ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর সদর কৃষি ব্যাংক শাখা থেকে কৃষিঋণ পরিশোধের জন্য সম্প্রতি রিয়াজ উদ্দিন নামের এক ব্যক্তির ঠিকানায় নোটিশ পাঠানো হয়েছে। অথচ রিয়াজ উদ্দিন মারা গেছেন ১২ বছর আগে। ভুক্তভোগী ব্যক্তির পরিবারের সদস্যরা এ নোটিশের চিঠি পেয়ে হতভম্ব হয়ে পড়েন।
৪ জুলাই আজকের পত্রিকার অনলাইনে ‘কবর থেকে এসে ঋণ নিলেন রিয়াজ উদ্দিন!’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। সংবাদ প্রকাশের পরই নাসিরনগর সদর কৃষি ব্যাংক শাখা খোঁজ নিয়ে জানতে পারে, গ্রাম পুলিশ রজব আলী ভুল ঠিকানায় নোটিশ দিয়ে এসেছেন।
পরে নাসিরনগর কৃষি ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বিষয়টি আমলে নিয়ে ঠিকানা সংগ্রহ করে প্রকৃত ঋণগ্রহীতা রিয়াজ উদ্দিনকে খুঁজে বের করে।
ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়া রিয়াজ উদ্দিন ব্যাংকে হাজির হয়ে লিখিতভাবে নিজেকে প্রকৃত ঋণগ্রহীতা হিসেবে দাবি করেন। আর এদিকে গ্রাম পুলিশ মো. রজব আলীও ব্যাংকে গিয়ে ভুল ঠিকানায় নোটিশ পাঠানোর বিষয়টি লিখিতভাবে নিজের ভুল স্বীকার করে স্বীকারোক্তি দেন।
ভুল ঠিকানায় নোটিশ পাঠানোর বিষয়ে স্বীকার করে গ্রাম পুলিশ মো. রজব আলী বলেন, ‘আমার ভুলের কারণে এটা হয়েছে। একই নাম হওয়ায় ভুল ঠিকানায় চিঠি দিয়ে আসছিলাম।’
নাসিরনগর সদর কৃষি ব্যাংক শাখার শাখা ব্যবস্থাপক রিপন চন্দ্র দেব জানান, গ্রাম পুলিশের ভুলে অন্য ঠিকানায় নোটিশ পাঠানো হয়েছিল।
জানা গেছে, ২০২৪ সালের ২৭ জানুয়ারি রিয়াজ উদ্দিনের নামে ১ লাখ টাকার ঋণ এখন সুদে-আসলে হয়েছে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা। সেই টাকা পরিশোধের জন্য ৩ জুলাই নাসিরনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) স্বাক্ষরিত রিয়াজ উদ্দিনের পরিবারের কাছে একটি চিঠি পাঠায়।
চিঠি পেয়ে রিয়াজ উদ্দিনের মেয়ে মাহমুদ বেগম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমার বাবা ২০১৪ সালের ১৫ এপ্রিল মারা গেছেন। আমার জানামতে তিনি জীবিত থাকা অবস্থায় কোনো ঋণ নেননি। এখন ওরা চিঠি নিয়ে আসছে। আমার বাবা কি কবর থেকে এসে ঋণ নিয়েছেন? আমি চিঠি রাখতে চাইনি, গ্রাম পুলিশ জোর করে দিয়ে গেছে।’