রাজধানীর আদাবর এলাকায় পুলিশ সদস্যকে কুপিয়ে আহত করার ঘটনায় কিশোর গ্যাং ‘কবজি কাটা’ গ্রুপের নয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে দলনেতা জনি ও রনি রয়েছেন।
গত সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) আদাবর থানাধীন শ্যামলী হাউজিং এলাকায় এক ব্যক্তি ও এক তরুণীকে অপহরণ করে মারধর ও মুক্তিপণ দাবির সংবাদ পায় পুলিশ। তাৎক্ষণিকভাবে ডিউটিরত পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালে অপহরণকারী গ্যাংয়ের সদস্যরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তাঁদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এতে একজন পুলিশ সদস্যের হাতের কবজি ও বাম হাত গুরুতর জখম হয় এবং অন্য পুলিশ সদস্যরাও আহত হন। এ সময় হামলাকারীরা পুলিশের টহল গাড়িও ভাঙচুর করে। ঘটনার পর তারা পালিয়ে যায়।
গোয়েন্দা বিভাগের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, এ ঘটনার পর ডিবি তেজগাঁও বিভাগের একাধিক দল গ্যাং সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান শুরু করে। আজ ভোরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কেরানীগঞ্জ ও সাভার থানাধীন এলাকা থেকে ‘কবজি কাটা’ গ্রুপের নেতা জনি, রনিসহ মোট ৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন— কুড়িগ্রামের রনি (২৭), একই জেলার জনি (২৪), ওসমান (২০) ও রেজু খান আলম (২২), মাদারীপুরের নাজির (২০), নীলফামারীর রাজু (২৭) ও আলামিন (১৮), ভোলার শাকিল (১৯) এবং বাগেরহাটের আবুল কামাল আজাদ (১৯)।
গ্রেপ্তারের সময় তাঁদের কাছ থেকে দুটি ধারালো দেশীয় অস্ত্র (বেলচা/সামুরাই) উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, এ সদস্যরা রাজধানীর মোহাম্মদপুর-আদাবর এলাকার ভয়ংকর কিশোর গ্যাং ‘কবজি কাটা’ গ্রুপের সক্রিয় সদস্য। এ গ্রুপের মূল নেতা আনোয়ার জেলহাজতে আছেন। তাঁর হয়ে রনি ও জনি গ্রুপটি পরিচালনা করছিলেন। পুলিশের ওপর হামলায় রনি ও জনির নেতৃত্বে ওসমান, দাঁতভাঙা সুজন, নাজির, কবজি কাটা হৃদয়, গাঁজা ব্যবসায়ী রাজুসহ অনেকে সরাসরি জড়িত ছিলেন।
জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানা যায়, গ্রুপটি আদাবর সুনিবিড় হাউজিং এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। মারামারি, চাঁদাবাজি, ছিনতাই, মাদক সেবন, ইভটিজিংসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে তাঁরা জড়িত। কবজি কেটে তারা টিকটকে সে ভিডিও আপলোড করে উল্লাস করে। তাদের বেপরোয়া কর্মকাণ্ডে স্থানীয় লোকজন অতিষ্ঠ ও অসহায়।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।