অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মেসার্স সিনথিয়া ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের মালিক ও কাস্টমস ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরোয়ার্ডিং এজেন্ট মোহাম্মদ শাহজাহানের নামে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তাঁর বিরুদ্ধে ২ কোটি ৮৩ হাজার ৭৩৪ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) দুদকের উপপরিচালক মো. সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে সংস্থাটির সমন্বিত জেলা কার্যালয়, ঢাকা-১-এ মামলাটি দায়ের করেন। দুদক মহাপরিচালক আক্তার হোসেন গণমাধ্যমকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন। আসামির বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর ২৭(১) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে মোহাম্মদ শাহজাহানের সম্পদ বিবরণী তলব করে দুদক। তাঁর দাখিল করা বিবরণীতে দায়দেনা বাদ দিয়ে মোট ১৭ কোটি ৩১ লাখ ৬৯ হাজার ৪৬৪ টাকার সম্পদ পাওয়া যায়। তবে যাচাই-বাছাইয়ে তাঁর গ্রহণযোগ্য আয়ের উৎস পাওয়া যায় ১৫ কোটি ৩০ লাখ ৮৫ হাজার ৭০০ টাকা।
দুদকের তদন্তে দেখা যায়, ঘোষিত আয় ও প্রকৃত সম্পদের মধ্যে ২ কোটি ৮৩ হাজার ৭৩৪ টাকার অসংগতি রয়েছে। কমিশনের দাবি, এই অর্থ জ্ঞাত আয়বহির্ভূতভাবে অবৈধভাবে অর্জন করেছেন আসামি শাহজাহান।
এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়, প্রাথমিক অনুসন্ধানে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট মোহাম্মদ শাহজাহান জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন বলে তথ্য-প্রমাণ মেলায় তাঁর সম্পদ বিবরণী দাখিলের নির্দেশ দেয় দুদক। দাখিলকৃত বিবরণীতে তিনি ১২ কোটি ৭৪ লাখ ৩৬ হাজার ৭৬৫ টাকার স্থাবর সম্পদ এবং ৪ কোটি ৪৪ লাখ ৩৮ হাজার ৯৫৪ টাকার অস্থাবর সম্পদসহ মোট ১৭ কোটি ১৮ লাখ ৭৫ হাজার ৭১৯ টাকার সম্পদের তথ্য প্রদর্শন করেন।
তদন্তে শাহজাহানের নামে ৫ কোটি ১৫ লাখ ৭২ হাজার ৪৭ টাকার দায়দেনার তথ্য পাওয়া যায়। ফলে দায়দেনা বাদে তাঁর নিট সম্পদ দাঁড়ায় ১২ কোটি ৩ লাখ ৩ হাজার ৬৭২ টাকা। অপর দিকে আয়কর নথি অনুযায়ী ২০১৫-১৬ করবর্ষ থেকে ২০২২-২৩ করবর্ষ পর্যন্ত তাঁর পারিবারিক ব্যয় ছিল ৫ কোটি ২৮ লাখ ৬৫ হাজার ৭৯২ টাকা। এ হিসাবে পারিবারিক ব্যয়সহ তাঁর মোট সম্পদের পরিমাণ দাঁড়ায় ১৭ কোটি ৩১ লাখ ৬৯ হাজার ৪৬৪ টাকা।
এজাহার অনুযায়ী, ওই মোট সম্পদের বিপরীতে গ্রহণযোগ্য আয়ের উৎস পাওয়া যায় ১৫ কোটি ৩০ লাখ ৮৫ হাজার ৭৩০ টাকা। অর্থাৎ তাঁর ঘোষিত আয় অপেক্ষা ২ কোটি ৮৩ হাজার ৭৩৪ টাকা অতিরিক্ত সম্পদ পাওয়া যায়, যা জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ। এতে প্রমাণিত হয় যে আসামি মোহাম্মদ শাহজাহান অবৈধভাবে সম্পদ অর্জন করে নিজ দখলে রেখেছেন এবং দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর ২৭(১) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।