১৯০২ সালের ৮ নভেম্বর। গ্রামোফোন কোম্পানির ফ্রেড গেইসবার্গ গওহর জানের কণ্ঠে রেকর্ড করলেন উপমহাদেশের প্রথম কলের গান। সূচিত হলো ভারতীয় সংগীতের এক নতুন অধ্যায়।
গওহর জানকে বলা হতো ভারতীয় ধ্রুপদী সংগীতের সম্রাজ্ঞী। ১৮৭৩ সালের ২৬ জুন ভারতের উত্তর প্রদেশের আজমগড়ে জন্ম নেওয়া গওহর জানের নাম ছিল এলিন অ্যাঞ্জেলিনা ইয়োয়ার্ড। তাঁর মা ভিক্টোরিয়া হেমিংস আর বাবা রবার্ট উইলিয়াম ইয়োয়ার্ড। ভিক্টোরিয়ার মা, অর্থাৎ গওহর জানের নানি রুকমিণী জন্মসূত্রে ভারতীয় ছিলেন। নানা ছিলেন একজন ব্রিটিশ।
ইসলাম ধর্ম গ্রহণের পর ভিক্টোরিয়া নাম বদলে হন মালকাজান আর অ্যাঞ্জেলিনা হন গওহর জান। মালকাজান ভালো গান গাওয়ার পাশাপাশি উর্দু কবিতাও লিখতেন। গওহর জানের সংগীতের হাতেখড়ি তাঁর মায়ের কাছেই। তিনি তালিম নেন সেই সময়কার বিখ্যাত ওস্তাদের কাছে। চার বছর বয়স পর্যন্ত বারাণসীতে থাকার পরে তাঁরা চলে আসেন কলকাতায়। গওহর হিন্দি, বাংলা, উর্দু, আরবি, ফারসি, ইংরেজি, সংস্কৃত ইত্যাদি ভাষায় গাইতে পারতেন। দারভাঙার মহারাজা লক্ষ্মেশ্বর সিংহের দরবারে গান গাওয়ার পর থেকেই গওহর জানের নাম ছড়িয়ে পড়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে।
গওহর জানের রেকর্ডে লেখা থাকত ফার্স্ট ডান্সিং গার্ল। তাঁর গানের রেকর্ডের শেষে শোনা যেত ‘মাই নেম ইজ গওহর জান’। ১৯০২ থেকে চল্লিশের দশক পর্যন্ত অপ্রতিদ্বন্দ্বী এই শিল্পী সেই যুগে প্রতিটি রেকর্ডিং সেশনের জন্য সম্মানী নিতেন ৩ হাজার টাকা করে।