কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় চাঁদা না দেওয়ায় এক ব্যবসায়ীকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল মঙ্গলবার রাতে বুরুদিয়া ইউনিয়নের সালুয়াদী নতুন বাজারে এই ঘটনা ঘটে।
নিহত ব্যবসায়ীর নাম মো. শরীফ মিয়া (৩৯)। তিনি সালুয়দী গ্রামের মৃত খাইরুল ইসলামের ছেলে। সালুয়াদী নতুন বাজারে তাঁর ওয়ার্কশপ রয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ বুরুদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ইমাম হোসেন মোড়লকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার রাতে কয়েকজন যুবক শরীফের ওপর অতর্কিত হামলা করে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করেন। পরে স্থানীয় লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে পাকুন্দিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
পাকুন্দিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. নূর-এ-আলম খান জানান, হাসপাতালে আনার আগেই শরীফের মৃত্যু হয়।
শরীফের বোন মোছা. নিলুফা আক্তার বলেন, ‘এক সপ্তাহ আগে ৭০-৮০ হাজার টাকা চাঁদা দেওয়ার জন্য হুমকি দিয়েছিল আসাদ, পরশ, শান্তসহ কয়েকজন। তাদের লেলিয়ে দিয়েছে ইমাম হোসেন মেম্বার। আমার ভাই চাঁদা দিতে অস্বীকার করে। মঙ্গলবার রাতেও আমার ভাইয়ের কাছে গিয়া টাকা চাইছে। আমার ভাই বলছে, “এত টাকা আমি কোথা থেকে দিব? এত টাকা তো নাই।” পরে আমার ভাইয়ের ওপর হামলা করে বুকে পাঁচটা পাড় মারে (আঘাত করে)। আমার ভাইকে তারা নির্মমভাবে হত্যা করে।’
শরীফের ছোট ভাই শহীদ মিয়া বলেন, ‘সালুয়াদী নতুন বাজারে আমার বড় ভাইয়ের একটি ওয়ার্কশপ রয়েছে। মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে দোকানের কাজ চলাকালে ইমাম হোসেন মেম্বারের নেতৃত্বে ৭-৮ জনের একটি সন্ত্রাসী দল গিয়ে আমার ভাই শরীফের কাছে ৮০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে। এ নিয়ে সন্ত্রাসীদের সঙ্গে ভাইয়ের ঝগড়া হয়। এ সময় সন্ত্রাসীরা ভাইকে উপর্যুপরি মারধর ও ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়।’
এদিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক ইউপি সদস্য ইমাম বলেন, ‘আমি এ ঘটনার কিছুই জানি না। আমি সম্পূর্ণ নির্দোষ। আমি ভিলেজ পলিটিকসের শিকার হয়েছি।’
এ বিষয়ে পাকুন্দিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাখাওয়াৎ হোসেন বলেন, ‘কী কারণে এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে, পুলিশ তদন্ত করছে। লাশ উদ্ধার করে প্রাথমিক সুরতহাল করে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়। পরিবারের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’