হোম > মতামত > সম্পাদকীয়

ভূমিকম্প

সম্পাদকীয়

শুক্রবার সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে ভয়াবহ ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। ইউজিএসের তথ্যমতে, রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৫.৭। মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) আরও জানিয়েছে, ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ছিল নরসিংদী জেলা সদর থেকে ১৪ কিলোমিটার পশ্চিম-দক্ষিণ পশ্চিমে। এ ভূমিকম্পে ছয়জন নিহত এবং আহত হয়েছে দুই শতাধিক।

ভূমিকম্প একটা প্রাকৃতিক ঘটনা। ভূতাত্ত্বিক প্লেটের নড়াচড়ার ফলে ভূমিকম্প হয়ে থাকে। অনেক ক্ষেত্রে এটা নিয়ে আগাম পূর্বাভাস দেওয়া যায় না। কিন্তু পূর্ব প্রস্তুতি গ্রহণ করা গেলে বড় ক্ষতি থেকে রক্ষা পাওয়া যেতে পারে। ঘনবসতিপূর্ণ এ দেশে ভূমিকম্প হলে রক্ষা পাওয়া এবং ক্ষতি কমানো নিয়ে কোনো পরিকল্পনা নেই বললেই চলে।

দেশে ভূমিকম্পের মাত্রা দিন দিন বাড়ছে। গত কয়েক বছরের মধ্যে গতকালের মাত্রা ছিল সর্বোচ্চ। ঢাকাসহ সারা দেশে এর চেয়ে বেশি মাত্রার ভূমিকম্প হলে কী পরিস্থিতি দাঁড়াতে পারে, সেটা কল্পনাও করা যায় না। কারণ, বাংলাদেশ এমনিতেই ঘনবসতিপূর্ণ। এখানকার বেশির ভাগ ভবন আধুনিক বিল্ডিং কোড মেনে নির্মাণ করা হয়নি। পাশাপাশি এখানকার পানি, গ্যাস ও বিদ্যুৎ লাইনও অপরিকল্পিতভাবে গড়ে উঠেছে। ফলে বড় মাত্রার ভূমিকম্প হলে বিপর্যয় অবধারিত ঘটবে। বিপর্যয় শুধু নয়, মহাবিপর্যয় ঘটে যাবে।

রাজধানী শহর ঢাকাকে আধুনিক ও নিয়মতান্ত্রিকভাবে গড়ে তোলা এবং তার ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব রাজউকের। কিন্তু এ শহরটা এখনো যে অগোছালোভাবে বিস্তৃত হচ্ছে, তার দায় রাজউক কর্তৃপক্ষ এড়াতে পারে না। তাদের অনুমতি ছাড়া কোনো ভবন অপরিকল্পিতভাবে তৈরি হওয়ার সুযোগ নেই। কেননা, অনেক তো খাল ভরাট, জায়গা দখল করে কত বিল্ডিং হলো। সেগুলোর কয়টা বিল্ডিং কোড মানে, এসব নিয়ে সন্দেহ তো হয়ই। রাজউকেও নিশ্চয়ই ঘুষখোর আছে। এরপর সিটি করপোরেশনসহ অন্যান্য সরকারি সংস্থার দায় এড়ানোর সুযোগ নেই।

ঢাকায় বড় ভূমিকম্প হলে কী করুণ পরিস্থিতি হতে পারে, তা উঠে এসেছে রাজউকের এক গবেষণায়। ২০২৪ সালের ৩১ মে ভূমিকম্প সহনশীল নগরায়ণ বিষয়ে এক আন্তর্জাতিক সেমিনারের আলোচনা থেকে জানা যায়, থাইল্যান্ডের থেকে আরও কম মাত্রার ভূমিকম্পে ঢাকার মোট ভবনের ৪০ শতাংশই ধসে পড়বে।

বাংলাদেশের মতো দেশে, যেখানে জনসংখ্যার ঘনত্ব সবচেয়ে বেশি, সেখানে ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনাই গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ। আমরা পরিকল্পিতভাবে নগরায়ণ করতে পারিনি। আমাদের এখানে ভবন নির্মাণে কোনো নিয়ম মানা হয় না। এইভাবে অনিয়ন্ত্রিত নগরায়ণের কারণে দেশে ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতির ঝুঁকি অনেক বেড়ে গেছে। ফলে ক্ষতির পরিমাণ কল্পনা করাও কঠিন।

মাঝেমধ্যে বাংলাদেশে বিভিন্ন জায়গায় ভূমিকম্প অনুভূত হচ্ছে। তা থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য যা কিছু করার, তা যেন করা হয়। শুধু বিভিন্ন গবেষণা এবং তার ফলাফল নিয়ে বিশেষজ্ঞ মতামতের চেয়ে জরুরি হলো বাস্তবসম্মত উদ্যোগ গ্রহণ এবং তা বাস্তবায়ন করা। শুধু ঢাকা নয়, সারা দেশেই ভবন নির্মাণে ভূমিকম্পনিরোধক ব্যবস্থা নেওয়া হয় কি না, সেটাও যাচাই করে দেখা জরুরি।

শিক্ষকের ক্ষমতা

ধরা হোক হামলাকারীদের

কী ভয়ংকর!

শান্তি এখন খুব প্রয়োজন

শান্ত হোন

সংযোগ সড়কহীন সেতু

যা করণীয়

নিরাপত্তাহীনতা

আজ বিজয়ের দিন

রিক্রুটিং এজেন্সির প্রতারণা