রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিত্তশালীদের টার্গেট করে মুনাফার লোভ দেখিয়ে প্রতারণা করে আসছিল একটি চক্র। চক্রটি বিভিন্ন সময় জমি ক্রয়, ফ্ল্যাট ক্রয়, ইন্ডাস্ট্রি স্থাপন ও ভালো চাকরি দেওয়ার নামে বিশ্বাস অর্জন করে প্রতারণা করত। এই প্রতারক চক্রের মূলহোতাসহ ৫ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
গোয়েন্দারা বলছে, দেশের ৬৪ জেলায় চক্রটির এজেন্ট রয়েছে। তাদের মাধ্যমে বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে গ্রামের বিত্তশালীদের টার্গেট করত। অধিক মুনাফার লোভ দেখিয়ে অভিনব কৌশলে প্রতারণা করে অর্থ আত্মসাৎ করত।
আজ শনিবার ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি প্রধান) হারুন আর রশিদ এ তথ্য জানান।
হারুন আর রশিদ বলেন, চক্রটি বিভিন্ন কৌশলে প্রতারণার ফাঁদ পেতে টাকা আত্মসাৎ করত। তাদের মূলহোতাসহ ৫ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার রাতে রাজধানীর মিরপুর ও উত্তরা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গোয়েন্দা পুলিশের হাতে গ্রেপ্তাররা হলেন—চক্রের মূলহোতা মিজান উকিল ওরফে কবির ওরফে মাসুদ (৪৭), তার কথিত পিএস পিন্টু খান (৫৪), ছোট ভাই সাইফুল ইসলাম (২৭), তার স্ত্রী কেনা রহমান (৩০) এবং সাদিয়া ইসলাম মৌ (৩০)।
এ সময় সময় তাদের কাছ থেকে তিনটি ব্রিফকেস, একটি লাগেজ, ৩৬টি টাকা সাদৃশ্য কাগজের বান্ডিল, ১২টি মোবাইল ফোন, ২০টি মোবাইল সিম জব্দ করা হয়।
গোয়েন্দা প্রধান বলেন, ভুক্তভোগী মো. লুৎফুর রহমান (৫৫) বগুড়ার গ্রামের বাড়িতে ভবন নির্মাণকালে প্রতারক দলের এক সদস্য তার কাছে গিয়ে ভালো মানের জমি কিনে দিতে সহযোগিতা চান। কথাবার্তার একপর্যায়ে প্রতারক জানায়, তার বস একজন শিল্পপতি, ঢাকায় তার বিশাল সম্পদসহ নিজস্ব বাড়ি, ফ্ল্যাট, ক্লিনিক, মিল-ফ্যাক্টরি আছে। তার বস বগুড়াতে একটি ভালো মানের ক্লিনিক নির্মাণ করতে চায়। এ বিষয়ে প্রতারকের বসসহ তাকে সাহায্য করতে বারবার অনুরোধ করে। পরে ভুক্তভোগীর মোবাইল নম্বর নিয়ে ঢাকায় চলে যায়। পরবর্তীতে প্রতারকদের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথাবার্তার একপর্যায়ে ভুক্তভোগীর বন্ধুত্ব তৈরি হয়।
গ্রেপ্তারদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে হারুন জানান, প্রতারকেরা ক্লিনিক, মোবাইল টাওয়ার, শিল্প-কারখানা স্থাপন, ব্যবসার নাম করে অভিনব কৌশলে প্রতারণার ফাঁদ পেতে টার্গেটকৃত ব্যক্তির টাকা আত্মসাৎ করে আসছিল।