হোম > মতামত > সম্পাদকীয়

লোভে খুন, খুনের পর?

সম্পাদকীয়

আমরা নাটক-সিনেমায় সাধারণত এমনটা দেখি—পরিবারের সদস্য একজন আরেকজনকে নিজের স্বার্থে খুন করতে দ্বিধা করে না। মনে হয় এসব ঘটনা বাস্তবে এতটাই ঘটছে যে এখন মানুষ অবাক হতে ভুলে গেছে। সম্পত্তির লোভে বাবাকে খুন করেছেন ছেলে—এমন খবর আজকের পত্রিকায় প্রকাশিত হওয়ার পর অনেকেই হয়তো আর অবাক হচ্ছেন না। লোভ এমনই রিপু।

সত্তরোর্ধ্ব বীর মুক্তিযোদ্ধা 
আব্দুল হালিম। স্ত্রী মারা যাওয়ার পর ছেলে মাসুদকে নিয়েই থাকতেন নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানার ধর্মগঞ্জের মাওলাবাজার এলাকায়। সঙ্গে থাকতেন মাসুদের স্ত্রী-সন্তানও। বাবা তাঁর সম্পত্তি বোনদের ভাগ করে দিতে পারেন বলে একটা সময় মনে হতে থাকে মাসুদের। সেই সন্দেহ থেকে নিজের বাবাকে খুন করার পরিকল্পনা করে ফেলেন। এই কাজের সহযোগী হিসেবে বেছে নেন রুবেল নামের এক অটোরিকশার চালককে। পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ৩১ জানুয়ারি শ্বাসরোধ করে দুজন মিলে খুন করেন আব্দুল হালিমকে। এরপর মাসুদ বাবার হাত-পা বেঁধে ডাকাতির নাটক সাজান।

এ ঘটনায় ফতুল্লা মডেল থানায় মামলা করেছিলেন আব্দুল হালিমের জামাতা। মাসুদ পালিয়ে দেশের বাইরে চলে যান। আর রুবেলও নিজের বোনের বাড়িতে গিয়ে লুকিয়ে ছিলেন। পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) তদন্ত করে রুবেলকে গ্রেপ্তারের পর আসল ঘটনা বের হয়ে আসে।

নাটক-সিনেমায় যেমন দুষ্ট লোকের কুকর্ম দেখায়, তেমনি কিন্তু এর শাস্তিও দেখায়। মাসুদ হয়তো নাটক-সিনেমার শেষটুকু দেখতেন না। তাই তিনি বুঝতেও পারেননি যে তাঁর এই কুকর্মের কথা প্রকাশ পেয়ে যাবে। আর তাঁর জন্য অপেক্ষা করবে আইনসিদ্ধ শাস্তি।

তিনি হয়তো এ-ও জানেন না যে তাঁর ধর্মীয় বিধানে নারীদের সম্পত্তির ভাগ দিতে বলা হয়েছে। এ কথা স্পষ্ট যে তিনি মানবিক গুণসম্পন্ন ব্যক্তি নন বলেই লোভ করতে পেরেছেন এবং বাবার সম্পত্তি থেকে বোনদের বঞ্চিত করতে চেয়েছেন। শেষ পর্যন্ত খুন করেছেন নিজের জন্মদাতাকে। কিন্তু তাঁর পরিকল্পনা তো সফল হলো না। একদিন নিশ্চয়ই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে ধরা পড়বেন। দোষী সাব্যস্ত হলে নিশ্চয়ই তাঁকে আইন অনুযায়ী শাস্তি দেওয়া হবে। তখন কি তিনি একা এই সম্পত্তি ভোগ করতে পারবেন?

‘লোভে পাপ, পাপে মৃত্যু’ বলে যে প্রবাদবাক্যটি চালু আছে, তা হয়তো অনেকেই ভুলতে বসেছেন। যার ফলে আপনজনকেও খুন করতে বুক কাঁপে না তাঁদের। তাঁরা ভুলে যাচ্ছেন পারিবারিক সম্পর্কের সুন্দর বন্ধনের কথা, আলগা করে দিচ্ছেন সেই মজবুত বাঁধন।

প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম আদর্শ-মূল্যবোধের প্রবাদবাক্যগুলো মুখস্থ করে যাচ্ছে। কিন্তু তার ফল কোথায়? বাস্তব জীবনে তার কোনো দেখা মিলছে কি? স্বার্থের কারণে দিনে দিনে পারিবারিক বন্ধনগুলো আলগা হয়ে যাচ্ছে এবং তা এতটাই আলগা হচ্ছে যে আপনজনকে খুন করতেও পিছপা হচ্ছেন না মাসুদরা। খুনের রহস্য ভেদ করেছে পুলিশ, এখন অভিযুক্তকে কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে পারলে অন্তত এই জঘন্য ঘটনার ‘নায়ক’-এর শাস্তিটা নিশ্চিত হয়।

নিরাপত্তাহীনতা

আজ বিজয়ের দিন

রিক্রুটিং এজেন্সির প্রতারণা

গুলিবিদ্ধ হাদি ও নির্বাচন

নির্বাচনের পথে দেশ

কেন থমকে যাচ্ছে মেট্রোরেল

স্পর্ধা

মোহাম্মদপুরে জোড়া খুন

সরকারি হাসপাতাল বলে কথা

তরুণদের ভোট