বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীগুলো হামলা, মামলা উপেক্ষা করে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে নিজেদের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ করেছে। পতিত, পরাজিত, পলাতক স্বৈরাচারমুক্ত বাংলাদেশে বর্তমানে প্রত্যেক নাগরিকের অধিকার প্রতিষ্ঠার সুযোগ সামনে এসেছে।
আজ শনিবার ময়মনসিংহে জাতীয়তাবাদী ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী দলের প্রথম জাতীয় প্রতিনিধি সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তারেক এসব কথা বলেন। বিকেলে নগরীর টাউন হল অ্যাডভোকেট তারেক স্মৃতি অডিটরিয়ামে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে তিনি লন্ডন থেকে অনলাইনে যুক্ত হন।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জানান, আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্য নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার রূপরেখা ঘোষণা করেছে। বিভিন্ন ঘোষিত পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য; দেশে কর্মসংস্থানের কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করতে এবং দলমত, ধর্ম-বর্ণ, গোত্র নির্বিশেষে সবার জন্য নিরাপদ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি সবার সক্রিয় সমর্থন এবং সহযোগিতা চায়।
সমাবেশে তারেক বলেন, বাংলাদেশে বসবাসরত ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর ঐক্য সমন্বিত রাখার পাশাপাশি ভাষা, সংস্কৃতি, সামাজিক মূল্যবোধ রক্ষায় বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হবে। জাতীয় সংসদ এবং দলীয়ভাবে বিএনপির কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় পর্যায়ের বিভিন্ন স্তরের কমিটিতে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করা হবে। সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান বৃদ্ধির পাশাপাশি দেশি-বিদেশি প্রযুক্তিগত শিক্ষার প্রসার ঘটানো হবে। নারী উদ্যোক্তাদের সুবিধা বৃদ্ধিসহ চাকরি সহজীকরণ করা হবে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, তারেক রহমানের ৩১ দফার মধ্যে রেইনবো বাংলাদেশের কথা বলা আছে। রেইনবোর মানে হলো সবাইকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে যাওয়া।
নির্বাচন নিয়ে চক্রান্ত চলছে জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘নির্বাচনকে বানচাল করার জন্য একটি গোষ্ঠী কাজ করছে। উগ্রবাদের কথা বলে তারা জাতিকে বিভক্ত করতে চায়। আমাদের দায়িত্ব হবে ঠিক যেমন ’৭১ সালে জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে আমরা যেভাবে ঐক্যবদ্ধ থেকে সংগ্রাম করেছিলাম, আবারও একটা ভূখণ্ডের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য ক্ষুদ্র-বড় জাতির ঐক্যবদ্ধ হয়ে তারেক রহমানের নেতৃত্বে কাজ করতে হবে।’
প্রতিনিধি সমাবেশে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি মৃগেন হাগিদগ সভাপতিত্ব করেন। আরও বক্তব্য দেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, চেয়ারপারসনের অন্যতম উপদেষ্টা ও হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের সভাপতি বিজন কান্তি সরকার, লেখক সঞ্জীব দ্রং, বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রমোদ চন্দ্র বর্মণ, ট্রাইবাল ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক বিপুল হাজং প্রমুখ।
সমাবেশে সমতল অঞ্চলের ১২টি জেলায় বসবাসরত ৩৪টি ভাষাভাষীর জাতিগোষ্ঠী অংশ নেয়। এ উপলক্ষে সকাল থেকেই নেতারা ময়মনসিংহে আসতে শুরু করেন। পরে বিএনপির পক্ষ থেকে নারীদের মধ্যে ২৬টি সেলাই মেশিন বিতরণ করা হয়।