হোম > মতামত > সম্পাদকীয়

বিদ্যালয়ের মাঠে ধান চাষ

সম্পাদকীয়

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শুধু পড়াশোনার জায়গা নয়, এটি শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশেরও জায়গা। পড়াশোনার পাশাপাশি খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড একটি শিশুর পূর্ণাঙ্গ বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কিন্তু যখন কোনো প্রতিষ্ঠানের প্রধানের ব্যক্তিগত স্বার্থের কারণে এই মৌলিক অধিকার বিঘ্নিত হয়, তখন তা কেবল অনিয়ম নয়, বরং অনৈতিকতাও প্রকাশ পায়। গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার রামদেব দ্বিমুখী উচ্চবিদ্যালয়ের ঘটনাটি এমনই এক লজ্জাজনক চিত্র তুলে ধরেছে।

আজকের পত্রিকায় ৭ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত সংবাদ থেকে জানা যায়, রামদেব দ্বিমুখী উচ্চবিদ্যালয়ের প্রায় ৪০০ শিক্ষার্থীর খেলার মাঠটি এখন ধানখেতে পরিণত হয়েছে। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলাম বসুনিয়া ব্যক্তিগত লাভের জন্য মাঠের সাড়ে তিন বিঘা জমি বর্গা দিয়েছেন। ফলে শিক্ষার্থীরা ক্লাসের বিরতিতে খেলাধুলা করতে পারছে না। বারান্দা ও ক্লাসরুমেই তাদের খেলার সময় কাটছে, যা তাদের শৈশবের আনন্দ কেড়ে নিচ্ছে।

প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে শুধু খেলার মাঠ বর্গা দেওয়ার অভিযোগই ওঠেনি, মসজিদ নির্মাণের কথা বলে তিনি প্রত্যেকের কাছ থেকে ২০০-৩০০ টাকা করে নিয়েছেন, কিন্তু মসজিদ নির্মাণ না করে সেই টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এ ধরনের অভিযোগ যদি সত্যি হয়, তাহলে এটি একটি বড় ধরনের আর্থিক দুর্নীতি।

সবচেয়ে হতাশাজনক বিষয় হলো, এই অনিয়মগুলো সম্পর্কে বারবার অভিযোগ জানানো হলেও কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না। প্রাক্তন ছাত্র, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করলেও স্থানীয় প্রশাসন বা শিক্ষা বিভাগের পক্ষ থেকে কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। যদিও প্রধান শিক্ষক বলেছেন, বিদ্যালয়ের আগের প্রধান শিক্ষক জমিটি বন্ধক রেখেছেন। এ ধরনের কথা বলে তিনি কোনোভাবে দায় এড়াতে পারেন না।

একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাঠ বর্গা দিয়ে অর্থ উপার্জন করা, আর সেই অর্থ আত্মসাৎ করা—এগুলো কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এ ধরনের অনিয়ম শিক্ষার পরিবেশকে কলুষিত করে। এতে শুধু শিক্ষার্থীরাই ক্ষতিগ্রস্ত হয় না, বরং শিক্ষক এবং প্রশাসনের ওপর সাধারণ মানুষের বিশ্বাসও কমে যায়। প্রতিষ্ঠানের প্রধান কোনোভাবেই এ ধরনের কাজ করতে পারেন না।

একটি বিদ্যালয়ের প্রধানের কাজ হলো শিক্ষাদানের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের সার্বিক বিকাশের জন্য একটি উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করা। খেলাধুলা শিক্ষার্থীদের সুস্থ মন ও শরীর গঠনের জন্য অপরিহার্য। এটি তাদের নেতৃত্ব, শৃঙ্খলা এবং দলগতভাবে কাজ করার দক্ষতা বাড়ায়। অথচ রামদেব দ্বিমুখী উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের এমন কর্মকাণ্ড শিক্ষার মূল উদ্দেশ্যকেই প্রশ্নবিদ্ধ করছে।

অবিলম্বে এই ঘটনার তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। খেলার মাঠের জমি ফিরিয়ে এনে শিক্ষার্থীদের জন্য খেলার সুযোগ করে দিতে হবে। একই সঙ্গে মসজিদ নির্মাণের নামে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগেরও সুষ্ঠু তদন্ত হওয়া উচিত। এটি একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, বরং দেশের অনেক প্রান্তেই এমন অব্যবস্থাপনা ঘটে থাকে। তাই এ ধরনের অনিয়ম প্রতিরোধে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আরও বেশি সক্রিয় হওয়া জরুরি।

নির্বাচনী ব্যয়

খুলনার এক গোলমেলে ব্যাপার

একটি প্রত্যাবর্তন, বহু প্রত্যাশা

বড়দিনের শুভেচ্ছা

শিক্ষকের ক্ষমতা

ধরা হোক হামলাকারীদের

কী ভয়ংকর!

শান্তি এখন খুব প্রয়োজন

শান্ত হোন

সংযোগ সড়কহীন সেতু