হোম > ল–র–ব–য–হ

এক হ্রদে এত্তো রং!

ইশতিয়াক হাসান

শীত আর বসন্তে কানাডার ব্রিটিশ কলম্বিয়া অঙ্গরাজ্যের ওকানাগান উপত্যকার হ্রদটিকে সাধারণ আর দশটা জালাধারের মতোই মনে হয়। তবে গ্রীষ্মে বেশির ভাগ পানি যখন জলীয়বাষ্প হয়ে উড়ে যেতে থাকে, তখন শত শত নোনা পানির বর্ণিল ছোট ডোবা পড়ে থাকে। এগুলোর কোনোটা হলুদ, কোনোটা সবুজ কিংবা নীল। ওপর থেকে দেখলে মনে হয় গোটা লেকটিই নানা রঙের ফোঁটা বা ফুটকিতে ভরা। অনেকে একে তাই আদর করে ডাকেন ‘স্পটেড লেক’ নামে। মোটামুটি আধা মাইল লম্বা হ্রদটা চওড়ায় গোটা পাঁচেক ফুটবল মাঠের সমান।

কোনো ধরনের নদী বা খালের পানি থেকে আশ্চর্য এই লেকের জন্ম হয়নি। আশপাশের পাহাড় থেকে পানি এসে জমে এখানে। যখন বরফ গলে পানি নিচে নামতে শুরু করে, তখন সঙ্গে নিয়ে আসে খনিজ আর লবণ। যেগুলো শত শত বছর ধরে সঞ্চিত হয়েছে এখানে। লেকের পানি বাষ্প হয়ে উড়ে যাওয়ার পরই আসল চেহারায় দেখা দেয় ছোট ছোট ডোবা খুদে লেকগুলো। অর্থাৎ, এক লেকের ভেতরে এখানে পেয়ে যাবেন অনেক খুদে লেক।

লেকটি বর্ণিল হওয়ার পেছনে যেসব খনিজ ভূমিকা রাখে, এর মধ্যে আছে ক্যালসিয়াম, সোডিয়াম সালফেট ও ম্যাগনেসিয়াম সালফেট। এমনকি অল্প পরিমাণ রুপা ও টাইটেনিয়ামও জমা হয়। আর কোন ডোবার রং কেমন হবে তা নির্ভর করে খনিজ ও লবণের ঘনত্বের ওপর। শুনে অবাক হবেন, এখানে আলাদা আলাদা প্রায় ৪০০ ডোবা বা ছোট হ্রদ আছে। এগুলোর আকার-আকৃতিও আলাদা। 

শত শত বছর ধরে এই চিত্রিত হ্রদ ওকানাগান আদিবাসীদের কাছে পবিত্র একটি জায়গা হিসেবে পরিচিত। তাদের বিশ্বাস, এ ধরনের আলাদা প্রতিটি ছোট ডোবা বা জলাধারের স্বাতন্ত্র্য ঔষধি গুণ ও রোগ নির্ণয়ের ক্ষমতা আছে। এই লেক অবশ্য তাদের কাছে পরিচিত ক্লিলুক নামে।

একসময় এই হ্রদ ও আশপাশের এলাকা ব্যক্তিগত মালিকানাধীন ছিল। ২০০১ সালে ওকানগান ন্যাশনাল অ্যালায়েন্স চিফস এক্সিকিউটিভ কাউন্সিল লেক ও আশপাশের ২২ হেক্টর জমি কিনে নেয়। 

যদ্দুর জানা যায়, প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় হ্রদের খনিজ উপাদানগুলো গোলাবারুদ তৈরিতে ব্যবহার করা হতো। ব্রিটিশ কলম্বিয়া ভিজিটর সেন্টার জানাচ্ছে, মাঝখানে লবণচাষিরা এই এলাকা থেকে দিনে এক টনের মতো লবণ আহরণ করতেন। এর আগে হ্রদে বর্ণবৈচিত্র্য আরও বেশি ছিল। পর্যটকদের কাছেও ধরা দিত আরও মনোহর রূপে। অবশ্য এখন এই হ্রদ থেকে লবণ আহরণের সুযোগ নেই। 

তবে যেসব পর্যটক বর্ণিল এই হ্রদ দেখতে চান, খুব কাছে যাওয়াটা মুশকিল। জায়গাটিকে সংরক্ষণের জন্য একটি বেড়া দেওয়া হয়েছে চারপাশে, পাশাপাশি বোর্ড ও নানা ধরনের চিহ্ন দিয়ে জানান দেওয়া হয়েছে এটি সাংস্কৃতিক ও পরিবেশগত দিক থেকে খুব সংবেদনশীল এলাকা। 

জায়গাটির অবস্থান যুক্তরাষ্ট্রের সীমানা থেকে বেশি দূরে নয়, ভ্যাংকুবার থেকে দূরত্ব কেবল ৬০ কিলোমিটার। জুলাইয়ের শেষে জায়গাটিতে ভ্রমণে গেলে সেরা চেহারায় পাবেন একে। যদি লেকের ভেতরের পথ ধরে হেঁটে যাওয়ার অনুমতি জোগাড় করতে না পারেন, তবে ওসিয়ুসের পশ্চিমের হাইওয়ে ধরে গাড়ি নিয়ে যেতে পারেন। গাড়িটা পথের ধারে দাঁড় করিয়ে তাকালেই বর্ণিল হ্রদগুলো নজরে চলে আসবে। যতক্ষণ ইচ্ছা এর রূপ উপভোগ করতে পারবেন। আবার ওই এলাকায় চিত্রিত হ্রদ দেখতে দেখতে হেলিকপ্টার ট্যুরেরও ব্যবস্থা আছে।

সূত্র: নিউইয়র্ক টাইমস, ট্রি হাগার ডট কম

 

কখনো চাকরিই করেননি, সেই প্রতিষ্ঠান থেকে পেলেন বরখাস্তের চিঠি

চীনের গ্রামে লিভ টুগেদার ও গর্ভধারণ নিয়ে ‘অদ্ভুত’ আইন জারি, সমালোচনার ঝড়

৩০ বছর পর প্রথম শিশুর জন্মে খুশিতে মাতোয়ারা ইতালির এক গ্রাম

জরায়ুর বাইরে বেড়ে উঠল শিশু, অলৌকিক জন্ম দেখল ক্যালিফোর্নিয়া

অন্য নারীর ছবিতে লাইক দেওয়া বৈবাহিক বিশ্বাসভঙ্গের শামিল: তুরস্কের আদালত

বাগ্দত্তা ‘বেশি খায়’, বিয়ে ভেঙে দিয়ে ক্ষতিপূরণ চাইলেন প্রেমিক

মদের দোকানে তাণ্ডব, বাথরুমে পাওয়া গেল মাতাল র‍্যাকুন

ভারতে প্রায় কোটি টাকার এক হিরা খুঁজে পেলেন ‘শৈশবের দুই বন্ধু’

লিংকডইনে গার্লফ্রেন্ড চেয়ে বিজ্ঞাপন দেওয়ার পর যা ঘটল

অফিসে ঘন ঘন টয়লেটে যাওয়ায় চাকরি হারালেন প্রকৌশলী