হোম > বিশ্লেষণ

চীন-যুক্তরাষ্ট্র দ্বৈরথে চ্যাপ্টা ভিয়েতনাম, নতুন মিত্রের খোঁজে হ্যানয়

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­

ট্রাম্প ও সি’র দেশের দ্বৈরথের মাঝে টিকে থাকতে নয়া মিত্রের খোঁজে তো লামের ভিয়েতনাম। ছবি: সংগৃহীত

ডোনাল্ড ট্রাম্প ২ এপ্রিল হোয়াইট হাউসের রোজ গার্ডেনে রিসিপ্রোক্যাল ট্যারিফ বা পাল্টাপাল্টি শুল্কের ঘোষণা করার পর ভিয়েতনামের কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক তো লামই প্রথম এশীয় নেতা হিসেবে তাঁর সঙ্গে প্রথম ফোনে যোগাযোগ করেন। তিনি আমেরিকান পণ্যের ওপর থেকে সমস্ত শুল্ক তুলে নেওয়ার প্রস্তাব দেন। পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্টে ট্রাম্প লামের প্রশংসা করেন।

তবে কয়েক দিন পরই ট্রাম্পের সুর পাল্টে যায়। কারণ, ফোনালাপের কয়েক দিন পর লাম চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিনপিংকে হ্যানয়ে স্বাগত জানান। গত তিন বছরে এটি ছিল সি’র দ্বিতীয় রাষ্ট্রীয় সফর। ট্রাম্প তখন মন্তব্য করেন, চীনা ও ভিয়েতনামের নেতারা ‘কীভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে বিপদে ফেলা যায়’ তা নিয়ে আলোচনা করতেই একত্র হয়েছেন।

ভূ-রাজনীতির বর্তমান পরিস্থিতিতে ভিয়েতনাম অন্য দেশগুলোর মতো খুব একটা জড়িয়ে পড়েনি। দেশটি অনেকগুলো সরবরাহ শৃঙ্খলে আমেরিকা ও চীনের মাঝামাঝি অবস্থান করছে। এই দুটি দেশই ভিয়েতনামের বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার। চীনের মতো ভিয়েতনামও কমিউনিস্ট একনায়কতান্ত্রিক দেশ, তবে দক্ষিণ চীন সাগরে মাছ ধরা ও খনিজ সম্পদের অধিকার নিয়ে চীনের সঙ্গে এর বিরোধও আছে।

তো লামের পূর্বসূরি নগুয়েন গত বছর মারা যাওয়া ফু ত্রং। তাঁর সময়ে ভিয়েতনাম ‘বাঁশ কূটনীতি’ অনুসরণ করত। অর্থাৎ, বড় শক্তিগুলো চাপ দিলে তারা নুইয়ে পড়লেও ভেঙে যেত না। বড় শক্তিগুলোর চাপ থেকে বের হওয়ার জন্য যখন অন্যান্য নিরপেক্ষ দেশগুলো যখন সংগ্রাম করেছে, ভিয়েতনাম তখন বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই অক্ষত অবস্থায় বেরিয়ে এসেছে। উদাহরণস্বরূপ, রাশিয়া ইউক্রেনে আক্রমণ করলেও ভিয়েতনাম এর নিন্দা জানায়নি। কিন্তু একই ইস্যুতে ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার মতো দেশগুলোর যে তীব্র সমালোচনা হয়েছে, তা ভিয়েতনামের বেলায় হয়নি।

ভিয়েতনাম কীভাবে এটি অর্জন করতে পেরেছে? অস্ট্রেলিয়ার সাবেক রাষ্ট্রদূত অ্যান্ড্রু গোলেডজিনোস্কি বলেন, ‘তারা কিছুটা বিশেষ ক্ষেত্র। কারণ, তাদের প্রচুর নৈতিক পুঁজি আছে।’ লাম সাধারণ সম্পাদক হওয়ার পর থেকে বাণিজ্য, প্রতিরক্ষা ও কূটনৈতিক সম্পর্ক তৈরিতে জোর দিয়েছেন। তিনি গত বছরের আগস্ট থেকে এখন পর্যন্ত ১৩টি দেশ সফর করেছেন।

এই বিশ্বভ্রমণের মাধ্যমে লাম কী অর্জন করতে চান? অগ্রাধিকার হলো—আমেরিকা ও চীনের ওপর ভিয়েতনামের নির্ভরতা কমানো। ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ অর্থনৈতিক সহযোগিতা, যার সঙ্গে তাদের এরই মধ্যে একটি মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি রয়েছে। এই চুক্তি আমেরিকায় রপ্তানি কমে যাওয়াকে পুষিয়ে দিতে সাহায্য করবে। রাশিয়া হ্যানয়কে সস্তা পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরিতে সাহায্য করতে পারে। দক্ষিণ কোরিয়া ভিয়েতনামে অন্যতম বড় বিনিয়োগকারী। তারাও সাশ্রয়ী মূল্যের অস্ত্র সরবরাহ করতে পারে।

লাম অন্যান্য মাঝারি শক্তির দিকেও নজর দিচ্ছেন। যেমন ট্রান্স-প্যাসিফিক পার্টনারশিপের মতো মুক্ত-বাণিজ্য জোটভুক্ত দেশগুলো অথবা কম উন্মুক্ত অর্থনৈতিক জোট আসিয়ান এর অন্যতম উদাহরণ। সিঙ্গাপুরের থিংক-ট্যাংক আইএসইএএস-ইউসুফ ইসহাক ইনস্টিটিউটের নগুয়েন খ্যাক গিয়াং বলেন, ‘ভিয়েতনাম এই (আসিয়ান) গোষ্ঠীর মোটামুটি নিষ্ক্রিয় সদস্য ছিল।’ এই অবস্থায় লাম কি ভিয়েতনামের স্বার্থে আসিয়ানকে আরও উদারীকরণের চেষ্টা করবেন? যদিও ১৯৯০-এর দশকের শেষের দিকে আসিয়ান একটি মুক্ত বাণিজ্য এলাকা তৈরি করলেও জোটের অ-শুল্ক বাধাগুলো দূর করতে খুব কমই কাজ করেছে।

‘ভেনেজুয়েলা সংকট’ কীভাবে আন্তর্জাতিক সংঘাতের রূপ নিচ্ছে

ভেনেজুয়েলার তেল আমাদের সম্পদ—ট্রাম্প প্রশাসনের এই দাবি কি যৌক্তিক

চীন চাইলে এক দিনেই ইউক্রেন যুদ্ধ থামাতে পারে, কিন্তু কীভাবে

‘ডেথ সেলে’ ইমরান খান—ক্রিকেট বিশ্বের নীরবতা নিয়ে প্রশ্ন

ইরান ও ইসরায়েলে সমানতালে চলছে যুদ্ধের প্রস্তুতি

পাকিস্তানকে এফ-১৬ আধুনিকীকরণের প্যাকেজ, ভারতকে কী বার্তা দিতে চান ট্রাম্প

ডার্ক ফ্লিট: নিষেধাজ্ঞা এড়িয়ে যেভাবে চলে ইরান ও ভেনেজুয়েলার তেল পাচার

এআই চাকরি কেড়ে নিচ্ছে আমেরিকায়, কিন্তু নিয়োগ বাড়াচ্ছে ভারতে—কীভাবে

যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নিরাপত্তা কৌশল এশিয়ার জন্য চ্যালেঞ্জ না সম্ভাবনা

শত বছর আগে জাপানের কাছে হারের বদলা চান সি চিন পিং!