গাজীপুরের শ্রীপুরে আনাস খান (৪) নামের এক শিশু নিখোঁজের চার দিন পর বিলে কচুরিপানার ভেতর থেকে লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় এক নারী ও তাঁর স্বামীকে আটক করা হয়েছে। মুক্তিপণের জন্য শিশুটিকে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানিয়েছে পুলিশ।
আনাস উপজেলার রাজাবাড়ি ইউনিয়নের চিনাশুকানিয়া গ্রামের সৌদি আরবপ্রবাসী আল আমিনের ছেলে। সে স্থানীয় চিনাশুকানিয়া দাখিল মাদ্রাসার শিশু শ্রেণির ছাত্র। আজ সোমবার (১০ নভেম্বর) দুপুরে চিনাশুখানিয়া গ্রামের বাঙ্গালপাড়া বিলে তার লাশ পাওয়া যায়।
এ ঘটনায় আটক দুজন হলেন ওই গ্রামের হাসিনা আক্তার (২৮) ও তাঁর স্বামী নজরুল ইসলাম (৩৫)।
থানায় করা সাধারণ ডায়েরি (জিডি) থেকে জানা যায়, গত শুক্রবার (৭ নভেম্বর) চিনাশুখানিয়া গ্রামে নিজ বাড়ি থেকে খেলনা সাইকেল নিয়ে পার্শ্ববর্তী নজরুলের বাড়িতে খেলতে যায় আনাস। সকাল ৯টার দিকে সে বাড়ি ফিরে না আসায় আশপাশে সবাই খোঁজাখুঁজি করেন। এ সময় তার খেলনা সাইকেলটি প্রতিবেশী সাজুর বাড়ি পাওয়া যায়। সাজুকে আনাসের বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে নজরুলের স্ত্রী তাঁর বাড়িতে সাইকেলটি রেখে গেছেন বলে জানান।
নিখোঁজ শিশুর চাচাতো ভাই মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘আমার ভাইকে ওরা মুক্তিপণের জন্য খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে মারছে। ধারালো অস্ত্রের আঘাতে চোখ তুলে ফেলছে। কতই না কষ্ট দিয়েছে। ওদের কী বিচার চাইব।’
গাজীপুর জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসমত আলী জানান, নিখোঁজের পরপরই শিশু আনাসের খোঁজে পুলিশ কাজ শুরু করে। পরে তার মরদেহ বিল থেকে উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় দুজনকে আটক করা হয়েছে। এ বিষয়ে বিস্তারিত পরে জানানো হবে।
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহম্মদ আব্দুল বারিক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘নিখোঁজের ঘটনায় একটি সাধারণ ডায়েরি হয়েছিল। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি শিশুটিকে উদ্ধার করতে। আজ শিশুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় নজরুল ইসলাম ও তাঁর স্ত্রী হাসিনা আক্তারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা জানিয়েছেন, শিশুকে অপহরণের পরপরই বাসায় নিয়ে খুন করেন। এরপর বাসার সেপটিক ট্যাংকে দুদিন লুকিয়ে রাখা হয়। গন্ধ ছড়িয়ে পড়ার ভয়ে পাশের বিলে কচুরিপানার নিচে লুকিয়ে রাখেন। এ বিষয়ে পরবর্তী আইনগত পদক্ষেপ প্রক্রিয়াধীন।’