ভারত মহাসাগরকে শান্তিপূর্ণ, নিরাপদ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক অঞ্চল হিসেবে গড়ে তুলতে কনক্লেভের যে মূল্যবোধ—সার্বভৌমত্ব, সমতা, ভৌগোলিক অখণ্ডতা ও অন্যের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার নীতি—সেটি পুনর্ব্যক্ত করেছে বাংলাদেশ। আজ বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) দিল্লিতে অনুষ্ঠিত কলম্বো সিকিউরিটি কনক্লেভের (সিএসসি) জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের সপ্তম বৈঠকে এই বার্তা দেন বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা (এনএসএ) ড. খলিলুর রহমান। ভারতে বাংলাদেশের হাইকমিশনার রিয়াজ হামিদুল্লাহ সামাজিক মাধ্যমে তাঁর লিখিত বক্তব্য তুলে ধরেছেন।
#Bangladesh National Security Adviser joins Seventh Meeting of NSAs of COLOMBO SECURITY CONCLAVE in #India, as convened by 🇮🇳 NSA, Mr Ajit Doval.@bdmofa pic.twitter.com/FfR14jOYPW
— Bangladesh High Commission, New Delhi (@bdhc_delhi) November 20, 2025
উদ্বোধনী পর্বের স্বাগত বক্তব্যে খলিলুর রহমান বলেন, ভারত মহাসাগর অঞ্চলের শান্তি, স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধি বাংলাদেশের জাতীয় স্বার্থের সঙ্গে নিবিড়ভাবে জড়িত। সাগরকেন্দ্রিক বাণিজ্য, জলবায়ু পরিবর্তন, সাইবার নিরাপত্তা, সামুদ্রিক অপরাধ, প্রযুক্তিগত ঝুঁকি এবং ব্লু ইকোনমির সম্ভাবনা— সব মিলিয়ে এই অঞ্চলে যৌথ উদ্যোগ ছাড়া স্থায়ী নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়।
#Bangladesh National Security Adviser joins Seventh Meeting of NSAs of COLOMBO SECURITY CONCLAVE in #India, as convened by 🇮🇳 NSA, Mr Ajit Doval.@bdmofa pic.twitter.com/FfR14jOYPW
— Bangladesh High Commission, New Delhi (@bdhc_delhi) November 20, 2025
ড. খলিলুর রহমান বলেন, ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোর সহযোগিতা বাড়াতে সিএসসি একটি কার্যকর নিরাপত্তা প্ল্যাটফর্মে পরিণত হয়েছে। মালয়েশিয়ার নতুন প্রতিনিধির যোগদানকে তিনি ‘কনক্লেভ পরিবারের বিস্তারের ইতিবাচক লক্ষণ’ হিসেবে উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ ইতোমধ্যে সিএসসির বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে অংশ নিচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও অংশ নেবে। কনক্লেভের সনদে যে মূল্যবোধগুলো স্থান পেয়েছে—সার্বভৌমত্ব, সমতা, ভৌগোলিক অখণ্ডতা ও হস্তক্ষেপ না করার নীতি— এসবই আমাদের অবস্থানের ভিত্তি।’
বাংলাদেশ সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে বরাবরই ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি অনুসরণ করছে উল্লেখ করে নিরাপত্তা উপদেষ্টা বলেন, সাইবার দুনিয়ার নতুন হুমকি এখন আঞ্চলিক দেশগুলোকে সমানভাবে বিপর্যস্ত করছে।
তিনি বলেন, ‘ভুয়া তথ্য, বিভ্রান্তিকর প্রচারণা ও সাইবার অপরাধ এখন সীমান্ত মানে না। তাই জাতীয় উদ্যোগের পাশাপাশি যৌথ পদক্ষেপ অপরিহার্য।’ সাইবার নিরাপত্তা ও তথ্য-ভিত্তিক হুমকির বিষয়ে সিএসসি আরো সুসমন্বিত কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
খলিলুর রহমান বলেন, ‘পারস্পরিক আস্থা, সম্মান ও স্বার্থের ভিত্তিতেই আঞ্চলিক নিরাপত্তা জোরদার করা সম্ভব। বাংলাদেশ সেই যৌথ যাত্রায় অংশীদার হতে প্রস্তুত।’
তিনি সতর্ক করে বলেন, ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা বিঘ্নিত করতে চায়— এমন কোনো বহিরাগত বা অভ্যন্তরীণ শক্তিকে সুযোগ দেওয়া যাবে না।
সমাপনী বক্তব্যে তিনি বলেন, সিএসসি যেন ভবিষ্যতে ‘উন্মুক্ত ও অন্তর্ভুক্তিমূলক আঞ্চলিক বহুপাক্ষিক সংগঠনে’ পরিণত হয়, বাংলাদেশ সে প্রত্যাশা রাখে।
তিনি বলেন, ‘আমরা চাই এই কনক্লেভ মুক্ত আঞ্চলিকতার নীতিতে পরিচালিত হোক।’
এর বক্তৃতার শুরুতে দিল্লির লালকেল্লায় সাম্প্রতিক বিস্ফোরণে হতাহত ব্যক্তিদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান বাংলাদেশের নিরাপত্তা উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘এ নৃশংস ঘটনার নিন্দা জানাই। ভারতের এই দুঃসময়ে বাংলাদেশ তাদের পাশে রয়েছে।’
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ইতোমধ্যে ভারতের কাছে সংহতি ও সমর্থনের বার্তা পৌঁছে দিয়েছে।