সাল ১৯৪৮, অস্ট্রেলিয়ার অ্যাডিলেডের সমারটন সৈকতে কেতাদুরস্ত পোশাক পরিহিত এক ব্যক্তির মৃতদেহ পাওয়া যায়। একটি আধ খাওয়া সিগারেট তাঁর কলারের কাছে পড়ে ছিল এবং পকেটে ছিল ফারসি কবিতার একটি লাইন। তবে ছিল না কোনো পরিচয়পত্র।
‘সমারটন ম্যান’ নামে পরিচিত ওই ব্যক্তিকে গুপ্তচর মনে করা হয়েছিল। কিন্তু ৭৩ বছরেরও বেশি সময় পর, একজন গবেষক রহস্যের সমাধান করেছেন। ওই গবেষকের দাবি, সমারটন ম্যান আদতে কার্ল ওয়েব। তিনি রাশিয়ান এজেন্ট ছিলেন না, বরং মেলবোর্নে জন্ম নেওয়া একজন প্রকৌশলী ছিলেন।
বিবিসির প্রতিবেদনে জানা যায়, ১৯৪৮ সালের ১ ডিসেম্বর অ্যাডিলেডের সমারটন সৈকতে পড়ে থাকা ওই ব্যক্তির বয়স ৪০-৫০ এর মধ্যে বলে মনে হয়েছিল। তাঁর পরনে ছিল স্যুট-টাই। পকেটে ছিল বাস ও ট্রেনের টিকিট, চুইংগাম, কিছু ম্যাচ, দুটি চিরুনি এবং এক প্যাকেট সিগারেট। তাঁর কাছে কোনো মানিব্যাগ, নগদ অর্থ এবং পরিচয়পত্র ছিল না। ফরেনসিক পরীক্ষকেরা সন্দেহ করেছিলেন যে, তাঁকে বিষ প্রয়োগ করা হয়েছিল।
তদন্তকারীরা কোনোভাবেই বুঝতে পারেননি তিনি কে। পরে ওই ব্যক্তির আঙুলের ছাপ সারা বিশ্বে পাঠানো হয়েছিল, কিন্তু কেউ তাঁকে শনাক্ত করতে পারেনি। অবশেষে ১৯৪৯ সালে অ্যাডিলেডে সমাধিস্থ করা হয় তাঁকে। সমাধিতে লেখা হয়, ‘এখানে সেই অজানা লোকটি রয়েছে যাকে সমারটন বিচে পাওয়া গিয়েছিল।’
৪ হাজার নাম থেকে তাঁরা দুজন একটি নাম বাছাই করেন। আর সেই নামটি—কার্ল ওয়েব। এর পর তাঁর জীবিত আত্মীয়দের সন্ধান করে, তাদের ডিএনএ ব্যবহারের মাধ্যমে পরিচয় নিশ্চিত করেন।
অধ্যাপক ডেরেক অ্যাবটের মতে, কার্ল ওয়েব মেলবোর্নের একটি শহরে ১৯০৫ সালে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তিনি ডরোথি রবার্টসন নামের এক নারীকে বিয়ে করেছিলেন। স্ত্রীর থেকে আলাদা হয়েছিলেন ওয়েব। আর এ কারণেই সম্ভবত তিনি অ্যাডিলেডে আসেন।
মার্কিন ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ কলিন ফিটজপ্যাট্রিক বলেন, কার্ল ওয়েবের মৃত্যুর রহস্য সমাধানে সাহায্য করতে চান তিনি।