নার্সিং পেশা চিকিৎসকের অধীনস্থ হতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন কবি ও রাষ্ট্রচিন্তক ফরহাদ মজহার। তিনি বলেছেন, নার্সদের ডাক্তারি ব্যবস্থার অধীনস্থ একটা পেশা হিসেবে দেখা হয়—এটা ভুল। এখান থেকে মুক্ত হতে হবে। নার্সিং সেবাটা স্বাস্থ্যসেবার একটা মৌলিক দিক। ফলে তাদের স্বাধীনভাবে এই পেশা চর্চা করার সুযোগ-সুবিধা দিতে হবে।
আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে বাংলাদেশ নার্সেস অ্যাসোসিয়েশন (বিএনএ) ও স্বাস্থ্য আন্দোলন আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ফরহাদ মজহার বলেন, ‘আমাদের সমাজে চিকিৎসাকে ডাক্তারিকরণ বা মেডিকেলাইজেশন করা হয়েছে। অনেক রোগে ডাক্তার কিংবা ওষুধের প্রয়োজনই হয় না—পথ্যই যথেষ্ট। এ জায়গায় নার্সরা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।’
ফরহাদ মজহার অভিযোগ করে বলেন, দেশে জনগণের স্বাস্থ্যব্যবস্থা নিশ্চিত করাটা অত্যন্ত জরুরি হলেও এখানে পেশা হিসেবে নার্সদের ‘অমর্যাদাসম্পন্ন একটা অবস্থানে রাখা হয়েছে’।
এ সময় স্বাস্থ্য সংস্কার কমিশনের সমালোচনা করে তিনি বলেন, স্বাস্থ্য কমিশন গঠন করা হয়েছে, অথচ সেখানে নার্সদের রাখা হয়নি। নার্সদের কোনো মতামতও নেওয়া হয়নি। কমিশনের প্রতিবেদনে অনেক কথা বলা হয়েছে। কিন্তু ‘সবার জন্য স্বাস্থ্যের অধিকারের’ বিষয়টা নেই।
নার্সদের স্বাধীন পেশাগত চর্চা, পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ, ন্যায্য বেতন ও মর্যাদা নিশ্চিতের জন্য জাতীয় নার্সিং কমিশন গঠনের দাবি জানিয়ে ফরহাদ মজহার বলেন, নার্সদের ডাক্তারদের হুকুমমতো চলতে হবে—এই ধারণা ভাঙতে হবে। স্বাস্থ্য মানে শুধু প্রেসক্রিপশন নয়, প্রতিরোধও একটি বড় দিক। নার্সদের মর্যাদা ও স্বাধীনতা নিশ্চিত হলে জনগণ প্রকৃত স্বাস্থ্যসেবা পাবে।
সরকার স্বাস্থ্যকে এখন আর জনগণের অধিকার হিসেবে ‘স্বীকার করছে না’ অভিযোগ করে তিনি বলেন, এখন স্বাস্থ্যকে অধিকার নয়, বাজারজাত পণ্য বানানো হয়েছে। টাকা থাকলে চিকিৎসা পাবেন, না থাকলে নয়।
সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ নার্সেস অ্যাসোসিয়েশনের (বিএনএ) সভাপতি মো. শরিফুল ইসলাম। এক মাসের মধ্যে নার্সিং কমিশন গঠনের এক দফা দাবি বাস্তবায়ন করা না হলে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে কঠোর কর্মসূচি দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
বিএনএর সহসভাপতি মাহমুদ হোসেন তমালের সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন বিএনএ মহাসচিব আসাদুজ্জামান জুয়েল প্রমুখ।