ মুহিত ‘ফার্চামো’ শিখরে উন্নীত জাতীয় পতাকাটি প্রত্যর্পণ এবং অভিযানের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন। তিনি জানান, ফার্চামো অভিযানের জন্য বাংলাদেশের পর্বতারোহীরা ২৪ অক্টোবর নেপাল যান এবং ২৬ অক্টোবর লুকলা বিমানবন্দর থেকে ট্রেকিং শুরু করেন। প্রায় ৫০ কিমি ট্রেকিংয়ের পর তাঁরা ১ নভেম্বর বেস-ক্যাম্পে পৌঁছান এবং ২ নভেম্বর ১৮ হাজার ৫৩৭ ফুট উচ্চতায় হাই-ক্যাম্প স্থাপন করেন। গাইড চিরিং ওয়াংচু শেরপা ও ফুর কাঞ্চা শেরপাকে সঙ্গে নিয়ে বাংলাদেশের দুই পর্বতারোহী ৩ নভেম্বর রাত সাড়ে তিনটায় হাই-ক্যাম্প থেকে চূড়ান্ত-আরোহণ শুরু করেন। প্রায় ২ হাজার ফুট খাড়া পাথরের দেয়াল ও হিমবাহে আইস-অ্যাক্স, ক্রাম্পন ও জুমারের সাহায্যে আরোহণ শেষে ৩ নভেম্বর নেপাল সময় সকাল ৯টায় তারা ‘ফার্চামো’ শীর্ষে আরোহণ করেন।
এম এ মুহিত আরও বলেন, ‘অভিযানের সঙ্গে জীবনে বিশাল অভিজ্ঞতার সঞ্চয় হয়। বিশেষ করে হিমালয়ের প্রকৃতি। পাখির গান, নদী, শেরপাদের জীবনধারা দেখে অনেক কিছু জানার সুযোগ হয়েছে।’
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, ‘বিজয়ের মাসের প্রথম দিনে বিজয়ের গল্প শুনলাম। তরুণদের সাহসী ভূমিকার কারণে ১৯৭১ সালে আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি।’
এমন উদ্যোগগুলোতে রাষ্ট্রীয় সহায়তা না থাকায় তিনি হতাশা প্রকাশ করে বলেন, ‘এমন সাহসী উদ্যোগগুলোতে রাষ্ট্রের পৃষ্ঠপোষকতা করা উচিত। তরুণদের এসব কাজে উৎসাহ দিতে হবে।’
পতাকা-প্রত্যর্পণ অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রখ্যাত সাহিত্যিক অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল, অভিযানের স্পনসর ইস্পাহানি টি লিমিটেডের ডেপুটি জিএম (টি মার্কেটিং) মোহাম্মদ হারুন। সংবাদ সম্মেলন পরিচালনা করেন অ্যান্টার্কটিকা ও সুমেরু অভিযাত্রী ইনাম আল হক।