বরগুনার আমতলীতে তাফালবাড়িয়া নদীসংলগ্ন বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ভাঙন রোধে জিও ব্যাগ ভর্তির কাজে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে। স্থানীয়দের অভিযোগ, জিও ব্যাগ ভর্তিতে বালুর সঙ্গে পরিমাণমতো সিমেন্ট দেওয়া হচ্ছে না। এ কাজের ঠিকাদার পটুয়াখালী জেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক ও মরিচবুনিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান টিটু। ঘটনাটি উপজেলার উত্তর সোনাখালী এলাকার।
জানা গেছে, গত ৩০ বছর আমতলী উপজেলার উত্তর সোনাখালী এলাকার তাফালবাড়িয়া নদীসংলগ্ন বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে ভাঙনের ঘটনা ঘটছে। বাঁধ ভেঙে এলাকায় পানি প্রবেশ করায় ওই এলাকার অন্তত ১০ হাজার মানুষকে দুর্ভোগে পড়তে হয়। ২০২২ সালে বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জিও ব্যাগ ফেলে ওই নদীর ভাঙন রোধের চেষ্টা করে। কিন্তু দুই বছরের মাথায় জিও ব্যাগ সরে গিয়ে পুনরায় ভাঙন শুরু হয়।
ভাঙন রোধ ও বাঁধ রক্ষায় বরগুনা পাউবো এ বছরের জুন মাসে উদ্যোগ নেয়। ১২০ মিটার নদীর ভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড এ কাজ দেয় ঠিকাদার মনিরুজ্জামান টিটুকে। প্রাক্কলনে ১ হাজার ৮৯৫টি জিও ব্যাগ ধরা হয়েছে। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ওই জিও ব্যাগ ভর্তিতে ছয় বস্তা বালুর সঙ্গে এক বস্তা সিমেন্ট মেলানোর কথা থাকলেও ঠিকাদার তা মেলাচ্ছেন না। এ ছাড়াও চুক্তি অনুসারে পাইলিং করছেন না ঠিকাদার। পাইলিংয়ে নিম্নমানের ড্রাম সিট ও গাছের গুঁড়ি দেওয়া হচ্ছে। আরও অভিযোগ রয়েছে, ঠিকাদার এর মধ্যে ৪৯৫টি ব্যাগ ভর্তি করেছেন। এর মধ্যে ১৩৮ ব্যাগে কোনো সিমেন্টই দেওয়া হয়নি। অবশিষ্ট ব্যাগে দায়সারা সিমেন্ট দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ঠিকাদার প্রভাব খাটিয়ে ভাঙন স্থানের নদী থেকেই বালু উত্তোলন করছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয়রা সম্প্রতি কাজের অনিয়মের বিষয়ে বরগুনা পানিউবোর কাছে অভিযোগ দেয়। মঙ্গলবার পাউবোর উপবিভাগীয় প্রকৌশলী সুমন সিকদার ও উপসহকারী প্রকৌশলী নাজমুল হাসান পরিদর্শনে এসে কাজ বন্ধ করে দেন।
অভিযুক্ত ঠিকাদার মনিরুজ্জামান টিটু জিও ব্যাগ ভর্তিতে কাজের অনিয়মের কথা স্বীকার করে বলেন, ‘পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ এসে কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন। আমি ঠিকমতো তদারকি করতে পারলে এমন অনিয়ম হতো না।’
বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী নাজমুল হাসান বলেন, অনিয়মের অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থল পরির্দশন শেষে কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী হান্নান প্রধান বলেন, অভিযোগ পেয়ে উপবিভাগীয় প্রকৌশলী এবং উপসহকারী প্রকৌশলী পাঠিয়ে জিও ব্যাগ ভর্তির কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া কাজে যে অনিয়ম রয়েছে, ওইগুলোও ঠিক করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।