হোম > রাজনীতি

সংবিধানের চার মূলনীতি পরিবর্তনের বিপক্ষে সিপিবি, চায় সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) বৈঠক। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের সংবিধানের চার মূলনীতি পরিবর্তন ও দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদের প্রয়োজন নেই বলে মনে করে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)। সংসদে সব দলের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিতে সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতি প্রবর্তনের পক্ষে দলটি। অন্যদিকে সংবিধান সংস্কার-সংক্রান্ত সব প্রস্তাব বাস্তবায়ন নির্বাচিত সংসদের মাধ্যমে করার পক্ষে দলটি।

আজ মঙ্গলবার জাতীয় সংসদের এলডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে সংলাপে অংশ নিয়ে এসব কথা দলটির পক্ষ থেকে বলা হয়। দলটির সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম, সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্সসহ দলটির ১১ সদস্যের প্রতিনিধিদলের অংশগ্রহণে সকাল ১০টায় শুরু হয়ে বেলা ২টার পরে সংলাপ শেষ হয়।

সিপিবি মঙ্গলবারের সংলাপে সংবিধান, নির্বাচনব্যবস্থা ও দুর্নীতি দমন সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করে। বাকি বিচার বিভাগ ও জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব নিয়ে মুলতবি বৈঠকে আলোচনা হবে।

সংবিধান সংস্কার কমিশনের অনেক প্রস্তাব নিয়ে সিপিবি ‘ঘোরতর’ দ্বিমত জানিয়েছে বলে জানান রুহিন হোসেন প্রিন্স। তিনি বলেন, ‘ওনাদের প্রস্তাবনা মনে হয়েছে, এটা যেন একাত্তরকে অনেক সময় চব্বিশের দিয়ে রিপ্লেস করা হচ্ছে। আমরা বলেছি, এটা যথাযথ না। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা যেমন থাকবে, অবশ্যই চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষাও থাকবে। আমাদের বাহাত্তরের সংবিধানে কতগুলো অসম্পূর্ণতা আছে, তা দূর করতে হবে। এটাকে পুনর্লিখন বা অন্য কিছুর প্রয়োজন নেই। চার মূলনীতিকে অব্যাহত রেখে কাজগুলো করে এগিয়ে যেতে হবে।’

দেশের সব মানুষ বাংলাদেশি বলে পরিচিত সংস্কার কমিশনের এমন প্রস্তাবের প্রতি একমত সিপিবি। একজন সর্বোচ্চ দুই মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী থাকার পক্ষে তারা। একই সঙ্গে নারীদের জন্য সরাসরি ১০০ আসনের নির্বাচনের পক্ষে মত আছে সিপিবির। বিরোধী দল থেকে ডেপুটি স্পিকার নির্বাচনের পক্ষে দলটি। দুদক সংস্কার কমিশনের প্রায় সব প্রস্তাবে একমত তারা।

সংবিধান সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়ন নির্বাচিত সরকার করবে বলে মনে করে সিপিবি। বিষয়টি জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের স্প্রেডশিটে উল্লেখ থাকলে বিতর্ক কম হতো বলেও মত তাদের। প্রিন্স বলেন, ‘এটা বাস্তবায়ন করার একমাত্র এখতিয়ার নির্বাচিত সংসদের। যার জন্য আমরা গণপরিষদ বা অন্যান্য সাংবিধানিক পরিষদের প্রয়োজন আছে বলে মনে করি না।’

রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, ‘বাংলাদেশের বাস্তবতায় উচ্চকক্ষের প্রয়োজন মনে করি না। আমরা পরিষ্কার করে বলেছি যে সংবিধানে বিভিন্ন দলের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার জন্য এবং আমাদের স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করার কাজ করা দরকার, একই সঙ্গে সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতি প্রবর্তন করা দরকার।’

নির্বাচন প্রধান বিষয় জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এমন কোনো বিতর্কিত বিষয় সামনে আনা উচিত হবে না, যেটা নির্বাচনকে বিলম্বিত করে। যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচনব্যবস্থার আমূল সংস্কার করে আমরা নির্বাচনে যেতে চাই। বাইরের নানান শক্তি বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করতে চায়। কারণ, নির্বাচন হলো জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনা ও গণতন্ত্রের ধারায় এগিয়ে যাওয়া। এটা ঝুলে গেলে দায় আপনারা (জাতীয় ঐকমত্য কমিশন) এড়াতে পারবেন না।’

সংস্কার প্রস্তাবের বাস্তবায়নের দায়িত্ব নির্বাচিত সংসদের উল্লেখ করে সিপিবির সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘এর বাইরে অন্য কাউকে দিয়ে করার কোনো প্রচেষ্টা নেওয়া ঠিক হবে না। গণ-অভ্যুত্থানের চেতনাকে ভূলুণ্ঠিত করে, একাত্তরের চেতনাকে ভূলুণ্ঠিত করে এমন কোনো কাজের সুযোগ সংস্কারের নামেও দেওয়াটা যথাযথ হবে না।’

মোহাম্মদ শাহ আলম বলেন, ‘আমরা সংবিধানের পুনর্লিখন চাই না। সংবিধানের মধ্যে অতীতে যে কালো আইন আছে, সেগুলো বাদ দেওয়ার পক্ষে। অর্থাৎ সংবিধানের সংস্কারের পক্ষে আমরা। সংবিধানের চার মূলনীতি রাখার পক্ষে। তারা সেটা রাখে নাই।’

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজের সভাপতিত্বে ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারের সঞ্চালনায় বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সদস্য সফর রাজ হোসেন, বিচারপতি এমদাদুল হক, ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়া।

অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, রাষ্ট্র কাঠামো পুনর্গঠন বা সংস্কারের লক্ষ্যে আলোচনা মূলত রাজনৈতিক দলগুলোর দীর্ঘদিনের সংগ্রামের ধারাবাহিকতা। চব্বিশের জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে এই আকাঙ্ক্ষা উন্মুক্ত হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘আমরা সকলে ইতিহাসের এমন একটা মাহেন্দ্রক্ষণে উপস্থিত হয়েছি, যখন একটি গণতান্ত্রিক এবং জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্র বিনির্মাণের মাধ্যমে সকল নাগরিকের সমান অধিকার প্রতিষ্ঠা করা এবং সে অধিকারের সুরক্ষা নিশ্চিত করার রূপরেখা তৈরির চেষ্টা করছি। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের লক্ষ্য হচ্ছে এমন একটি জাতীয় সনদ তৈরি করা, যা ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের পথরেখা কেমন হবে তা নির্দেশ করবে।’

দুই কারণে পিছিয়ে গেল খালেদা জিয়ার লন্ডন যাত্রা

বিমানবন্দর থেকে সোজা এভারকেয়ার হাসপাতালে জুবাইদা রহমান

ঢাকায় পৌঁছেছেন জোবাইদা রহমান

খালেদা জিয়ার লন্ডন যাত্রা পিছিয়ে গেছে

খালেদা জিয়ার জন্য কাতার থেকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স আসতে বিলম্ব

লন্ডন থেকে ঢাকার পথে জোবাইদা রহমান

বিএনপির নামে ২৮০০ সিসির ডিজেল ইঞ্জিন ‘হার্ড জিপ’ নিবন্ধন দিল বিআরটিএ

এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে ‘কারিগরি সমস্যা’, খালেদা জিয়ার লন্ডন যাত্রায় কিছুটা বিলম্ব হতে পারে

সীমান্তে দুই বাংলাদেশি হত্যা, এনসিপির নিন্দা

অক্সফোর্ড ইউনিয়নের আমন্ত্রণ পেলেন হাসনাত, জুনায়েদ ও সাদিক