হোম > মতামত > সম্পাদকীয়

ঘুষ

সম্পাদকীয়

আজকের পত্রিকায় অনলাইন ভার্সনে ঘুষবিষয়ক একটি সংবাদ চোখে পড়ল। রাজনৈতিক অস্থিরতা ও নানা টানাপোড়েনের মধ্যে সংবাদটিকে নিরীহ গোছের সংবাদ হিসেবে এড়িয়ে যাওয়া যেত। কিন্তু যিনি ঘুষ গ্রহণ করেছেন তিনি অকপটে তা স্বীকার করেছেন। বলেছেন, ঘুষ হিসেবে তিনি পাকা কলা গ্রহণ করেছেন। যিনি কলা দিয়েছেন ঘুষ হিসেবে, তিনি অবশ্য বলেছেন কলার সঙ্গে ১০ হাজার টাকাও দিতে হয়েছে ঘুষ গ্রহণকারীকে। ফলে জমে গেছে খেলা। স্বীকারোক্তির কারণে বদলি হয়েছেন যশোর জেলা পরিষদের সেই উচ্চমান সহকারী। ২৬ অক্টোবর রোববার যশোরে গণশুনানি চলাকালে দুদক কমিশনার মিয়া মোহাম্মদ আলী আকবর আজিজী এই আদেশ দেন।

ঘুষ নিয়ে নানা ধরনের গল্প প্রচলিত আছে। ব্রিটিশ আমলে ব্রিটিশ অফিসারদের ঘুষ বিষয়টি বোঝানোর জন্য কেউ কেউ চেষ্টা করেছেন। একবার হাতেনাতে ঘুষ খাওয়া ধরা পড়েছিল। ব্রিটিশ অফিসার দেখলেন, অভিযুক্ত কর্মচারীকে কলা দেওয়া হচ্ছে। কলাকে যখন ঘুষ বলা হলো, তখন তিনি খুশি হয়ে বললেন, ঘুষ খাওয়া শরীরের জন্য ভালো। সে কারণেই কিনা জানি না, শরীরের জন্য স্বাস্থ্যকর ঘুষ এখনো সরকারি বিভিন্ন মহলে দেদার খাওয়া হচ্ছে।

ঘুষ, দুর্নীতি আর লুটপাট মূলত হয় অসৎ আমলা, ব্যবসায়ী আর রাজনৈতিক নেতার অসৎ মেলামেশা থেকে। দুর্নীতি, ঘুষ ও লুটপাট বনেদি অপরাধ। প্রশাসনের বিভিন্ন জায়গায় এরা অভিজাতন্ত্র মেনে চলে। খুবই সহজ একটি কাজকে জটিল বানিয়ে ঘুষ খাওয়ার রেওয়াজ বন্ধ করা কঠিন। যাঁরা ঘুষের খবর প্রকাশ করবেন কিংবা যাঁরা ঘুষখোরকে শায়েস্তা করবেন, তাঁরাও অনেক সময় কী কারণে নিশ্চুপ হয়ে যান, তা বুঝতে রকেট সায়েন্টিস্ট হতে হয় না। মুশকিল হলো, আমাদের যে নৈতিক বিপর্যয় ঘটেছে, সেটা নিয়ে খুব বেশি মাথাব্যথা নেই।

একজন ঘুষখোর দুর্নীতিবাজ তাঁর দামি গাড়িটা নিয়ে চষে বেড়াচ্ছেন দেশ, সবাই তাঁকে সমীহ করে চলেছে, এ রকম ঘটনা কি দুর্লক্ষ্য? যাঁর বেতন ৫০ হাজার টাকা, তিনি সে মাসের বেতন দিয়ে স্ত্রীকে দুই ভরি স্বর্ণালংকার কিনে দিচ্ছেন, সন্তানের হাতে তুলে দিচ্ছেন গাড়ির চাবি, এ রকম ঘটনা ঘটলে অবাক হওয়ার কিছু নেই। কারণ, টাকাটা কোত্থেকে এল সে প্রশ্ন কেউ আর তুলতে চায় না। এই মহাবিপদ থেকে উদ্ধার পাওয়া যেত যদি পারিবারিক শিক্ষায়, বিদ্যায়তনের পরিবেশে এবং সামাজিক শৃঙ্খলায় গড়ে তোলা যেত নতুন প্রজন্মকে। একটি শিশু জন্মের পরই যখন চারপাশে অনৈতিকতার চাষবাস দেখে, তখন তার কাছ থেকে সাচ্চা আদর্শবান একজন মানুষকে পাওয়ার ভাবনা শুধু বোকারাই করতে পারেন।

কলা হোক আর টাকা হোক, ঘুষ বিষয়টা যে অন্যায়, তা যদি অন্তর থেকে না বোঝা হয়, শুধু কথা বলার রাজনীতি দিয়ে তাকে আঘাত করা হয়, তাহলে ঘুষ, দুর্নীতি দূর হওয়ার কোনো কারণ থাকে না। যশোরের ওই উচ্চমান সহকারীর মতো হয়তো বদলির ঘটনা ঘটবে, কিন্তু ঘুষকে বদলি করার পর ঘুষহীন সমাজ তাতে গড়ে উঠবে না।

সংযোগ সড়কহীন সেতু

যা করণীয়

নিরাপত্তাহীনতা

আজ বিজয়ের দিন

রিক্রুটিং এজেন্সির প্রতারণা

গুলিবিদ্ধ হাদি ও নির্বাচন

নির্বাচনের পথে দেশ

কেন থমকে যাচ্ছে মেট্রোরেল

স্পর্ধা

মোহাম্মদপুরে জোড়া খুন