হোম > মতামত > সম্পাদকীয়

কেবল হতাশা

সম্পাদকীয়

ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার ৩৭ নম্বর মধ্য গোপালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের করুণ চিত্র ফুটে উঠেছে আজকের পত্রিকায় ছাপা হওয়া এক প্রতিবেদনে। একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে একজনমাত্র শিক্ষক প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে বসেছেন পড়াতে। বাকি শিক্ষকদের কারও খবর নেই। সাংবাদিকেরা সে বিদ্যালয়ে আসার পর কোথা থেকে ছুটে এলেন আরেকজন শিক্ষক। তিনি নাকি অসুস্থ ছিলেন, ছুটি না নিয়েই ছুটি ভোগ করছিলেন। প্রশ্ন জাগে, চার শিক্ষক দিয়ে গড়া এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি আসলে কী উপহার দেবে জাতিকে?

দেশে এখন নানা ধরনের অস্থিরতা চলছে। যে রকম অবিশ্বাস্য গতিতে ঘটনাগুলো ঘটে চলেছে এবং আরও বেশি জটিল করে তুলছে দেশের ভবিষ্যৎ, তাতে বিষয়গুলো নিয়ে এই মুহূর্তে কিছু বলতে যাওয়া বিড়ম্বনা। কোনো নিয়মনীতি মেনে ঘটনাগুলো ঘটছে না বলে তার সমাধান খোঁজাও দুষ্কর। এ কারণেই দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের একটি স্কুলের সীমাহীন দুর্দশার কথা দিয়ে সংকটটির একটি কারণ ধরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। এ ধরনের বাস্তবতাও সামগ্রিক অস্থিরতা গড়ে তোলার বীজ বহন করে।

শিক্ষার একটা বড় উদ্দেশ্য হচ্ছে মানবিক সমাজ গড়ে তোলা। শিক্ষিত মানুষ বিজ্ঞান এবং যুক্তিকে কাজে লাগিয়ে মানুষের কল্যাণে ব্যবহার করতে পারে। যে শিশুটি ধীরে ধীরে শিক্ষার আলোয় আলোকিত হচ্ছে, তার মনোজগৎ বৃহত্তর কল্যাণের দিকে ধাবিত হয়। এবং সে ক্ষেত্রটি তৈরি করে দেন শিক্ষক। আমাদের দেশে শিক্ষকেরা তাঁদের সে কাজটি সম্পর্কে কতটা সচেতন, তার কোনো নির্দিষ্ট উত্তর নেই। একদিকে কোচিংয়ের রমরমা, শ্রেণিকক্ষে পড়ানোয় গাফিলতি, অন্যদিকে প্রাপ্ত বেতনে দিনযাপন করার কষ্টকর অভিজ্ঞতাকে এড়িয়ে না গিয়েও বলা যায়, শ্রেণিকক্ষে যেভাবে পড়ালে একটি শিশু পড়াশোনার প্রতি আগ্রহী হয়ে ওঠে, পড়াশোনাকে চাপ মনে না করে আনন্দ বলে মনে করতে পারে, সে রকম প্রস্তুতি আমাদের শিক্ষকদের মধ্যে কমই দেখা যায়। অন্য যেকোনো চাকরির মতো শিক্ষকের চাকরি নয়।

প্রতিদিন নতুন করে শিক্ষার্থীকে আগ্রহী করে তুলতে না পারলে কিংবা গতানুগতিক ধারায় যান্ত্রিকভাবে লেখাপড়া করানো হলে শিক্ষার্থী তার মনোজগৎকে ইতিবাচকভাবে গড়ে নিতে পারে না। এই সংকট যদি প্রাইমারি স্কুলের স্তর থেকেই ছড়িয়ে পড়ে, তাহলে এই শিশুটি একজন সত্যিকারের মানবিক নাগরিক হয়ে উঠবে কীভাবে?

এই সংকট কাটিয়ে ওঠা যায় না বলেই বুদ্ধিবৃত্তিক যে সংকট তৈরি হয়, তাতে ভয়ংকর হয়ে ওঠে শিশুর ভবিষ্যৎ। ডিজিটাল যুগে জ্ঞান, শিক্ষা গভীরতা ইত্যাদির জায়গায় স্থূল বিনোদন কিংবা অনৈতিকতার প্রতি আগ্রহ বাড়ছে। সময়মতো তা সামাল দেওয়ার দায়িত্ব শিক্ষকের। কিন্তু কজন শিক্ষক সে দায়িত্ব পালন করছেন?

চার শিক্ষকের এই প্রাথমিক বিদ্যালয়টির মতো এ রকম বিদ্যালয় দেশে কতগুলো আছে? এইসব প্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে বৃহৎ পরিসরে যখন এই শিশুরা আসবে, তখন তাদের ভেতরে ইতিবাচক কী থাকবে, যার ওপর নির্ভর করে তারা তাদের জীবন গড়ে নিতে পারবে?

ইমরান খান

শাপলাপাতা মাছ

ছাদে মানুষ

উচ্চ রক্তচাপ

তফসিল, নির্বাচন ও জনগণ

ঢাকা শহর যখন মুমূর্ষু

মোবাইল কোম্পানির বাণিজ্য

চালের বস্তা

এটা কি গণতন্ত্রের ভাষা!

বাউলদের ওপর হামলা কেন