হোম > মতামত > সম্পাদকীয়

আলুচাষিদের দুরবস্থা

সম্পাদকীয়

রংপুর ও ঠাকুরগাঁওয়ের আলুচাষিরা বর্তমানে নানামুখী সংকটে আবর্তিত। আলুর বাম্পার ফলন হলেও বাজারে দাম না থাকা, উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি এবং হিমাগারে সংরক্ষণের খরচ বেড়ে যাওয়ায় তাঁদের মাথায় হাত পড়েছে। এ নিয়ে আজকের পত্রিকায় ৯ ফেব্রুয়ারি একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।

শুধু আলু নয়, শীতের কারণে শাকসবজির দাম কমে গেছে। এতে ক্রেতারা লাভবান হলেও লোকসানে পড়েছেন কৃষকেরা। আবার মৌসুম চলে গেলে আলুসহ সব ধরনের শাকসবজির মূল্য বৃদ্ধি পাবে। এতে কৃষকেরা দাম পাবেন না আর ক্রেতারাও বেশি দামে জিনিস কিনতে বাধ্য হবেন। মাঝখান থেকে সিন্ডিকেটের পকেটে টাকা চলে যাবে।

কৃষক ও সাধারণ মানুষকে বাঁচাতে হলে সামগ্রিকভাবে কৃষি নিয়ে পরিকল্পনা থাকতে হবে। কিন্তু দেশে কোনো সরকারই এ দিকটায় নজর দেয়নি।

কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে আলু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা প্রায় ১৯ লাখ ৯৮ হাজার টন। কিন্তু জেলার হিমাগারগুলোর মোট ধারণক্ষমতা মাত্র ৪ লাখ ২৯ হাজার টন। ফলে হিমাগারে আলু সংরক্ষণের জন্য কৃষককে অতিরিক্ত অর্থ খরচ করতে হচ্ছে। অন্যদিকে উৎপাদন খরচও বেড়েছে। বীজ, সার, কীটনাশক ও শ্রমিকের মজুরি বৃদ্ধির কারণে প্রতি হেক্টর জমিতে অতিরিক্ত ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা খরচ হচ্ছে। উৎপাদন খরচ বাড়লেও বাজারে আলুর দাম কমে গেছে। কৃষকেরা প্রতি কেজি আলু ১০ থেকে ১২ টাকায় বিক্রি করছেন, যা তাঁদের উৎপাদন খরচের তুলনায় কম। এতে কেজিপ্রতি ৮ থেকে ১০ টাকা লোকসান হচ্ছে।

এই পরিস্থিতিতে কৃষকেরা হিমাগার ভাড়া কমানোর দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন। তাঁরা হিমাগারের মালিকদের সিন্ডিকেট ভেঙে বস্তাপ্রতি ভাড়া ২৮০ টাকা নির্ধারণ করার দাবি জানিয়েছেন। অন্যদিকে হিমাগার মালিকেরা জানান, বিদ্যুৎ, শ্রমিকের মজুরি এবং ব্যাংক সুদের হার বাড়ায় সংরক্ষণ খরচ বেড়েছে। বাংলাদেশ কোল্ডস্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশন প্রতি কেজি আলুর ভাড়া ৮ টাকা নির্ধারণ করেছে, যা তাঁরা অনুসরণ করছেন।

এই সংকট সমাধানে সরকার এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। কৃষকদের জন্য হিমাগারভাড়া কমানো, আলুর বাজারমূল্য বৃদ্ধি এবং উৎপাদন খরচ কমানোর জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। তা না হলে আলুচাষিদের এই দুরবস্থা আরও বাড়বে এবং এর প্রভাব খাদ্য উৎপাদনেও পড়বে।

এই সংকট মোকাবিলায় সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে আরও বেশি হিমাগার স্থাপন করা প্রয়োজন। যদি এই সমস্যা সমাধান করা না যায়, তাহলে অনেক কৃষক আলু চাষ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে পারেন, যা আলুর উৎপাদনে বড় ধরনের প্রভাব ফেলবে। কৃষকদের জন্য উন্নতমানের বীজ, সার এবং কীটনাশকের সহজলভ্যতা নিশ্চিত করতে হবে।

এই মুহূর্তে আলুচাষিরা মহাদুশ্চিন্তার মধ্যে আছেন। সেটা থেকে তাঁদের মুক্ত করার দায়িত্ব হলো সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের। উপদেষ্টাদেরও এ নিয়ে ভাবা উচিত। কারণ, সাধারণ জনগণ ভালো নেই, তাদের আয়ের উন্নতি হচ্ছে না। কৃষককে বাঁচাতে রাষ্ট্রকেই দায়িত্ব নিতে হবে।

গুলিবিদ্ধ হাদি ও নির্বাচন

নির্বাচনের পথে দেশ

কেন থমকে যাচ্ছে মেট্রোরেল

স্পর্ধা

মোহাম্মদপুরে জোড়া খুন

সরকারি হাসপাতাল বলে কথা

তরুণদের ভোট

ধর্ষণ ও আত্মহত্যা

গণতন্ত্র অধরা এখনো

ইমরান খান