ভোলার চরফ্যাশনে ফাতেমা মতিন মহাবিদ্যালয়ের একটি ভবনের কক্ষে আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বসে ছিলেন অভিভাবক খাজিদা বেগম। তাঁর কোলে ছিল আট দিন বয়সী নাতনি। কলেজে এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে শিশুটির মা ফাবিহা খানম।
ফাবিহা উপজেলার আবুবকরপুর ইউনিয়নের মো. মাকসুদ খানের মেয়ে। দেড় বছর আগে একই উপজেলার জাহিদুল ইসলামের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়।
খাজিদা বেগম জানান, তাঁর মেয়ে ফাবিহা খানম চরফ্যাশন সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী। পরীক্ষা শুরুর মাত্র দুই দিন আগে গত মঙ্গলবার ফাবিহার সন্তানের জন্ম হয়। এই পরিস্থিতিতেও এইচএসসি পরীক্ষা দেওয়ার সিদ্ধান্তে স্থির থাকে ফাবিহা। খাদিজা বেগম বলেন, ‘আমার মেয়ের ইচ্ছা পরীক্ষা দেওয়ার। কিছুটা দুশ্চিন্তায় থাকলেও ওর সাহস আর ইচ্ছার কাছে আমরা হার মেনেছি। তাই আজ আমি নাতনিকে নিয়েই ওর পরীক্ষাকেন্দ্রে এসেছি। নবজাতককে যেন তার মা বুকের দুধ খাওয়াতে পারে, সে জন্য কলেজে যে ভবনে মেয়ে পরীক্ষা দিচ্ছে, সেটি থেকে একটু দূরে অন্য ভবনে একটি কক্ষে তাদের অবস্থান করার সুযোগ দিয়েছে কলেজ কর্তৃপক্ষ।’
খবরের সত্যতা নিশ্চিত করে পরীক্ষাকেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও চরফ্যাশন সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মোহাম্মদ উল্লাহ স্বপ্ন আজ বিকেলে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গত বৃহস্পতিবার এইচএসসি পরীক্ষা শুরুর দুই দিন আগে পরীক্ষার্থীর মা এসে তাঁর নাতনি হওয়ার কথা আমাকে জানান। এরপর প্রথম দিন পরীক্ষা দেয় পরীক্ষার্থী। দ্বিতীয় দিন পরীক্ষা চলাকালে হলের সামনে বাইরে নাতনিকে নিয়ে অভিভাবককে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে আমরা একটি কক্ষের ব্যবস্থা করে দিই। যেন প্রয়োজনে ওই পরীক্ষার্থী শিশুটিকে সেখানে গিয়ে ব্রেস্টফিডিং করাতে পারে। অল্প বয়সে সন্তানের মা হলেও পড়ালেখার প্রতি মেয়েটির আগ্রহ আমাদের আশান্বিত করেছে।’