বরিশালে পারিবারিক কলহে স্ত্রীকে হত্যার দায়ে স্বামী ও তার সহযোগীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। আজ মঙ্গলবার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক কেএম রাশেদুজ্জামান রাজা এ রায় দেন। একই সঙ্গে দণ্ডিত দুজনকে পাঁচ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
দণ্ডিতরা হলেন গোপালগঞ্জের সদর উপজেলার বেদ গ্রামের বাসিন্দা তামিম শেখ (৪৪) ও কোটালীপাড়া উপজেলার বেপারীপাড়া রুবেল শেখ (৪২)। রায় ঘোষণার সময় আসামিরা এজলাসে উপস্থিত ছিলেন।
আদালতের বেঞ্চ সহকারী কামরুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, দুই সন্তানের জননী বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার নগরবাড়ী এলাকার বাসিন্দা রাশিদা বেগমের প্রথম স্বামীর সঙ্গে বিয়ে বিচ্ছেদ হয়। এরপর এক সন্তানের বাবা তামিম শেখের সঙ্গে রাশিদার পরিচয় ও প্রেম হয়। পরে তারা বিয়ে করে আগৈলঝাড়া উপজেলার বাকাল গ্রামের হেমায়েত মোল্লার বাড়িতে ভাড়া নিয়ে বসবাস শুরু করে। কিন্তু একপর্যায়ে স্বামী তামিমের সঙ্গে রাশিদার পারিবারিক বিরোধ শুরু হয়।
২০২২ সালের ১৯ জানুয়ারি তামিম শেখ রাশিদার মোবাইল ফোনে কল দিয়ে গোপালগঞ্জে নিয়ে যায়। তখন দশ মাস বয়সী শিশু তনিমকে নিয়ে গোপালগঞ্জ গেলে রাশিদাকে নিয়ে একটি আবাসিক হোটেলে উঠে স্বামী তামিম।
পরদিন রাতে রাশিদাকে বাসায় পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে থ্রি হুইলারে রওনা দেয়। তখন থ্রি হুইলারে ছিলেন দণ্ডিত রুবেল। থ্রি হুইলারটি গোপালগঞ্জ আগৈলঝাড়া মহাসড়কের বাইপাস ব্রিজের পাশে নির্জন স্থানে পৌঁছালে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে ও শ্বাসরোধ করে রাশিদাকে হত্যা করে।
পরে লাশ ব্রিজের অদূরে হান্নান মোল্লার ঘেরে পাশে ফেলে রেখে যায়। গভীর রাতে পথচারীরা দশ মাস বয়সী শিশু তনিমের কান্না শুনে পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে।
বেঞ্চ সহকারী কামরুল ইসলাম আরও বলেন, এ ঘটনায় রাশিদার ভাই আমিন শাহ বাদী হয়ে ২০২২ সালের ২০ জানুয়ারি আগৈলঝাড়া থানায় একটি মামলা করেন। আগৈলঝাড়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মাজহারুল ইসলাম দুই আসামির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি ও সাক্ষ্য নিয়ে ২০২২ সালের ৩১ জুলাই চার্জশিট জমা দেন। বিচারক আটজনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আজ এই রায় ঘোষণা করেছেন।