১,১০২ কোটি টাকা আত্মসাৎ
অস্তিত্বহীন, নামসর্বস্ব দুটি প্রতিষ্ঠানের নামে প্রায় ১ হাজার ১০২ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে আত্মসাতের অভিযোগে এস আলম গ্রুপ ও ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম, তাঁর সহযোগী, ব্যাংকটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ ৬৮ জনকে আসামি করে পৃথক দুটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল সোমবার দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১-এ মামলা দুটি করা হয়েছে।
দুদকের জনসংযোগ বিভাগের উপপরিচালক আকতারুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, বাস্তবে অস্তিত্ব না থাকা মেসার্স হুদা এন্টারপ্রাইজের নামে ৫৫৩ কোটি ২১ লাখ ও মেসার্স সাফরান ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের নামে ৫৪৮ কোটি ৮০ লাখ টাকাসহ মোট ১ হাজার ১০২ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে আত্মসাৎ করা হয়েছে।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, মেসার্স হুদা এন্টারপ্রাইজের নামে ঋণ নিয়ে আত্মসাতের অভিযোগে করা মামলাটিতে আসামি করা হয়েছে মোহাম্মদ সাইফুল আলম, মেসার্স হুদা এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী আলমগীর হুদাসহ ৩১ জনকে। তাঁদের বিরুদ্ধে পরস্পর যোগসাজশে মেসার্স হুদা এন্টারপ্রাইজের নামে ভুয়া বিনিয়োগ প্রস্তাব তৈরি, জাল কাগজপত্র উপস্থাপন এবং ক্ষমতার অপব্যবহার করে ৫৫৩ কোটি ২১ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে।
ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক থেকে মেসার্স সাফরান ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল নামের অস্তিত্বহীন আরেকটি প্রতিষ্ঠানের নামে ৫৪৮ কোটি ৮০ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে আত্মসাতের অভিযোগে করা মামলায় আসামি করা হয়েছে সাইফুল আলম, প্রতিষ্ঠানটির স্বত্বাধিকারী মাহফুজুল ইসলামসহ ৩৭ জনকে। দুই মামলাতেই আসামিদের মধ্যে রয়েছেন ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের বিভিন্ন পর্যায়ের সাবেক ও বর্তমান বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা।
দুদক বলেছে, ঋণ অনুমোদনের ক্ষেত্রে এসব প্রতিষ্ঠানের বৈধ সিআইবি রিপোর্ট, ট্রেড লাইসেন্স, বিমা নথি, সম্পদের প্রকৃত মূল্যায়ন ছাড়াই ঋণ দেওয়া হয়েছে। ঋণ নেওয়ার পর ভেনাস ট্রেডিংস, রিজেনেবল ট্রেডার্স, আব্দুল আওয়াল অ্যান্ড সন্সসহ আরও কয়েকটি নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ওই টাকা স্থানান্তর করার মাধ্যমে সাইফুল আলম ও তাঁর সহযোগীরা আত্মসাৎ করেন।
মামলায় দণ্ডবিধির ৪০৯/১০৯/৪২০/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১ ধারা, দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭-এর ৫(২) ধারা এবং মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২-এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।