পুরান ঢাকার চকবাজারে কসমেটিকস পণ্যে নির্ধারিত মাত্রার চেয়ে আড়াই হাজার গুণ বেশি হাইড্রোকুইনোন শনাক্ত করেছে বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই)। এই উপাদান ত্বকের ক্যানসার ছাড়াও লিভার ও কিডনির জটিল রোগ সৃষ্টি করতে পারে।
বিএসটিআই জানায়, রাজধানীর চকবাজার এলাকায় মেসার্স সেঞ্চুরি ট্রেড ও মেসার্স স্বর্ণা ইন্টারন্যাশনালে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান চালানো হয়। প্রতিষ্ঠান দুটি বিএসটিআইয়ের লাইসেন্স ও ছাড়পত্র না নিয়ে মিথ্যা তথ্য দিয়ে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের স্কিন ক্রিম, বেবি অয়েল, লিপস্টিক, স্কিন পাউডার, হোয়াইটেনিং ক্রিম পণ্য বাজারজাত করে আসছিল। অনুমোদনবিহীন কসমেটিক আমদানি ও বাজারজাত করায় বিএসটিআই প্রতিষ্ঠানটি দুটিকে চার লাখ টাকা জরিমানা করেছে।
আজ বুধবার বিকেলে বিএসটিআইয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে প্রতিষ্ঠানটির মহাপরিচালক এস এম ফেরদৌস আলম বলেন, অভিযানে তাঁরা বিপুল পরিমাণ অবৈধ ও নিম্নমানের বিভিন্ন ব্র্যান্ডের কসমেটিকস জব্দ করেন। জব্দ করা কসমেটিকস বিএসটিআইয়ের ল্যাবে পরীক্ষা করা হয়। এসব কসমেটিকসে নির্ধারিত মানের চেয়ে প্রায় আড়াই হাজার গুণেরও বেশি ক্ষতিকর হাইড্রোকুইনোন পাওয়া যায়, যা স্কিন ক্যানসারসহ লিভার ও কিডনির জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।
নমুনা পরীক্ষায় দেখা যায়, বিএসটিআইয়ের নির্ধারিত মান অনুযায়ী হাইড্রোকুইনোনের সহনীয় মাত্রা থাকতে হবে প্রতি কেজিতে সর্বোচ্চ ৫ মিলিগ্রাম। কিন্তু পরীক্ষা করে পাওয়া গেছে আড়াই হাজার গুণের বেশি। ল্যাবে পরীক্ষা করা এনসাইন ব্র্যান্ডের স্ক্রিন ক্রিমে ১৩ হাজার ৯৬৮ দশমিক ৩ মিলিগ্রাম পাওয়া গেছে, যা নির্ধারিত মানের চেয়ে ২ হাজার ৭৯৩ গুণ বেশি। এ ছাড়া স্কিনলাইট ব্র্যান্ডের স্ক্রিন ক্রিমে ১২ হাজার ১৭৫ দশমিক ৭০ মিলিগ্রাম শনাক্ত করা হয়। স্কিনসাইন ব্র্যান্ডের স্কিন ক্রিমে ১২ হাজার ৩২৫ দশমিক ৩৯ মিলিগ্রাম, নো স্কেয়ার্স ব্র্যান্ডের স্কিন ক্রিমে ১২ হাজার ৫২ দশমিক ৯৫ মিলিগ্রাম, মাইফেয়ার ব্র্যান্ডের স্কিন ক্রিমে ১১ হাজার ৭৭১ দশমিক ১৪ মিলিগ্রাম, ইলোসন-এইচটি ব্র্যান্ডের স্ক্রিন ক্রিমে ১২ হাজার ১০৮ দশমিক ৬১ মিলিগ্রাম, মিরাকল ব্র্যান্ডের স্কিন ক্রিমে ১১ হাজার ৯১৬ দশমিক ১৯ মিলিগ্রাম, স্কিন সাইন ব্র্যান্ডের স্কিন ক্রিমে ১১ হাজার ৩৫৪ দশমিক ২৬ মিলিগ্রাম এবং স্কিন সানরাইজ ব্র্যান্ডের স্কিন ক্রিমে ১১ হাজার ৮৪৩ দশমিক ৫৯ মিলিগ্রাম হাইড্রোকুইনোন পাওয়া যায়।
বিএসটিআইয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট লুৎফুন্নেসা খানমের নেতৃত্বে অবৈধ ও নিম্নমানের প্রায় এক কোটি টাকার কসমেটিকস পণ্য জব্দ করে বিএসটিআই প্রধান কার্যালয়ে আনা হয়।