হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করে ১০ বছরেও শুনানির প্রস্তুতি না নেওয়ায় উষ্মা করেছেন আপিল বিভাগ। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীর উদ্দেশ্যে আদালত বলেন, ১০ বছরেও একটা মামলার প্রস্তুতি নিতে পারেন না, এটা লজ্জার।
বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজ কমান্ডারের জায়গা অর্পিত সম্পত্তি হিসেবে সরকারের অধিগ্রহণ অবৈধ ঘোষণা করে ২০১২ সালে রায় দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। পরে রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ, যা এখনো শুনানি হয়নি।
আজ রোববার প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির আপিল বেঞ্চে মামলাটি শুনানির জন্য ছিল। রাষ্ট্রপক্ষ সময়ের আবেদন করলে আগামীকাল শুনানির জন্য দিন ধার্য করা হয়।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মেহেদী হাছান চৌধুরী। রিটের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আওসাফুর রহমান।
শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষের উদ্দেশে আদালত বলেন, একজনের ভিটে-বাড়ি নিয়ে যাবেন আর আমরা চোখ বন্ধ করে থাকব, এটা হতে পারে না। যাদের মূল ভিটে-বাড়ি, আগে তাদের কথা ভাবতে হবে।
আইনজীবী আওসাফুর রহমান বলেন, ‘রাজধানীর মগবাজারে সাড়ে ১৯ শতাংশ জমির মূল মালিক বীরেন্দ্র কুমার নাথ। ১৯৪০ সালে আম মোক্তারনামা মূলে ওই জমি সিরাজ কমান্ডারকে দিয়ে তিনি ভারতে চলে যান। পরে সিরাজ কমান্ডার তাঁর নামে নামজারি করে খারিজ করে নেন। বসবাস করতে থাকেন পরিবারসহ। সেই সঙ্গে হোল্ডিং ট্যাক্স, বিদ্যুৎ বিল, পানির বিল এবং খাজনা পরিশোধ করেন। তবে ২০১০ সালের শেষের দিকে ঢাকা জেলা প্রশাসনের নির্দেশে পুলিশ তাঁদের ওই বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করে।’
জানা যায়, ওই জমি অর্পিত সম্পত্তি হিসেবে অধিগ্রহণ করে বিসিএস প্রশাসন কল্যাণ বহুমুখী সমবায় সমিতিকে দেওয়া হয়েছে। এরপর ওই বছরই অধিগ্রহণ চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন সিরাজ কমান্ডারের সন্তানেরা। রিটের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১২ সালে হাইকোর্ট অধিগ্রহণ অবৈধ ঘোষণা করেন। হাইকোর্টের ওই রায়ের বিরুদ্ধে ২০১২ সালে লিভ টু আপিল করে সরকার।