গণ অধিকার পরিষদের সদস্যসচিব ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নূরুল হক নুর বলেন, ‘সরকার যদি ছয় মাসের মধ্যে জনগণের হাতে ক্ষমতা তুলে না দেয়, তবে তাদের মিসরের হোসনি মোবারকের মতো পরিণতি ভোগ করতে হবে। দ্রব্যমূল্য দফায় দফায় বাড়িয়ে জনগণকে নিঃস্ব করা। জনরোষে শিগগিরই এই সরকারের পতন ঘটাবে। গণতন্ত্রের মুক্তির লক্ষ্যে আমরা সব গণতন্ত্রকামী দলকে সঙ্গে নিয়ে যুগপৎ আন্দোলন গড়ে তুলব।’
আজ শুক্রবার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ইসরায়েল থেকে ফোনে আড়িপাতার যন্ত্রপাতি ক্রয়, গোয়েন্দা নজরদারির নামে নাগরিকদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা হরণের প্রতিবাদে, মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার রাজবন্দীদের মুক্তি, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল এবং বিদ্যুতের বর্ধিত মূল্য প্রত্যাহারের দাবিতে গণ অধিকার পরিষদের আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এসব মন্তব্য করেন।
নুর বলেন, ‘২০১৪ ও ২০১৮ সালে নানা অপকৌশলে আওয়ামী লীগ সরকার “ভোটারবিহীন ও মধ্যরাতের” নির্বাচনের পরেও বিদেশিদের সমর্থন আদায় করেছিল। বর্তমানে সারা বিশ্বের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রগুলো আওয়ামী লীগের বর্বর কর্তৃত্ববাদী শাসনের বিরুদ্ধে সোচ্চার। এই অবৈধ শাসনকে তারা আর সমর্থন দেবে না, সরকারের গদিতে কাঁপুনি ধরেছে। তাই আওয়ামী লীগ এখন নানা ষড়যন্ত্র ও নীলনকশায় ব্যস্ত।’
নূরুল হক নুর আরও বলেন, আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগ সরকার রাষ্ট্রীয় খরচে চার লাখ সাইবার যোদ্ধা তৈরি করেছে। দেশের সম্পদ ব্যবহার করে বিরোধী ও দেশের মানুষের বিরুদ্ধে অপপ্রচার ও প্রোপাগান্ডা, গুজব ছড়ানোর জন্য প্রতিটি উপজেলা ও ইউনিয়নভিত্তিক সাইবার বাহিনী তৈরি করেছে।
নাগরিকের ফোনে আড়িপাতা সংবিধান-পরিপন্থী বলে মন্তব্য করেন গণ অধিকার পরিষদের সদস্যসচিব। তিনি বলেন, ‘সরকার হুমকি দিয়ে সবার মুখ বন্ধ করতে চায়, আন্দোলন দমন করতে চায়। বিরোধী দলের নেতাদের ফোনালাপ খবরে প্রচার কোন আইনে আছে? আওয়ামী লীগের সাইবার সেল থেকে বানানো ছবি-ভিডিও প্রকাশের জন্য গণমাধ্যমকে তথ্য মন্ত্রণালয় থেকে চাপ দেওয়া হচ্ছে। সংবিধানকে কাটাছেঁড়া করে গণবিরোধী সংবিধানে পরিণত করা হয়েছে। সংবিধান সংশোধন করে জনগণের শাসন নিশ্চিত করা হবে।’
বিএনপির উদ্দেশে নুর বলেন, ‘সরকারের বিরুদ্ধে ডান, বাম, জামায়াত, ইসলামি দল, খেলাফত, চরমোনাই সবাই নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিতে একত্রিত হচ্ছে। সবার প্রতি আমাদের সমর্থন রয়েছে। আমরা সবাইকে নিয়ে রাজপথে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলব। তবে আমাদের আন্দোলনের সারথি বিএনপিকে বলব আপনারা বারবার দেশের ক্ষমতায় ছিলেন। কিন্তু বর্তমানে আপনাদের (বিএনপি) আন্দোলনের রণ কৌশল সঠিক পথে নেই। বিরোধী দলগুলোর সঙ্গে বসে সঠিক রণ কৌশল ঠিক করতে হবে। আপনাদের মানবশক্তি আছে, আর্থিক শক্তি আছে। আপনাদের সমন্বয় হচ্ছে না। ছোট দলগুলোকে সাপোর্ট দিয়ে চাঙা করতে হবে।’
ডাকসুর সাবেক ভিপি আরও বলেন, ‘সরকার রাজনীতির মাঠে গরু-ছাগলের হাট বসিয়েছে। রাজনীতিবিদের কোরবানির গরুর মতো দাম বাড়াচ্ছে। টাকাপয়সা, প্লট, আসন দেওয়ার প্রলোভন দেখাচ্ছে। অনেকেই এই প্রস্তাব গেলা শুরু করছেন।’
সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন গণ অধিকার পরিষদের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ খান, যুগ্ম আহ্বায়ক ফারুক আহমেদ, যুগ্ম আহ্বায়ক বিপ্লব কুমার পোদ্দার, ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিনি ইয়ামিন মোল্লা প্রমুখ।