চলতি বছরের ১৯ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা থাকায় টানা ৬৫ দিন সাগরে মাছ ধরতে পারেননি জেলেরা। নিদারুণ কষ্টে নিষেধাজ্ঞার দিনগুলো পার করে ইলিশ মৌসুমে সেই ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা ছিল তাঁদের। কিন্তু ভরা মৌসুমে ইলিশের আকালে ভেস্তে গেছে সেই ভাবনা। আগের ক্ষতি পোষানোর বদলে সৃষ্টি হয়েছে নতুন ক্ষতির শঙ্কা।
এমন পরিস্থিতিতে মা-ইলিশ রক্ষায় আগামীকাল সোমবার থেকে ইলিশ আহরণ ও বিক্রিতে আবারও ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শুরু হচ্ছে। অন্যবারের চেয়ে এবার নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ ১০ দিন এগিয়ে আনা হয়েছে। এর ফলে জীবিকা নিয়ে প্রবল অনিশ্চয়তা-হতাশায় মাথায় হাত জেলে ও মৎস্যজীবীদের। সরকারের এমন সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করে এর যৌক্তিকতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। সে প্রসঙ্গে সন্তোষজনক উত্তর মেলেনি, তবে নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নে কঠোর ভূমিকায় থাকার ঘোষণা পাওয়া গেছে প্রশাসনের কাছ থেকে।
গতকাল শনিবার ভোলা ও বরগুনার পাথরঘাটার বিএফডিসির ইলিশের আড়তে গিয়ে কথা হয় জেলে, পাইকার, আড়তদার, ব্যবসায়ী ও শ্রমিকদের সঙ্গে। সবার কণ্ঠেই হতাশা ও ক্ষোভ। ৬০ বছর ধরে সাগরে ইলিশ ধরেন পাথরঘাটার ফারুক হোসেন। প্রবীণ এই জেলে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এই বচ্ছর সাগরে ইলিশ পাই নাই, যা পাইছি তা জাটকা। এই জাটকা শিকার কইরা কোনো রহম পরানডা বাঁচাইছি। এইবার (নিষেধাজ্ঞার মধ্যে) যে পোলা-মাইয়া লইয়া কি খামু, আল্লায় জানে।’
এ প্রসঙ্গে বিএফডিসি পাথরঘাটার ব্যবস্থাপক লে. মো. লুৎফর রহমান বলেন, গত বছরের চেয়ে এবার প্রায় ২০০ মেট্রিক টন ইলিশ বেশি অবতরণ হয়েছে। এর বেশির ভাগ ছিল জাটকা। ফলে জেলেরা দাম পাননি, অন্যরাও লাভবান হতে পারেননি।
বিএফডিসির পাইকার সমিতির সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম আব্বাস বলেন, ‘গত ২১ বছরে ব্যবসায় সর্বনিম্ন ইলিশ অবতরণ হয়েছে এবার। এ বছর নিষেধাজ্ঞার সময় এগিয়ে আনায় রাষ্ট্রেরও তো ক্ষতি হচ্ছে।