হোম > মতামত

ইয়ারফোন কানে তরুণ ও ট্র্যাজিক মৃত্যু

প্রযুক্তি ব্যবহারের ভালো দিক যেমন রয়েছে, তেমনি রয়েছে মন্দ দিকও। সে রকম একটি মন্দ দিকের কথাই বলব আজ। বলব ১৭ বছর বয়সী রবিউল হোসেনের কথা। মোবাইল ফোন তো এখন হাতে হাতে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি কিংবা মুদ্রাস্ফীতি অর্থনীতির জন্য ভয়াবহ সংকেত দিলেও মোবাইল ফোন বিক্রিতে এর প্রভাব কতটা পড়েছে, তা নিয়ে বোধ হয় কোনো গবেষণা হয়নি।

তবে এ কথা ঠিক, বিভিন্ন কোম্পানির স্মার্টফোন এখন সুলভে পাওয়া যায়। অতিদরকারি যোগাযোগমাধ্যমটি এখন অনেকাংশে ব্যবহার করা হয় মনোরঞ্জনের জন্য। মাল্টিমিডিয়ার মহা আনন্দ উপভোগ করার জন্য হাতের তালুতে চলে এসেছে স্মার্টফোন।

বাইরের আওয়াজ যেন বিনোদন আহরণে ব্যাঘাত সৃষ্টি করতে না পারে, সে জন্য ইয়ারফোন ব্যবহার করা হয় জেনে-বুঝেই। কানের মধ্যে এই পুঁটলিটা গুঁজে দিতে পারলেই সারা পৃথিবী থেকে বিযুক্ত হয়ে শুধু নিজের মধ্যে থাকার যে আনন্দ, সেই আনন্দ উপভোগ করার সুযোগ পেলে কে আর ছাড়তে চায়? আর তাতেই ঘটছে অঘটন। চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে মাত্র ১৭ বছর বয়সী রবিউলের প্রাণ গেছে ট্রেনের নিচে কাটা পড়ে।

ইয়ারফোন ছিল কানে, তাই ট্রেন আসছে—সেটা বুঝতেই পারেনি এই অমল কিশোর। ট্রেনের হুইসিল কানে ঢোকেনি তার। ফলে মুহূর্তের মধ্যেই পরিবারের জন্য বড় এক ট্র্যাজেডির জন্ম দিল সে। রবিউল আর ফিরবে না, এটা যেমন ঠিক, তেমনি তার পরিবারের সদস্যদের জন্য যে ট্রমার সৃষ্টি হলো, তা থেকে তারা সহজে বেরিয়ে আসতে পারবেন, এ রকম ভাবাটাও অযৌক্তিক।

এ যুগে যন্ত্রের সংস্পর্শে এসে যান্ত্রিক হয়ে যাওয়াটাই সবচেয়ে বড় দুঃসংবাদ। যন্ত্র যখন জীবনের কাছ থেকে কাউকে সরিয়ে নেয় এবং একটা ভার্চুয়াল জগৎ তৈরি করে বাস্তব জগৎকে অগ্রাহ্য করতে শেখায়, তখন মানবতা, ভালোবাসা, পারস্পরিক সম্মানবোধ ইত্যাদিতে চিড় ধরে। এই কথাটা যন্ত্র হাতে মানুষেরা বুঝতে পারে না। এটা একটা ছোট উদাহরণ মাত্র।

প্রযুক্তি হাতের কাছে এসেছে বলেই মানুষকে বাস্তব জগতের বাইরে চলে যেতে হবে, আশপাশের কিছুই তাকে আর স্পর্শ করবে না, এ কেমন কথা? যন্ত্র চলবে মানুষের কথায় নাকি মানুষ চলবে যন্ত্রের কথায়—এ প্রশ্নটিকেও জটিল করে তুলেছে চ্যাট জিটিপি ধরনের ঘটনাগুলো। মানুষের মস্তিষ্ক কাজ হারাচ্ছে। মস্তিষ্ক বেকার হয়ে গেলেই এ ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে থাকে।

প্রযুক্তির ইতিবাচক ব্যবহারের শেষ নেই। জীবনকে অনেক সহজ করে দিয়েছে তা। কিন্তু এ কারণে যে বাড়তি অবকাশটুকু এসেছে, তাকে কীভাবে কাজে লাগাতে হবে, তা নিয়েই একটা জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে পৃথিবীর সর্বত্র। বিলাস আর বিনোদনের সাগরে অবগাহনের পথ প্রশস্ত হয়েছে। জীবনের সঙ্গে যোগাযোগ কমে যাচ্ছে। পারস্পরিক সম্পর্ক গাঢ়তা হারাচ্ছে। এই সবকিছুকেই নিয়মের মধ্যে এনে ইতিবাচক জীবনযাপন করা কঠিন নয়। কিন্তু সে পথ কজনই-বা খোঁজে? রবিউল হওয়া বেদনারই জন্ম দেয় কেবল।

সংযোগ সড়কহীন সেতু

এবার নির্বাচনের দিকে চোখ থাকবে সবার

আন্তর্জাতিক মূল্যহ্রাস ভোক্তার কাছে পৌঁছায় না কেন

যা করণীয়

ভারতজুড়েই কি ফুটবে পদ্মফুল

ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ

সমুদ্রস্তরের উত্থান ও দ্বীপরাষ্ট্রের নিরাপত্তা

সংকটেও ভালো থাকুক বাংলাদেশ

মন্ত্রীদের বেতন-ভাতা নিয়ে কথা

পাঠকের লেখা: বিজয় অর্জনের গৌরব