হোম > নারী

আমার মা

সঙ্গীতা ইমাম

মাকে নিয়ে প্রতিবছর মে মাসের দ্বিতীয় রোববার ‘বিশ্ব মা দিবস’ পালন করা হয়। মায়ের প্রতি সম্মান ও ভালোবাসা প্রকাশের জন্য দিনটি পালন করা হয়। ১৯১৪ সালের ৮ মে মার্কিন কংগ্রেস মে মাসের দ্বিতীয় রোববারকে ‘মা’ দিবস ঘোষণা করে। সেদিন থেকে শুরু হয় মা দিবসের যাত্রা। এরই ধারাবাহিকতায় দিবসটি এখন বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশে মর্যাদার সঙ্গে পালিত হচ্ছে। মা দিবসকে কেন্দ্র করে মায়ের গল্প বলেছেন সঙ্গীতা ইমাম

হলি ফ্যামিলি হাসপাতালে গোলাপি কাঁথায় মোড়ানো শিশুটিকে দেখে তার মায়ের প্রথম মনে হয়েছিল ‘কুমড়োপটাশ’ শব্দটি। শিশুটি গোলগাল আর লাল টসটসে! এই সন্তান মায়ের পরম আদরের প্রথম সন্তান। সেই শিশুর মা একজন সংস্কৃতিকর্মী, যাঁকে মানুষ নৃত্যসারথি লায়লা হাসান নামে চেনে। আর বলাই বাহুল্য, সন্তানটি আমি।

একান্নবর্তী পরিবারের একমাত্র শিশু হিসেবে বড় হতে থাকি আদর-যত্নে। আমার মা তখন ব্যস্ত নৃত্যশিল্পী; মঞ্চ, বেতার ও টেলিভিশনে অভিনয়ও করেন। তারপরও সন্তানের প্রতিটি কাজ নিজ হাতে করেছেন। সব গুছিয়ে, দাদি ও আমাকে সঙ্গে নিয়ে আম্মু রিহার্সালে বা অনুষ্ঠানে যেতেন, এমনও শুনেছি।

আমার আম্মুর প্রথম গুণ হলো মানুষকে ভালোবাসতে পারা। কারও অসুখ বা কেউ হাসপাতালে ভর্তি শুনলে আম্মু দেখতে যাবেন না এমন হয় না। কেউ সন্তানসম্ভবা, সে কী খেতে ভালোবাসে, সেটিও ঘরে তৈরি করে নিয়ে যাওয়া চাই।

আমরা ভাইবোন ছোটবেলা থেকে সবকিছুই আম্মুর কাছে চেয়েছি এবং পেয়েছি। এমনভাবে তাঁরা দুজনে মিলে সংসারটা চালিয়েছেন যে আমরা বুঝতেই পারিনি কখন সংসারে অর্থকষ্ট আর কখনই-বা প্রাচুর্য ছিল। কত মানুষ আমাদের বাড়িতে আসতেন তাঁদের দুরবস্থা নিয়ে। কেউ খালি হাতে ফিরতেন না। এমন পরিবেশ আমাদের ভাইবোনদের মনস্তত্ত্বকে প্রভাবিত করেছিল বৈকি।

আমার নাচের প্রথম গুরু আমার মা। নাচ শেখা মানে যে শুধু পরিবেশনা, তা নয়। একটি শিল্পমাধ্যমকে আত্মস্থ করে পূর্ণাঙ্গ শিল্পী হয়ে ওঠা মানে মননে-বোধে, যাপনের সামগ্রিকতায় তাকে ধারণ করা। এই পাঠ আম্মু তাঁর সব শিক্ষার্থীকে আজও দেন।

এই যে ঘরে-বাইরে এত ব্যস্ততা তাঁর, এর ফাঁকেও বই পড়া এবং লেখালেখির কাজ তাঁকে করতে দেখেছি নিবিষ্ট মনে। আম্মুর এই অভ্যাস পারিবারিকই বলা চলে। তাই নানান কাজের ফাঁকেও আম্মুকে দেখেছি ডায়েরি লিখতে, বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সংবাদপত্রে কলাম লিখতে। নৃত্য বিষয়ে তিনি বইও লিখেছেন। বাংলাদেশের নৃত্য আন্দোলনেও তাঁর ভূমিকা সন্তান হিসেবে আমাকে গর্বিত করে। নেতৃত্ব দিয়েছেন বাংলাদেশ নৃত্যশিল্পী সংস্থার। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নৃত্যকলা বিভাগ প্রতিষ্ঠায়ও পালন করেছেন অগ্রণী ভূমিকা। তিনি শিশু সংগঠন খেলাঘরের নেতৃত্বে ছিলেন। সেখানে শিশুদের যেভাবে মাতৃভাষা শিক্ষার ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন, বাড়িতেও তা প্রতিষ্ঠা করেছেন।

মাকে ভালোবাসি। মাকে ভালোবাসতে পারাটাই জীবনের শ্রেষ্ঠ অর্জন।

বড়দিনের বিখ্যাত গানগুলোর নেপথ্যের নারীরা

উদ্যোক্তা মেলা: সংখ্যা কমলেও আশাবাদী নারী উদ্যোক্তারা

রোজের ফুটে ওঠার গল্প

আন্তর্জাতিক নারী: অন্ধকার আকাশ যাঁর ল্যাবরেটরি

অধিকারের পক্ষে মার্থার লড়াই

‘মেয়েদের ফুটবলে বাধা দিতে খোঁড়া হয়েছিল মাঠ’

প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য মন্ত্রণালয় ও সংসদে আসনের দাবি

জটিল প্রক্রিয়ার কারণে অনলাইনে হয়রানির শিকার হয়েও অভিযোগ করতে পারেন না নারীরা

ঐতিহ্য পুনরুদ্ধারে শাহেলীর লড়াই

১১ মাসে নির্যাতনের শিকার ২,৫৪৯ নারী ও কন্যাশিশু