হোম > ল–র–ব–য–হ

পুরোনো বাড়িতে অদৃশ্য কারও পায়ের শব্দ, শোনা যায় রহস্যময় কণ্ঠ

ইশতিয়াক হাসান

অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসের শহর জুনিতে আছে মন্টি ক্রিস্টো হোমস্টেড নামের এক বাড়ি। অনেকেই একে বিবেচনা করেন দেশটির সবচেয়ে ভুতুড়ে বাড়িগুলোর একটি হিসেবে। অদৃশ্য কারও পায়ের শব্দ, শরীরে শীতল কোনো হাতের ছোঁয়া, শূন্য থেকে ভেসে আসা রহস্যময় কণ্ঠ—এমনই নানা অতিপ্রাকৃত ঘটনার খবর শোনা যায় বাড়িটিকে ঘিরে।

মন্টি ক্রিস্টো নামের বাড়িটি পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয় ৫২ বছর আগে, ১৯৭১ সালে। তারপর থেকেই এখানে ঘটা ভুতুড়ে সব ঘটনার টানে জায়গাটিতে হাজির হচ্ছেন রোমাঞ্চপ্রেমী মানুষ। গড়ে ফি বছর ১০ হাজার মানুষের পা পড়ে বাড়িটিতে।

বাড়ির ৯২ বছর বয়স্ক মালিক অলিভ রায়ান কাঁপা কাঁপা কণ্ঠে কৌতূহলী জনতাকে শুনিয়ে যান তাঁর নানা অদ্ভুতুড়ে অভিজ্ঞতার কথা, ‘আমার কাঁধে অদৃশ্য কেউ হাত রাখে, আবার শূন্য থেকে কেউ ডেকে ওঠে কখনো আমার নাম ধরে। বারান্দায় পদশব্দ শুনে গিয়ে দেখি কেউ নেই সেখানে।’

আরও নানা ধরনের অভিজ্ঞতার কথা বলেন এখানে আসা দর্শনার্থীরা। একজন যেমন মাথায় কিছুর আঘাত পান, যদিও তাঁর আশপাশে কেউ ছিল না। আবার কখনো শ্বাসকষ্ট ছিল না এমন একটি মেয়েকে এখানে বারবার শ্বাসকষ্টের সমস্যায় ভুগতে দেখা যায়। বিভিন্ন প্রাণী, ছায়ামূর্তির উপস্থিতির ঘটনাও বলেন পর্যটকদের কেউ কেউ। 

বাড়িটির প্রথম মালিক ক্রিস্টোফার ও অলিভার ক্রউলি মারা যান ১৯১০ ও ১৯৩৩ সালে। অলিভ রায়ানের দাবি, এখনো বাড়িটিতে ঘোরাফেরা করে তাঁদের আত্মা। 

অলিভ রায়ান জানান, বাড়িটিতে পা রাখার দুই দিন পর প্রথম অস্বাভাবিক কিছু নজর কাড়ে তাঁর। গাড়িতে চেপে আসছিলেন, হঠাৎ দেখলেন বাড়ির ভেতর উজ্জ্বল আলো ছড়িয়ে পড়েছে। অথচ যখনকার ঘটনা তখন বাড়িতে কেরোসিনের বাতিই ছিল একমাত্র সম্বল। লম্বা ড্রাইভওয়েতে যখন পৌঁছাল গাড়ি, ততক্ষণে আলো অদৃশ্য হয়েছে, গোটা বাড়ি ঢাকা পড়েছে অন্ধকারে। স্বামী র‍্যাগ ও মেয়েদেরসহ যখন ১৯৬৩ সালে বাড়িটিতে থাকা শুরু করেন, তখন বিদ্যুৎ, পানির ব্যবস্থা এমনকি কাচের কোনো জানালাও ছিল না।

‘বাতাস শোঁ-শোঁ শব্দ তুলে সিঁড়ি বেয়ে নেমে আসত, বাদুড়েরা ওড়াউড়ি করত ভেতরে।’ বলেন তিনি, ‘তবে মেয়েরা ভালোই ছিল। প্রচুর মুক্ত বাতাস পায় তারা এখানে।’ 

অলিভ রায়ান জানেন, এখানকার অতিপ্রাকৃত ঘটনার উৎস সম্পর্কে তাঁর কোনো ধারণা নেই। একসময়কার পোশাক নির্মাতা এই নারী এখনো বাড়িটিতে বাস করেন। তাঁর দাবি, চারপাশে ঘুরে বেড়ানো আত্মাদের থেকে কখনো বিপদ আসেনি। তাঁর ছেলে লরেন্স যিনি বাড়িটিতেই থাকেন, তিনি জানান, এখানে বেড়ে ওঠা সাধারণই ছিল। 

‘একে ভুতুড়ে বাড়ি বলে ভাবা কঠিন ছিল, কারণ লোকেরা ওই সময় এসব বিষয়ে বেশি কথা বলত না।’ বলেন লরেন্স, ‘বেশির ভাগ বাচ্চা বেড়ে ওঠার সময় ভাবে, তাদের খাটের নিচে কিংবা কাপবোর্ডের ভেতরে ভয়ংকর একটা কিছু আছে। আমি জানতাম না আসলেই এমন একটা কিছু আমার খাটের নিচে সত্যি ছিল।’ 

‘তবে আমার অনেক সময়ই মনে হয়েছে আড়াল থেকে কেউ দেখছে আমাকে।’ যোগ করেন তিনি, ‘আমাকে কোনো ধরনের হুমকি দেওয়া হয়নি। আমাকে বিভিন্ন ঘটনা ভয় পাওয়াতো, তবে সেটা ওই বয়সের বাচ্চারা নিজে থেকেই নিজেদের কামরায় যতটা ভয় পেত, এর চেয়ে বেশি নয়। 

লরেন্স রায়ানের সঙ্গে তাঁর স্ত্রী সিলভিয়া হেজতেরেনিয়োভার দেখা হয় এই বাড়িতেই। তখন স্লোভাকিয়া থেকে আসার পর মন্টি ক্রিস্টোতে ঘুরতে আসেন তিনি।

হেজতেরেনিয়োভা জানান, এখানে বিভিন্ন অতিপ্রাকৃত অভিজ্ঞতা হয়েছে তাঁর। ‘কেউ আপনাকে স্পর্শ করতে পারে, হালকা চাপড় দিতে পারে কিংবা হাত ধরতে পারে। কখনো আবার অস্বাভাবিক কিছু কণ্ঠ শুনতে পারেন। তবে এটা ভয় পাওয়ার মতো কোনো ব্যাপার নয়।’

লরেন্স রায়ান বলেন, এই বাড়িতে এমন কিছু দুর্ঘটনা ঘটেছে অতীতে, যেগুলোকে নিছক কাকতালীয় বলা মুশকিল। ‘এই বাড়িতেই বহু বছর আগে একজন ন্যানির হাত থেকে পড়ে সিঁড়ি দিয়ে গড়িয়ে পড়ে মারা যায় একটি শিশু। ওই নারী দাবি করেন, শিশুটা লাফ দিয়ে তাঁর হাত থেকে পড়ে যায়। এ ছাড়া আছে এক গৃহ পরিচারিকার আত্মহত্যার ঘটনা। মি. ক্রউলির সঙ্গে যার সম্পর্ক ছিল।’

আবার ঘোড়ার দেখাশোনার দায়িত্বে থাকা একটি ছেলে আগুনে পুড়ে মার যাওয়ার কথাও শোনা যায়। ১৯৬১ সালে গুলিতে এখানকার ওই সময়ের কেয়ারটেকারের মারা যাওয়ার ঘটনাও উল্লেখ করেন কেউ কেউ। আবার মানসিক ভারসাম্যহীন ছেলেকে ৩০ বছরের বেশি বাড়ির আউট হাউসে বেঁধে রেখেছিলেন এক হাউসকিপার। বলা চলে এখানে অস্বাভাবিক মারা যাওয়া মানুষের আত্মাই ঘুরে বেড়ায় বাড়িটিতে আজও।

 
লরেন্স রায়ান জানান, ভুতুড়ে বাড়িটার ভেতরে তোলা কিছু ছবি এর ভেতরে যে আসলেই অতিপ্রাকৃত বিভিন্ন কিছুর উপস্থিতি আছে তা নিশ্চিত করছে।

এক ছবিতে ছায়াময় একটি কাঠামোকে সাদা একটি ঘোড়ার গাড়ির ওপরে গুটিসুটি মেরে থাকতে দেখা যায়। অন্য একটি ছবিতে একটা হাতের উপস্থিতি দেখা যায়। আরেকটি ছবিতে আয়নার মধ্যে একজন আদিবাসী পরিচারিকার আবছা কাঠামো দেখা যায়। এক পর্যটক আবার পুরোনো একটি বেডরুমের ছবি তোলেন, যেখানে এক পাশে একটা ছায়াময় কাঠামোকে ভেসে থাকতে দেখা যায়। তবে ঘটনা হলো, এই ছবিগুলোর সবগুলোই খুব ঝাপসা থাকায় কোনো কারসাজি আছে কি না, সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

‘আমরা অনেক অবিশ্বাসীকে পাই। এদের অনেকেরই এখান থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর আত্মা সম্পর্কে চিন্তাভাবনা বদলে যায়।’ বলেন লরেন্স রায়ান।

যদি কোনো কারণে ভুতুড়ে বাড়িটায় গিয়ে ভয়ের কোনো অভিজ্ঞতা না হয়, কিংবা ভয় না পান, তবে এখানকার হন্টেড ডল মিউজিয়াম শিরশিরে একটা অনুভূতি এনে দিতে পারে শিরদাঁড়ায়। ১০ হাজার পুতুলের জাদুঘরের একটি অংশ পাবেন হরর ছবির বিভিন্ন চরিত্রকে। 

সূত্র: দ্য ক্যানবেরা টাইমস, ডেইলি মেইল

কখনো চাকরিই করেননি, সেই প্রতিষ্ঠান থেকে পেলেন বরখাস্তের চিঠি

চীনের গ্রামে লিভ টুগেদার ও গর্ভধারণ নিয়ে ‘অদ্ভুত’ আইন জারি, সমালোচনার ঝড়

৩০ বছর পর প্রথম শিশুর জন্মে খুশিতে মাতোয়ারা ইতালির এক গ্রাম

জরায়ুর বাইরে বেড়ে উঠল শিশু, অলৌকিক জন্ম দেখল ক্যালিফোর্নিয়া

অন্য নারীর ছবিতে লাইক দেওয়া বৈবাহিক বিশ্বাসভঙ্গের শামিল: তুরস্কের আদালত

বাগ্দত্তা ‘বেশি খায়’, বিয়ে ভেঙে দিয়ে ক্ষতিপূরণ চাইলেন প্রেমিক

মদের দোকানে তাণ্ডব, বাথরুমে পাওয়া গেল মাতাল র‍্যাকুন

ভারতে প্রায় কোটি টাকার এক হিরা খুঁজে পেলেন ‘শৈশবের দুই বন্ধু’

লিংকডইনে গার্লফ্রেন্ড চেয়ে বিজ্ঞাপন দেওয়ার পর যা ঘটল

অফিসে ঘন ঘন টয়লেটে যাওয়ায় চাকরি হারালেন প্রকৌশলী