ঢাকা: রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের বিষয়ে জাতিসংঘ একটি স্পষ্ট রোডম্যাপ তৈরি করুক, এমন চাওয়া বাংলাদেশের। জাতিসংঘ মহাসচিবের মিয়ানমার-বিষয়ক বিশেষ দূত ক্রিস্টিন এস বার্গনারের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে রোহিঙ্গাদের বিষয়ে বাংলাদেশের অবস্থান জানিয়ে দিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।
নিউইয়র্কে জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশনের বঙ্গবন্ধু লাউঞ্জে গতকাল বুধবার এ বৈঠক হয়। মিশনের ফেসবুক পেজে দেওয়া বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, বাংলাদেশ মানবিক বিবেচনায় রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে। মিয়ানমারের আন্তরিকতার ঘাটতিতে তাঁদের নিরাপদ ও টেকসই প্রত্যাবাসন গত চার বছরে সম্ভব হয়নি।
বার্গনারের সঙ্গে বৈঠকে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের চার বছর বাংলাদেশে অবস্থানের নেতিবাচক দিক, বিশেষ করে কক্সবাজারের স্থানীয় বাসিন্দাদের ওপর বিরূপ প্রভাবের কথা তুলে ধরেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, খুব দ্রুত যদি প্রত্যাবাসন শুরু না হয়, তাহলে এটি কেবল এই এলাকারই সামগ্রিক পরিস্থিতির অবনতি ঘটাবে না, বরং তা এই অঞ্চল ও এর বাইরেও অস্থিরতা তৈরি করবে।
এ সময় জাতিসংঘ মহাসচিবের মিয়ানমার-বিষয়ক বিশেষ দূতকে ভাসানচর প্রকল্পের কথা অবহিত করেন আব্দুল মোমেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সেখানে রোহিঙ্গাদের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে নিয়োজিত হওয়ার সুযোগ রয়েছে। জাতিসংঘকে ভাসানচরে মানবিক সহায়তা দেওয়ার প্রয়োজনীয়তার বিষয়টিও গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। ভাসানচর পরিদর্শন করতে বিশেষ দূত তাঁর আগ্রহের কথা জানালে করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হলে তাঁকে যাওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানান।
জাতিসংঘে বাংলাদেশ মিশনের বিবৃতিতে আরও বলা হয়, মিয়ানমার যাতে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের উপযোগী অনুকূল পরিবেশ তৈরি করে, অচিরেই যাতে প্রত্যাবাসনের প্রক্রিয়া শুরু হয়, সে জন্য জাতিসংঘের সদস্যরাষ্ট্রসহ মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ-বাহ্যিক সব অংশীজনের সঙ্গে বিশেষ দূত বার্গনার যোগাযোগ-আলোচনা অব্যাহত রেখেছেন বলে পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে জানানো হয়। পরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাতিসংঘের পিস অপারেশন বিভাগের প্রধান আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল জ্যঁ পিয়েরে ল্যাক্রুয়ার সঙ্গে ভার্চ্যুয়াল বৈঠকে মিলিত হন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাবাব ফাতিমা উভয় বৈঠকে অংশ নেন।