নির্বাচনী সফরে ৫ বছর পর আগামীকাল শুক্রবার বরিশালে আসছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পদ্মা সেতু পেড়িয়ে সড়ক পথে তিনি নগরীতে পৌঁছাবেন। দুপুর ৩টায় ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু উদ্যানে শেখ হাসিনা ভাষণ দেবেন। তাঁর সফর সঙ্গী হবেন বোন শেখ রেহানা এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
আওয়ামী লীগ নেতাদের মতে, প্রধানমন্ত্রীর এ সফরে ১০ লক্ষাধিক মানুষের সমাগম হবে। এদিকে শেখ হাসিনার এ জনসভায় হাফ ডজন দাবি তুলতে পারেন দলটির শীর্ষ নেতারা। তবে ২০১৮ সালের সফরে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি এখন পর্যন্ত বাস্তবায়ন না হওয়ায় হতাশা প্রকাশও করেছেন বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ।
প্রধানমন্ত্রী সর্বশেষ বরিশাল সফর করেছেন ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি। ওই দিন তিনি বরিশাল ও পটুয়াখালীর সীমান্ত পায়রা নদীর লেবুখালী পয়েন্টে শেখ হাসিনা ক্যান্টনমেন্ট উদ্বোধন করেন, পরে নগরের বঙ্গবন্ধু উদ্যানে জনসভায় বক্তৃতা দেন। একই স্থানে আগামীকাল শুক্রবার নির্বাচনী ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী।
জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটির সদস্য এবং প্রধানমন্ত্রীর সফর উপলক্ষে গঠিত কমিটির সদস্য বলরাম পোদ্দার বলেন, ‘শেখ হাসিনার এটি নির্বাচনী জনসভা। তাঁর সঙ্গে শেখ রেহানা এবং দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরও বরিশালে আসছেন। এ অঞ্চলের মানুষের প্রত্যাশা অনেক। তবে আচরণ বিধি মেনে আমাদের প্রধান দাবি থাকবে ভোলার গ্যাস বরিশালে এনে শিল্পাঞ্চল গড়ে তোলা।’
ইশতেহার অনুযায়ী সদর উপজেলার লামছড়িতে প্রায় ২শ একর জমিতে ভারী ও মাঝারি শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার দাবি করবেন বলে জানান তিনি। এ ছাড়া শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজে হাসপাতালের চিকিৎসাসেবা বৃদ্ধিতে নতুন একাডেমিক ভবন চাওয়া হবে। নগরের উন্নয়নে বিসিসিতে বরাদ্দ বৃদ্ধির দাবি জানানো হবে বলে জানান তিনি।
আওয়ামী লীগ নেতা বলরাম পোদ্দার বলেন, ‘বরিশালে ফোর লেন ও রেলসংযোগ প্রকল্প নিয়ে রাখা হয়েছে। ভোটের পর এ প্রকল্পে অর্থ বরাদ্দের উদ্যোগ নেওয়া হবে। তবে আমরা ১০ লাখ লোকের সমাগমের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি। আশা করি, শুক্রবার বরিশাল নগরী হবে নির্বাচনী নগর।’
বরিশাল নগর উন্নয়ন ফোরামের সমন্বয়ক কাজী এনায়েত হোসেন শিবলু বলেন, প্রধানমন্ত্রী আগে কিছু প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। বরিশালবাসী এখন তা বাস্তবায়ন দেখতে চান।
এ প্রসঙ্গে জাতীয় পার্টির নগর আহ্বায়ক অধ্যাপক মহসিন উল ইসলাম হাবুল বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর এই সফরের মূল লক্ষ্য আওয়ামী লীগের পক্ষে ভোট চাওয়া। তিনিতো কত কথাই বলছিলেন। বরিশাল বিভাগীয় শহরে শিল্পাঞ্চল গড়বেন, ভোলার গ্যাস আনবেন, ফোর লেন, রেললাইন বাস্তবায়ন করবেন। কিন্তু ভাঙ্গা পর্যন্ত এসে আর রেললাইনের খবর নেই। জনগণ এ জন্য হতাশ।’
এদিকে সিটি মেয়র আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে জনসভাস্থল পরিদর্শনকালে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর দক্ষিণাঞ্চলে যে উন্নয়ন তাতে সব স্তরের মানুষ এই জনসভায় আসবে। এবার জনসভায় নারী–পুরুষের পৃথক বসার ব্যবস্থা, বিশুদ্ধ খাবার পানি, ১০টি মেডিকেল টিম, শৃঙ্খলা টিম, নিরাপত্তাকর্মীসহ প্রশাসনিক সব প্রস্তুত করা হয়েছে।