মধ্য আফ্রিকায় আইইডি বিস্ফোরণে নিহত শান্তিরক্ষী সেনা সদস্য জসিম উদ্দিনের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। তার দুই সন্তান ইকরাম (৬) ও ইমরান (৪) এখনো জানে না তাদের বাবা আর বেঁচে নেই। তারা এখনো বাবার ফোনের অপেক্ষায় দিন কাটাচ্ছে। মা সান্ত্বনা দিয়ে বলছেন, তোমাদের বাবা ঘুমিয়ে আছেন, ঘুম থেকে উঠে তোমাদের সঙ্গে ফোনে কথা বলবে।
নিহত সেনা সদস্য জসিম উদ্দিনের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিজয়নগরের কাটিঙ্গা গ্রামে। তিনি বীর মুক্তিযোদ্ধা গাজী আবদুর নুরু মিয়ার ছেলে। জসিম উদ্দিন ২০০৯ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে সৈনিক পদে যোগ দেন। ২০২১ সালে তিনি শান্তিরক্ষী মিশনে মধ্য আফ্রিকায় পশ্চিম সেক্টরে যান।
জসিমের স্ত্রী শারমিন আক্তার বলেন, ‘দুই শিশু ছেলে এখনো জানে না তাদের বাবা বেঁচে নেই। বাবা ফোন করেছিল কিনা জানতে চাইলে আমি বলি, তোমাদের বাবা ঘুমিয়ে আছে। ঘুম থেকে উঠে ফোন করবে। জানি না এই মিথ্যা আশ্বাস আর কত দিন দেব।’
জসিমের বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা গাজী আবদুন নূর বলেন, ‘ছেলের মরদেহটি দেখতে চাই। মরদেহ দ্রুত ফিরিয়ে আনা হোক। ছেলের স্ত্রীসহ দুই অবুঝ সন্তানের দায়িত্ব নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই।’
বিজয়নগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এএইচ ইরফান উদ্দিন আহম্মেদ জানান, জসিমের মরদেহ দ্রুত দেশে আনার জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হবে। তাঁর পরিবারকে সরকারের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করা হবে বলেও জানান তিনি।
প্রসঙ্গত, স্থানীয় সময় সোমবার রাত ৮টার পর মধ্য আফ্রিকায় শান্তিরক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার সময় ইমপ্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইসের (আইইডি) বিস্ফোরণে জসিম উদ্দিনসহ (৩২) তিন বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী নিহত হন। নিহত শান্তিরক্ষীরা হলেন—সৈনিক জসিম উদ্দিন (৩১, সৈনিক জাহাংগীর আলম (২৬) ও সৈনিক শরিফ হোসেন (২৬)।