প্রথমবারের মতো নিজস্ব জনবল ও ব্যবস্থাপনায় ড্রিমলাইনার উড়োজাহাজের সি-চেক সম্পন্ন করেছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস। এতে ৬ লাখ ডলার সাশ্রয় হয়েছে বলে জানিয়েছেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী।
তিনি বলেন, বিমানের দক্ষ প্রকৌশলী ও টেকনিশিয়ানদের মাধ্যমে এই প্রথমবারের মতো সম্পূর্ণ নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় বিশ্বের সর্বাধুনিক প্রযুক্তির বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার উড়োজাহাজের সি-চেক দেশেই সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। এ বছর আরও একটি এবং আগামী বছরে আরও চারটি ড্রিমলাইনারের সি-চেক দেশেই করার কথা রয়েছে। এতে বিমানের আরও ৩ থেকে ৪ মিলিয়ন ডলার সাশ্রয় হবে।
আজ রোববার বিমানের প্রধান কার্যালয় বলাকায় ড্রিমলাইনারের সফল সি-চেক সমাপনী এবং মহামারি শুরুর দিকে চীনের উহান শহরে আটকে পড়া বাংলাদেশিদের উদ্ধারে ফ্লাইট পরিচালনাকারী বিমান ক্রুদের সম্মাননা প্রদান উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বিশ্বের খুব কম এয়ারলাইনসেরই ড্রিমলাইনারের মতো আধুনিক উড়োজাহাজ সি-চেক করার সক্ষমতা রয়েছে। এর আগে বিমানের যেকোনো ধরনের নতুন উড়োজাহাজের সি-চেক জার্মানি, ইতালি অথবা সিঙ্গাপুরে বিদেশি এমআরও (মেইনটেন্যান্স, রিপেয়ার অ্যান্ড ওভারহল অর্গানাইজেশন)-এর মাধ্যমে সম্পন্ন হতো। নিজস্ব জনবল ও ব্যবস্থাপনায় ড্রিমলাইনারের সি-চেক সম্পন্ন করা বিমানের সক্ষমতা বৃদ্ধির উজ্জ্বল উদাহরণ। প্রধানমন্ত্রী বিমানকে ঢেলে সাজানোর প্রক্রিয়া শুরু করার ফলেই এই সফলতা অর্জন করা সম্ভব হয়েছে।
ভবিষ্যতে বিমানের বহরে থাকা উড়োজাহাজগুলো রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্রয়োজনীয় সব ধরনের চেকআপ দেশেই সম্পন্ন করার জন্য দক্ষ জনবল ও প্রকৌশল অবকাঠামো তৈরিতে বিমানকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হবে বলেও উল্লেখ করেন বিমান প্রতিমন্ত্রী।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. আবু সালে মোস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিমান পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান সাজ্জাদুল হাসান এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোকাম্মেল হোসেন।
উল্লেখ্য, সি-চেক একটি দীর্ঘমেয়াদি, জটিল ও উচ্চ কারিগরি দক্ষতাসম্পন্ন চেক, যাতে উড়োজাহাজের বিভিন্ন অবকাঠামো উন্মোচনের মাধ্যমে বিশদভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। এরপর উড়োজাহাজকে উড্ডয়নযোগ্য করা হয়। বোয়িং-৭৮৭ মডেলের ড্রিমলাইনারের সি-চেক প্রতি তিন বছর পরপর সম্পন্ন করতে হয়। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৭ আগস্ট থেকে বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার ‘আকাশবীণা’-এর প্রথম সি-চেক শুরু করে ১০ কর্মদিবসে এর সফল পরিসমাপ্তি করে বিমান।