কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে আনোয়ার হোসেন হত্যা মামলায় দুজনকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া আরও পাঁচ আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) দুপুরে কুমিল্লার অতিরিক্ত দায়রা জজ ৩য় আদালতের বিচারক সাবরিনা নার্গিস এ রায় দেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা হলেন চৌদ্দগ্রাম উপজেলার দেড়কোটা গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে জিয়া উল্লাহ (২৮) ও একই গ্রামের ইয়াকুব মিয়ার ছেলে জুয়েল রানা (২৯)।
এ ছাড়া যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা হলেন চৌদ্দগ্রামের দেড়কোটা গ্রামের কারি ফজলুল হক (২৩), আজাদ রহমান (২৫), আবদুল কাদের (২৭), কবির আহমেদ (৩০) ও ফেলনা গ্রামের সাদ্দাম হোসেন (২৩)।
রায় ঘোষণাকালে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি কবির আহমেদ আদালতে উপস্থিত ছিলেন এবং অপর ছয় আসামি পলাতক রয়েছেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৩ সালের ২২ এপ্রিল সন্ধ্যায় পূর্ব বিরোধের জেরে জিয়া উল্লাহ ওরফে জিয়া ও তাঁর সহযোগীরা আনোয়ার হোসেনের দোকানে হামলা ও ভাঙচুর চালান। এতে বাধা দিলে তাঁরা আনোয়ার হোসেনকে কুপিয়ে আহত করেন।
একপর্যায়ে তাঁর শরীরে পেট্রল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেন। এ সময় স্থানীয় লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং পরে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। পরে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে মারা যান। পরদিন ২৩ এপ্রিল এ ঘটনায় নিহতের বাবা দেলোয়ার হোসেন বাদী হয়ে ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ২০-২৫ জনের বিরুদ্ধে চৌদ্দগ্রাম থানায় মামলা করেন।
মামলার তদন্ত শেষে ওই বছরের ২৯ ডিসেম্বর আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়। পরে ২০১৪ সালের ২৬ আগস্ট জেলা ডিবির এসআই জিল্লুর রহমান আদালতের নির্দেশে ১৯ জনের বিরুদ্ধে পুনরায় চার্জশিট দাখিল করেন।
রাষ্ট্রপক্ষে আইনজীবী মুমিনুল হক ভূঁইয়া বলেন, এ মামলায় ২৩ জন সাক্ষীর মধ্যে ১১ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আজ মঙ্গলবার দুপুরে কুমিল্লার অতিরিক্ত দায়রা জজ ৩য় আদালতের বিচারক সাবরিনা নার্গিস দুজনকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ এবং অপর পাঁচ আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। তাঁদের প্রত্যেককে ১ লাখ টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন। এ ছাড়া মামলার চার্জশিটভুক্ত ১২ জন আসামিকে বেকসুর খালাস দেন। মামলার রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে তিনি বলেন, এ রায়ের মাধ্যমে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা হয়েছে।