হোম > রাজনীতি

বাংলাদেশকে ভারতের স্যাটেলাইট রাষ্ট্রে পরিণত করেছে সরকার: রিজভী

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

সরকার দেশকে প্রতিবেশী দেশের ‘স্যাটেলাইট রাষ্ট্রে’ পরিণত করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। আজ বুধবার রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন তিনি। 

রিজভী বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন-ভারত আমাদের পাশে ছিল বলেই বাংলাদেশের নির্বাচনে বিশ্বের বড় বড় রাষ্ট্র অশুভ হস্তক্ষেপ করতে পারেনি। যখন দেশ-বিদেশে নির্বাচন বিরোধী ষড়যন্ত্র, তখন ভারত স্ট্রংলি আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। আর পররাষ্ট্র মন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন-দেশে ২০১৪ সালের নির্বাচন নিয়ে অনেক ষড়যন্ত্র হয়েছিল, ওই সময় ভারত আমাদের পাশে ছিল। ২০১৮ সালে নির্বাচনে ভারত আমাদের সাথে ছিল। এবারও ভারত আমাদের পাশে ছিল ও আছে। গত কয়েক দিন ধরে এই মন্ত্রীরা জনগণের ভোটাধিকার হরণ, গণতন্ত্র হত্যা এবং বিনা ভোটে অবৈধ ক্ষমতার অমরত্ব লাভের অপচেষ্টায় প্রতিবেশী ভারতের প্রত্যক্ষ সহযোগিতা ও মদদের স্বীকারোক্তি প্রদান করে জোর গলায় বক্তৃতা দিচ্ছেন। কথায় কথায় প্রায় সব মন্ত্রী ভারত বন্দনায় মত্ত হচ্ছেন। তাদের কথাবার্তা ও আচার-আচরণে মনে হচ্ছে যে, বাংলাদেশ এখন ভারতের স্যাটেলাইট রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে।’ 

দুই মন্ত্রীর বক্তব্য জাতিসংঘ সনদের পরিপন্থী উল্লেখ করে রিজভী বলেন, ‘ওবায়দুল কাদের ও হাছান মাহমুদের অকপট স্বীকারোক্তি প্রমাণ করে, জাতিসংঘ সনদের ২ (৪) ধারা সরাসরি লঙ্ঘন করে ভারত আমাদের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র, মানবাধিকার, ভোটাধিকার সবকিছুর ওপর সরাসরি নগ্ন হস্তক্ষেপ করে চলেছে। আওয়ামী লীগ নেতাদের কথায় স্পষ্ট যে, ভারত এ নীতি লঙ্ঘন করে বাংলাদেশের রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করছে। ভারত বাংলাদেশের জনগণ ও গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে অরাজক লুটেরা খুনি, গণধিকৃত বাকশালি শাসনের পক্ষে সহযোগিতা করছে। গণ নিপীড়ক-হন্তারক-মাফিয়া সরকারকে প্রকাশ্যে মদদ ও সমর্থন দিচ্ছে।’ 
 
রিজভী বলেন, ‘গত নির্বাচনে জনগণ দেখেছে, ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বাংলাদেশে এসে একদলীয় নির্বাচনের পক্ষে সাফাই গেয়েছেন। ভারতীয় কূটনীতিকেরা বাংলাদেশে এসে বলেছেন-শেখ হাসিনার নেতৃত্বে তারা স্থিতিশীলতা চান। তারা বাংলাদেশের গণতন্ত্র, মানুষের অধিকার চান না। ভারত মনোনীত প্রার্থীরা বীরদর্পে বলছেন-আমাকে ভারত মনোনয়ন দিয়েছে। আমি ভারতের প্রার্থী। আমি এখানে হারার জন্য আসিনি। তাহলে কোথায় স্বাধীনতা, কোথায় সার্বভৌমত্ব, কোথায় ত্রিশ লক্ষ মানুষের আত্মত্যাগ যার বিনিময়ে এই স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র। আজকে সবকিছু ভারতের অঙ্গুলি হেলনে চলছে।’ 

বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগের নেতারা ভারতের গোলামি করলেও এ দেশের মানুষ ভারতের গোলামি করবে না। ভারতের জনগণের সঙ্গে আমাদের কোনো দ্বন্দ্ব নাই। তবে আমাদের আপত্তি ভারতের শাসকদের নীতি নিয়ে। তাই দলমত-নির্বিশেষে ভারতীয় এই আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়ে, দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে হবে। আওয়ামী লীগ নয়, ১৮ কোটি মানুষের বন্ধুপ্রতিম রাষ্ট্রের ভূমিকায় ফিরে আসা উচিত ভারতের।’ 
 
‘ভারত বিরোধী ক্যাম্পেইন’ প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ সর্বত্রই ইন্ডিয়া আউট ক্যাম্পেইন নিয়ে উত্তাল। ভারতীয় পণ্য বর্জন করে জনগণ প্রতিবাদ জানাচ্ছে। রাজধানীতে মিছিল সমাবেশে ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক দেওয়া হচ্ছে। সচেতন মানুষ বলছেন-ভারতীয় পণ্য কিনলে তা বুলেট হয়ে জনগণের রক্ত ঝরাচ্ছে। এটা জনগণের কাছে পরিষ্কার যে, গত তিন দশক আওয়ামী লীগ ভারতের সহযোগিতায় নির্বাচনের নামে তামাশা করে আসছে। গত ৭ জানুয়ারি বিনা ভোটে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করেছে ভারতের সমর্থনে।’

তিনি বলেন, ‘এটা কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি নয়। বাংলাদেশের অধিকারহারা মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলন। সারা দেশের দেশপ্রেমে শাণিত মানুষের এই ভারতীয় পণ্য বর্জনকে আমরা যৌক্তিক মনে করি। সর্বহারা জনগণের এই আবেগকে আমরাও ধারণ করি। আওয়ামী লীগকে জোরপূর্বক ক্ষমতায় বসে থাকতে সহযোগিতাকারী ভারতীয় পণ্য বর্জন হোক মানুষের প্রতিবাদের হাতিয়ার। ভারতীয় পণ্য বর্জন মানে স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারকে বর্জন। কারণ আওয়ামী লীগ একটি ভারতীয় পণ্য। মওলানা ভাসানী বলেছিলেন, পিন্ডির গোলামীর জিঞ্জির ছিন্ন করেছি, দিল্লির দাসত্ব করার জন্য নয়। সেই চেতনা এখন ছড়িয়ে পড়েছে আবারও ঘরে ঘরে। পাশাপাশি দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার দেশ বাঁচাও, মানুষ বাঁচাও স্লোগান এখন জনগণের মুখে মুখে।’ 

‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভারতীয় পণ্য বর্জনের যে ঢেউ দৃশ্যমান, তাতে মনে হয় দেশের বিশাল জনগোষ্ঠী ভারতীয় পণ্য বর্জনের পক্ষে দৃঢ় অবস্থান গ্রহণ করেছে। সুতরাং জনগণের দল হিসেবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপিসহ গণতন্ত্রকামী ৬৩টি দল এবং দেশপ্রেমিক জনগণ ভারতীয় পণ্য বর্জনের এই আন্দোলনে সংহতি প্রকাশ করছে।’ বলেও যোগ করেন রিজভী।

তারেকের প্রত্যাবর্তন: ফেরার ঘোষণায় ব্যাপক উৎসাহ, লন্ডন-ঢাকা ফ্লাইটের টিকিট শেষ

‘সেপারেটিস্টদের’ আশ্রয়–প্রশ্রয় দিয়ে ভারত থেকে সেভেন সিস্টার্স আলাদা করে দেব: হাসনাত

আল-বদর ও আল-শামস নয়, বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করেছে পার্শ্ববর্তী দেশ— জামায়াতের বুলি বিএনপি নেতার মুখে

একটা লাশ পড়লে আমরাও কিন্তু লাশ নেব, অত সুশীলতা করে লাভ নেই: মাহফুজ আলম

২৪ শুধু ইতিহাসের অংশ নয়, এটি আমাদের কলিজার অংশ: জামায়াত আমির

অথর্ব কমিশনের অধীনে কোনো নির্বাচন সম্ভব না: নাহিদ ইসলাম

নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা হলেও সতর্ক থাকতে হবে, ষড়যন্ত্র থেমে নেই: তারেক রহমান

প্রার্থীদের বন্দুকের লাইসেন্স দিলে ‘আফ্রিকান সিনড্রোম’ দেখা দেবে: সাইফুল হক

ক্ষমতায় গেলে আমরা জুলাই যোদ্ধাদের নিরাপত্তা দেব: মির্জা ফখরুল

জাতীয় সংসদ নির্বাচন: আসিফ-মাহফুজকে ঘিরে এনসিপিতে নতুন সমীকরণ