ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে নায়েব উল্লাহ (৪০) নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের নারী, শিশুসহ অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন। তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হাসপাতাল চত্বর থেকে নূর আলম নামে একজনকে আটক করেছে পুলিশ।
আজ মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে বুড়িশ্বর ইউনিয়নের আশুরাইল গ্রামে অনিতপুরে সংঘর্ষের ঘটনাটি ঘটে।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে হাওর থেকে ধান কেটে নৌকায় করে অনিতপুরের চরে আসেন জালাল মিয়া। ধান বাড়িতে নিতে তিনি শ্রীঘর গ্রামের ট্রলিচালক জুনাইদ মিয়ার সঙ্গে ৫০০ টাকার চুক্তি করেন। কিন্তু পাঁচ মিনিট পর ধান নিয়ে যাবেন না বলে জানান জুনাইদ। এ নিয়ে দুজনের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে দুজনের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে। মারামারিতে জুনাইদ আহত হন। মারামারির বিষয়টি গ্রামে ছড়িয়ে পড়লে উভয় পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের নারী, শিশুসহ অন্তত ৩০ জন আহত হন। শ্রীঘর গ্রামের জুনাইদের পক্ষের ১৩ জন এবং আশুরাইল গ্রামের জালাল মিয়ার পক্ষের ১৭ জন আহত হন। হাসপাতালে নেওয়ার পর শ্রীঘর গ্রামের জুনাইদের পক্ষের মো. নায়েব উল্লাহ (৪০) নামে একজন মারা যান।
শ্রীঘর গ্রামের আহত ব্যক্তিরা হলেন মারজিয়া মোছাম্মৎ ছালমা বেগম, আব্দুল করিম, মহসিন মিয়া, জুবাইদ মিয়া, এনামুল হক, মিয়ান মিয়া, আরজান মিয়া, মো. দিপু, দানা মিয়া, আরমান মিয়া, মহসিন মিয়া, শফিকুল মিয়া।
আশুরাইলের পক্ষের আহত ব্যক্তিরা হলেন-কাঙ্গাল মিয়া, নিজাম মিয়া, করিম মিয়া, সোহাগ মিয়া, শরীফ মিয়া, খেলু মিয়া, আজাজুল মিয়া ও আতিক মিয়ার নাম জানা গেছে। আশুরাইলের পক্ষের লোকজন বাড়ি থেকে পালিয়ে যাওয়ায় তাঁদের সবার নাম জানা যায়নি।
এ ঘটনায় এলাকায় থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত নূর আলম নামে একজনকে আটক করা হয়েছে। আটক নুর আলম আশুরাইল গ্রামের লাল মিয়ার ছেলে। তিনি উপজেলার গুনিয়াউক উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক।
বুড়িশ্বর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ইকবাল চৌধুরী বলেন, ‘দুই পক্ষের সংঘর্ষের খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে পুলিশ নিয়ে সংঘর্ষ থামাই। একজন নিহত হওয়ার খবর পেয়েছি।’
নাসিরনগর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাবিবুল্লাহ সরকার বলেন, ‘হাওর থেকে ধানের আঁটি বাড়িতে নেওয়া নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষ হয়েছে। আহত একজন নায়েব উল্লাহ হাসপাতালে চিকিৎসা অবস্থায় মারা গেছে। এখন পর্যন্ত কেউ থানায় মামলা করেনি।’