জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা ও রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক রূপান্তরের লড়াই আওয়ামী লীগ-বিএনপির লড়াই নয়। এই লড়াই ফ্যাসিবাদের বিপরীতে জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াই—বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি মশিউর রহমান রিচার্ড।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যে ‘শান্তি সমাবেশে’র নামে মাদ্রাসা শিক্ষার্থী রেজাউল ইসলামকে হত্যা, বিরোধীদলীয় নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা-মামলা ও শিক্ষার্থীদের জোর-জবরদস্তি করে সমাবেশে নিয়ে যাওয়ার প্রতিবাদে বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিলে সভাপতির বক্তব্য প্রদানকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মশিউর রহমান রিচার্ড বলেন, ‘বাংলাদেশে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো যুগপৎভাবে জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা ও রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক রূপান্তরের লড়াই করছেন। বিরোধীদের রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলায় ব্যর্থ হয়ে সরকার ও আওয়ামী লীগ দমন-পীড়ন, হামলা-মামলার পথ বেছে নিয়েছে। শান্তি সমাবেশের নামে নিজেদের সংঘর্ষে একজন মাদ্রাসা শিক্ষার্থীকে হত্যা করেছে। বিরোধীদের ওপর হামলা দেশের ভেতরে এমনকি আন্তর্জাতিক মহলকেও উদ্বিগ্ন করেছে। আমরা অবিলম্বে সরকারকে হামলা-মামলার পথ থেকে সরে এসে জনদাবি মেনে নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।’
মশিউর রহমান রিচার্ড আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের চলমান লড়াইকে অনেকে আওয়ামী লীগ-বিএনপির লড়াই বলে চিহ্নিত করার চেষ্টা করছেন। আমরা দ্বিধাহীনভাবে বলতে চাই—এই লড়াই আওয়ামী লীগ-বিএনপির লড়াই নয়। এই লড়াই বাংলাদেশের গণতন্ত্রকামী মানুষের লড়াই। ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াই। এই লড়াইয়ে বাংলাদেশের গণতন্ত্রকামী মানুষেরাই বিজয়ী হবে। আমরা সেই লড়াইয়ে সর্বোচ্চ শক্তি নিয়ে রাজপথে থাকব।’
নেতারা বলেন, ‘বাংলাদেশ রাজনৈতিকভাবে সংকটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে যুগপৎ আন্দোলন করছে। আর সেই আন্দোলনে আতঙ্কিত হয়ে মানুষকে ভয় দেখানোর জন্য শান্তি সমাবেশের নামে বিশৃঙ্খলা তৈরির চেষ্টা করছে সরকারি দল আওয়ামী লীগ। শান্তি সমাবেশে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে মাদ্রাসা শিক্ষার্থী রেজাউল ইসলামকে হত্যা করেছে।’
‘বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলো থেকে জোর-জবরদস্তি করে শিক্ষার্থীদের মিছিলে নিয়ে যাচ্ছে সরকারি ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগ। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ন্যক্কারজনকভাবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করছে। আমরা অবিলম্বে রেজাউল হত্যার বিচার ও বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে গণরুম-গেস্টরুমে ছাত্র নির্যাতন বন্ধে প্রশাসনের দৃঢ় পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।’
সমাবেশে অন্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন ছাত্র ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় অর্থ সম্পাদক ফারহানা মুনা, কেন্দ্রীয় সদস্য জিনাত আরা, ঢাবি শাখার সদস্যসচিব উমামা ফাতেমা প্রমুখ।