হোম > মতামত > সম্পাদকীয়

তাজ্জব ব্যাপার!

সম্পাদকীয়

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনায় আসব একটু পরে, তার আগে কিছু কথা হোক।

আচ্ছা মনে করুন, আপনি রাজা। আপনার একজন সৈনিক আপনাকে বলল, ‘মহারাজ, সৈন্যদলের সেনাপতি বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন। তিনি শত্রুদের সঙ্গে চক্রান্ত করে আপনাকে সিংহাসনচ্যুত করতে চাইছেন।’ আপনি সে কথা শুনে কী করবেন? চক্রান্ত করার জন্য সেনাপতির বিচার করবেন, নাকি সেই সৈনিকের গর্দান নেবেন? কিংবা ধরুন, আপনি একটা ফুটবল দলের কোচ। আপনার দলের স্টপারব্যাক আপনার কাছে এসে বলল, ‘বস, একটু সাবধানে। স্ট্রাইকার মহাশয়কে জুয়াড়িদের সঙ্গে কথা বলতে দেখেছি!’ আপনি তখন কী করবেন? এই স্টপারব্যাককে বেঞ্চিতে বসিয়ে রাখবেন, নাকি ওই সন্দেহভাজন স্ট্রাইকারকে রাখবেন মাঠের বাইরে? কিংবা চিড়িয়াখানায় বাঘের খাঁচার সামনে গিয়ে দেখলেন, ত্রিশ কেজি মাংস বাঘের জন্য বরাদ্দ হওয়া সত্ত্বেও বাঘকে যে খাবার দেওয়া হচ্ছে, তা কোনোমতেই পনেরো কেজির বেশি হবে না। আপনি ডাকলেন সেই কর্মচারীকে। জবাবদিহি চাইলেন। কর্মচারী বলল, ‘সাপ্লায়ার কম দিয়েছে।’ আপনি বললেন, ‘আমরা কি মেপে নিই না?’ উত্তর এল, ‘নিই তো!’ এবার আপনি সেই সাপ্লায়ারকে বাতিল করে দেবেন, নাকি এই কর্মচারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন?

এ রকমভাবে একের পর এক উদাহরণ টানা যায়। তিনটি উদাহরণেরই পরবর্তী ধাপ হচ্ছে শত্রু চিহ্নিত করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া। অন্যায় করার ইচ্ছে হলে নেওয়া হবে উল্টো ব্যবস্থা। তখন দেখা যাবে, যিনি বিশ্বাসঘাতকতা ধরিয়ে দিচ্ছেন, তাকে দেওয়া হচ্ছে শোকজ নোটিশ। যিনি জুয়াড়ির ব্যাপারে কোচকে সতর্ক করে দিচ্ছেন, তিনি পাচ্ছেন শাস্তি। আর অকারণেই কাজ হারাচ্ছে মাংসের সাপ্লায়ার।

অন্যায় করার ইচ্ছে কেন হয়? যদি নিজের অপরাধ বা নিজের ঘনিষ্ঠ কারও অপরাধ ধরা পড়ে যাওয়ার ভয় থাকে, তাহলে সেই অন্যায় করা হয়। অথবা হয় ক্ষমতা প্রদর্শনের ইচ্ছে থাকলে। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক ভর্তি পরীক্ষার বি-ইউনিটে পরীক্ষা না দিয়েও এক শিক্ষার্থী মেধাতালিকায় ১২তম স্থান পায়। তদন্ত কমিটি গঠিত হওয়ার পর এ ঘটনার সত্যতা খতিয়ে দেখার পাশাপাশি কারা এর জন্য দায়ী, সেটা খতিয়ে না দেখে কে এই ‘অমূল্য তথ্য’ সাংবাদিকদের কাছে সরবরাহ করেছে, সেটাই কি হয়ে গেল মূল তদন্তের বিষয়? গাফিলতিটা কার, সেটাই তো প্রশ্ন হওয়া উচিত ছিল। সেই প্রশ্ন না করে নানা ধরনের যেসব কথাবার্তা বলে চলেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ, তাতে ভাবনার ক্ষেত্রে তাদের দেউলিয়াত্বই ফুটে ওঠে। গাফিলতি যিনি করেছেন, তিনি অপরাধী নন; সেই কথা প্রকাশ করেছেন যিনি, তিনিই অপরাধী—এটা কোনো প্রতিষ্ঠানের নীতি হতে পারে না। 
গত ২৮ জুন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় বিষয়টি উঠেছিল। তথ্য সরবরাহকারী হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মাহবুবুল হক ভূঁইয়াকে শনাক্ত করা হয়। অথচ গাফিলতি করেছেন যাঁরা, তাঁদের ব্যাপারে টালবাহানা। দোষ নির্ণয়ের এহেন দশা সত্যিই হতাশ করে। 

ধরা হোক হামলাকারীদের

কী ভয়ংকর!

শান্তি এখন খুব প্রয়োজন

শান্ত হোন

সংযোগ সড়কহীন সেতু

যা করণীয়

নিরাপত্তাহীনতা

আজ বিজয়ের দিন

রিক্রুটিং এজেন্সির প্রতারণা

গুলিবিদ্ধ হাদি ও নির্বাচন