বাঙালি গোটা জীবনে যত খাবার খায়, এর অর্ধেকই ডিম। বাজারের অন্যান্য খাবারের চেয়ে ডিমের দাম তুলনামূলক কম হওয়ায় তিনবেলার খাবারেই ডিমের দেখা মেলে। কখনো ডিম হাজির হয় ভাজি হয়ে। কখনো-বা তরকারি হয়ে। আর কখনোবা সিদ্ধ হয়ে। শুধু কি এগুলোতেই সীমাবদ্ধ? না, আরও আছে। ডিমের ভর্তা, কাটলেট, মামলেট, চচ্চড়ি থেকে শুরু করে কদিন পর হয়তো ডিমের আচারের রেসিপিও আসবে। ভালোবাসার এই ডিমকে কেউ কেউ আবার আন্ডা নামেও ডাকেন। ভালোবাসা বলে কথা।
ব্যাচেলর জীবনে রান্নাবান্নার ঝক্কিঝামেলা এড়াতে ডিম বেছে নেন অনেকেই। আবার মধ্যবিত্তের বড় একটা অংশ প্রোটিনের চাহিদা মেটাতে আস্থা রাখেন ডিমে। শুধু কি খাবার হিসেবেই ডিমের কদর? না, ডিমের আরও কদর আছে। পরীক্ষার ফল খারাপ হলে তিরস্কার হিসেবে বলা হয়, ‘তুমি পরীক্ষায় ডিম পেয়েছ।’ অনেক সময় ডিম আবার প্রতিবাদের ভাষা। দুষ্কৃতকারীদের পচা ডিম ছুড়ে মারার প্রবণতা বেশ পুরোনো।
তবে হালে এসে ডিমের আরেক ব্যবহার দেখা যাচ্ছে খুব। আর সেটা হচ্ছে বন্ধু-বান্ধবের জন্মদিনে হাত-পা বেঁধে কাচা ডিম দিয়ে গোসল করানো। সোশ্যাল মিডিয়ায় এ ধরনের বেশ কিছু ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। কাঁচা ডিম মাথায় ফাটাতে গিয়ে ব্যথা পেয়ে আহত হওয়ার খবরও এসেছে। তবুও থামেনি এ সংস্কৃতি। আর এই ডিম ফাটিয়ে ডিমের অপমান, ডিমের অপচয় নিয়েই এবারের ডিম দিবসে এক বিবৃতিতে হুঁশিয়ারি দিয়েছে ‘ডিম ঐক্যজোট’।
ডিম দিবসে হাঁস-মুরগি-কোয়েলসহ যাবতীয় সকল ডিমের সংগঠন ডিম ঐক্যজোট এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, সকাল-বিকেল ডিম খাও, তাতে কোনো আপত্তি নেই। তিরস্কার কিংবা প্রতিবাদের ভাষা হিসেবে আমাকে ব্যবহার কর, কুসুমে (অন্তরে) গিয়ে তার ঘা লাগলেও এত দিনে তাও মেনে নিয়েছি। কিন্তু আমাকে এভাবে অপচয়ের কাজে ব্যবহার করা যাবে না। এভাবে চলতে থাকলে আমিও একদিন আমার দাম বাড়িয়ে দেব। তখন তোমাদের না খেয়ে থাকতে হবে। এই বছর ভালোভাবে জানালাম। সামনে বছর অ্যাকশনে যাব। ডিমের অপমান সইব না, সইব না।
ডিম ঐক্যজোট বিবৃতিতে আরও জানিয়েছে, ‘কেন, কেন, কেন? শুধু আমার সঙ্গেই কেন? অপমান ও অপচয় শুধু আমার সঙ্গেই। পারলে গরু আর খাসির মাংসের জুস বানিয়ে এমনটা করে দেখাও। দেখি তোমাদের পকেট কত ভারী।