হোম > নারী

জীবন যেমন

শওকত আরার মানবিক ভুবন

মুহাম্মদ শফিকুর রহমান 

শওকত আরা খন্দকার ওরফে ঝর্ণা। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর শেষ করে ঘর-সংসার সামলে মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন দীর্ঘদিন ধরে। স্বামী এ টি এম খালেকুজ্জামান আর একমাত্র মেয়েকে নিয়ে নারায়ণগঞ্জ শহরের জামতলা এলাকায় থাকেন শওকত আরা।

বাবার দেখাদেখি

শুরুটা ছিল বাবাকে দেখে দেখে। তিনি মসজিদ, মাদ্রাসা নির্মাণ, মৃতদের দাফনের কাজ, মাদ্রাসার এতিম শিশুদের খাওয়ানো, দুস্থদের ঘর নির্মাণসহ নানান কাজ করতেন। এসব দেখেই বড় হয়েছেন শওকত আরা। বাবার মতো তিনিও এখন এসব কাজ করছেন। কোনো নারীকে মোবাইল ফোন কিনে দেওয়া কিংবা তালাকপ্রাপ্ত নারীর চিকিৎসায় হাজার হাজার টাকা ব্যয় করে সুস্থ করে তোলা, দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী মাদ্রাসায় ৬ সেট ব্রেইল কোরআন বিতরণ—এ সবকিছুই রয়েছে তাঁর কাজের তালিকায়।

ঢাকা, গাজীপুর, বিক্রমপুর, চট্টগ্রাম, ফেনী, কুমিল্লা জেলার বিভিন্ন মাদ্রাসায় ফলদ ও বনজ গাছের চারা রোপণ করেছেন তিনি। শীতার্তদের মধ্যে গরম কাপড় বিতরণ, মাদ্রাসায় প্রতি মাসে খাবার বিতরণও তাঁর নিয়মিত কাজ। তিনটি দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী মাদ্রাসায় ওয়াশিং মেশিন, দোতলা খাট, ডিপ ও নরমাল ফ্রিজ এবং প্রতিবন্ধী শিশুদের হুইলচেয়ার কিনে দিয়েছেন। এসবের বাইরেও অনেক কাজ করে চলেছেন শওকত আরা।

শওকত আরা শুধু যে নিজ সম্প্রদায়ের মানুষের জন্যই কাজ করেন, তা কিন্তু নয়। নারায়ণগঞ্জের হিন্দু সম্প্রদায়ের একটি মিশনের দাতব্য চিকিৎসালয়ে নিয়মিত অর্থ দিয়ে থাকেন তিনি। শওকত আরা মনে করেন, মানবিক কাজে ধর্ম-বর্ণের বিভেদ থাকা কোনোভাবেই উচিত নয়।

নিজের সংগঠন নেই

শওকত আরার নিজের কোনো সংগঠন নেই। ব্যক্তিগতভাবেই তিনি কাজ করেন।

তবে কখনো কখনো বিভিন্ন সংগঠনের হয়েও কাজ করেন। সেগুলোর মধ্যে আছে ভিউ ফাউন্ডেশন ঢাকা, স্মাইল, মদিনাতুল উলূম দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী এতিমখানা ও মাদ্রাসা, রংমেলা ইত্যাদি।

এসব কাজে নিজের হাতখরচের টাকা, বাবার রেখে যাওয়া জমানো টাকার লভ্যাংশ, ঘর ভাড়ার টাকা ব্যয় করেন শওকত আরা। এ ছাড়া প্রবাসী বন্ধুরাও তাঁকে অর্থসহায়তা দিয়ে থাকেন।

তৃপ্তির কাজ

একবার প্রতিবন্ধী শিশুদের নিয়ে পার্কে গিয়েছিলেন শওকত আরা। যে শিশুরা কোনো দিন পার্কের রাইডে ওঠেনি, তিনি তাদের বিভিন্ন রাইডে চড়ার ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন। শিশুদের সেই আনন্দ আজও চোখে ও মনে লেগে আছে তাঁর।

এবং পুরস্কার

শওকত আরার ঝুলিতে বেশ কিছু পুরস্কার আছে। যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের শ্রেষ্ঠ যুব সংগঠক, ২০২২ সালের জাতীয় যুব দিবস পুরস্কার, বঙ্গবন্ধু স্মৃতি সম্মাননা স্মারক ২০২৩, তেরেসা শাইনিং পারসোনালিটি অ্যাওয়ার্ড ২০২৩, নারী উদ্যোক্তা ও সমাজ সেবক সম্মাননা স্মারক, নারী দিবস ২০২৩। এর বাইরেও বিভিন্ন পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।

ভবিষ্যতে দেশের প্রতিটি জেলা ও থানার যুবসমাজের জন্য আরওে কাজ করতে চান শওকত আরা। পাশাপাশি দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য কর্মসংস্থান এবং উন্নত জীবনযাপনের ব্যবস্থা করার একান্ত ইচ্ছা তাঁর।

প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য মন্ত্রণালয় ও সংসদে আসনের দাবি

জটিল প্রক্রিয়ার কারণে অনলাইনে হয়রানির শিকার হয়েও অভিযোগ করতে পারেন না নারীরা

ঐতিহ্য পুনরুদ্ধারে শাহেলীর লড়াই

১১ মাসে নির্যাতনের শিকার ২,৫৪৯ নারী ও কন্যাশিশু

শুধু চিঠিতে তালাক লিখে দিলেই তালাক সম্পূর্ণ হয় না

আন্তর্জাতিক নারী: দেয়ালবন্দী জীবনেও প্রতিরোধের প্রদীপ

শান্তির পক্ষে স্যালি লিলিয়েন্থাল

রোকেয়াকে ‘মুরতাদ’ বলা রাবি শিক্ষকের অপসারণ চায় মহিলা পরিষদ

ল্যানসেটের গবেষণা: শৈশবে ১০০ কোটি মানুষ যৌন সহিংসতার শিকার

মোবাইল ফোনের ক্যামেরায় জীবনের গল্প