আনিসুল ইসলাম মাহমুদের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টি (একাংশ) এবং আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর নেতৃত্বাধীন কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকা আওয়ামী লীগের ১৪ দলীয় জোটের শরিক জাতীয় পার্টির (জেপি) নেতৃত্বে জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট (এনডিএফ) আত্মপ্রকাশ হয়েছে। এই জোটে মোট দলের সংখ্যা ২০।
আজ সোমবার রাজধানীর গুলশানের ইমানুয়েলন্স পার্টি সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে ২০ দলের সমন্বয়ে নতুন জোটের ঘোষণা দেন আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। জোটের প্রধান উপদেষ্টা আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, মুখপাত্র জাতীয় পার্টির (একাংশ) মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার, জোটের মহাসচিব জনতা পার্টি বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান গোলাম সরোয়ার মিলন।
জাতীয় পার্টি ও জেপি ছাড়াও জোটের অন্য দলগুলো হলো—জনতা পার্টি বাংলাদেশ, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি, তৃণমূল বিএনপি, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন (বিএনএম), বাংলাদেশ মুসলিম লীগ, জাতীয় ইসলামিক মহাজোট, জাতীয় সংস্কার জোট, বাংলাদেশ লেবার পার্টি, জাতীয় স্বাধীনতা পার্টি, বাংলাদেশ মানবাধিকার পার্টি, বাংলাদেশ সর্বজনীন দল, বাংলাদেশ জনকল্যাণ পার্টি, অ্যাপ্লায়েড ডেমোক্রেটিক পার্টি, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক আন্দোলন, ডেমোক্রেটিক পার্টি, বাংলাদেশ জাতীয় লীগ।
লিখিত বক্তব্যে আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রকৃত গণতান্ত্রিক রূপান্তর, বিরাজমান রাজনৈতিক সংকট উত্তরণে জাতীয় ঐকমত্য সৃষ্টি, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং চব্বিশের জুলাই গণ-অভ্যুত্থান আকাঙ্ক্ষার সমন্বয়ে আগামী দিনের রাষ্ট্র সংস্কার, বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ, মধ্যপন্থার উদার গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক বেগবান করা, ইসলামি মূল্যবোধ এবং সর্ব ধর্ম সম্প্রীতিতে বিশ্বাসী, স্বাধীন বিচারব্যবস্থা প্রবর্তন, ফ্যাসিবাদের চির অবসান এবং সুশাসন প্রত্যাশী জনগণের ম্রিয়মাণ কণ্ঠস্বরকে সোচ্চার করতে রাজনৈতিক জোট গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
তিনি বলেন, জোটভুক্ত দলগুলো নিজ নিজ আদর্শ ও স্বকীয়তা বজায় রেখে উপযুক্ত নীতিমালা এবং কয়েকটি দাবির ভিত্তিতে আগামী নির্বাচন ও রাজনীতিতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করবে। এর নাম হবে জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট।
লিখিত বক্তব্যে সাত দফা দাবি জানানো হয়—
১. ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় বৈষম্যহীন, নিরপেক্ষ, অন্তর্ভুক্তিমূলক, স্বচ্ছ, গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা। অন্তর্বর্তী সরকারকে আগামী দুই মাসে নিরপেক্ষ নির্বাচনকালীন সরকারে পরিণত হতে হবে।
ক) সকল হয়রানিমূলক মামলা তুলে নিয়ে ভোটে অংশগ্রহণের সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে।
খ) অন্তর্ভুক্তিমূলক ভোটের ব্যবস্থা জরুরি।
২. জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে গণ-অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা ও সংস্কার বাস্তবায়ন করতে হবে।
৩. আইনের শাসন, সুস্থ, উদার গণতান্ত্রিক রাজনীতি প্রতিষ্ঠায় জনগণের সম্মতিমূলক শাসনব্যবস্থা প্রবর্তন করা জরুরি, যার লক্ষ্য একটি ভয়হীন, নিরাপদ ও কার্যকর রাষ্ট্র গড়ে তুলতে হবে।
৪. অবনতিশীল আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির দ্রুত ও দৃঢ় নিয়ন্ত্রণ জরুরি। সন্ত্রাসী, অস্ত্রধারী, চাঁদাবাজ, দখলবাজ—যে দলেরই হোক তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে।
৫. নিত্যপণ্যের অসহনীয় মূল্যস্ফীতি রোধ করতে হবে।
৬. স্বনির্ভর অর্থনীতি, বিনিয়োগ এবং কর্মসংস্থানের ওপর জরুরি মনোযোগ দিতে হবে।
৭. দুর্নীতি মুক্ত, বৈষম্যহীন সমাজ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে হবে।